Daffodil International University
Health Tips => Protect your Health/ your Doctor => Topic started by: Sahadat Hossain on February 15, 2017, 02:46:09 PM
-
এক রাতের অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে আপনাকে সারাদিনে অনেক এলোমেলো বা বিপর্যস্ত লাগে। তাহলে নিয়মিত ঘুম কম হলে আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা কেমন হবে? সেল ফোনের আসক্তির কারণে বা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেক বেশি সময় ব্যয় করলে বা বন্ধু/কলিগদের সাথে লেট নাইট আড্ডা দিতে দিতে গিয়ে আজকাল অনেকেরই রাতের ঘুমের পরিমাণ কম হয়। রাতের বেলায় দেরীতে ঘুমাতে যাওয়ার কারণে ঘুম কম হয়, ফলে স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে যা আমরা অনেকেই জানি। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে গেলে শরীরে যে পরিবর্তনগুলো আসে সে বিষয়েই জানবো আজকের ফিচারে। ১। দুশ্চিন্তা কমে এক গবেষণায় জানা যায় যে, যারা তাড়াতাড়ি ঘুমান তাদের তুলনায় যারা দেরীতে ঘুমাতে যান তারা নেতিবাচক চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে বেশি। গবেষণায় পরামর্শ দেয়া হয়েছে যে, ঘুমের ঘাটতির সাথে হতাশাপূর্ণ চিন্তার সম্পর্ক বিদ্যমান। ভালো ঘুমের অভ্যাস এই সমস্যার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে বলে জানিয়েছেন মনোবিজ্ঞানীরা। ভালোভাবে ঘুম হলেই যে আপনি সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাবেন এমন নয়। কিন্তু ভালো ঘুম আপনাকে পরিস্থিতি সামাল দিতে সাহায্য করবে। আপনি আপনার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন এবং সমস্যার সমাধান বের করতে পারবেন। ২। ভালো ব্যবহার কম ঘুমের ফলে ব্যক্তির মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, অস্বস্তি অনুভব করেন এবং মানসিক চাপে ভোগেন। ভালোভাবে বিশ্রাম নিলে আপনি অনেকবেশি ইতিবাচক, ধৈর্যশীল এবং রিলেক্স অনুভব করবেন, ফলে সবার সাথে ভালো ব্যবহার করাটা সহজ হয়। ৩। সতর্কতা বৃদ্ধি পায় কম ঘুমের ফলে মানুষ অসতর্ক হয় এবং এর ফলে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে যেমন – গাড়ি দুর্ঘটনার মত ঘটনা ঘটতে পারে। আমেরিকার AAA Foundation এর রিপোর্ট অনুযায়ী, যারা ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমান তাদের গাড়ী দুর্ঘটনার হার যারা ৮ ঘন্টা ঘুমান তাদের তুলনায় দ্বিগুণ। যারা ৫ ঘন্টা বা তার চেয়ে কম ঘুমান তাদের গাড়ী দুর্ঘটনার হার ৫ গুণ বেশি। ৪। কাজের উৎপাদনশীলতা ঘুমের ব্যাঘাত হলে মস্তিষ্কের মূল কাজ যেমন- মনোযোগ ও স্মরণশক্তির অভাব হয়। তাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া এবং ৮ ঘন্টার পরিপূর্ণ ঘুমের ফলে মস্তিষ্ক তার কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারে। মানুষের ঘুমের ৫ টি ধাপের মধ্যে র্যাপিড আই মুভমেন্ট (REM sleep) রাতের বেলা ঘুমের সময় হয়। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, REM sleep থেকে জাগার পর কোন ধাঁধার সমাধান ৩০ শতাংশ ভালো হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, জটিল সমস্যা সমাধান হয় ভালো ঘুম হওয়ার পরে। ৫। স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা সহজ হয় গবেষণায় দেখা গেছে যে, কম ঘুম হলে ওজন বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত কম ঘুম হলে ব্যায়ামের জন্য শক্তি থাকেনা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য নির্বাচন করাও হয় না। এছাড়াও গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, বেশিক্ষণ জেগে থাকলে বেশি খাওয়া হয় : আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি লবণাক্ত, তৈলাক্ত এবং চিনিযুক্ত খাবার পছন্দ রাত ৮ টার পরে। যারা রাত ১০ টার মধ্যে ঘুমাতে যান তাদের তুলনায় যারা রাত জেগে থাকেন তারা ৫৫০ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করে থাকেন। ৬। ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয় ঠান্ডা বা ফ্লুকে এড়িয়ে যাওয়ার একটি প্রধান উপায় হচ্ছে হাত ধোয়া এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো। পরিপূর্ণ ঘুমের ফলে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়। তাছাড়া অসুস্থ হলেও দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। ৭। ভালো দেখাবে সাম্প্রতিক একটি সুইডিশ গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে যে, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব একজন মানুষের চেহারায় প্রভাব ফেলে। কম ঘুমের মানুষদের এবং ভালোভাবে বিশ্রাম নেয়া মানুষদের কিছু ছবি দেখানো হয় অংশগ্রহণকারীদের। কম ঘুমের মানুষদের কম আকর্ষণীয়, কম স্বাস্থ্যবান এবং বিষণ্ণ দেখায়। ঘুমের সময় আপনার শরীর ক্লান্ত ও পুরাতন কোষকে প্রতিস্থাপিত করে নতুন সতেজ কোষ দ্বারা। এর ফলে চেহারার দীপ্তি বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে ঘুমের অভাবে চোখ লাল হয়ে যায়, চোখের নীচে কালি পড়ে এবং চোখ ফুলে যায়। ৮। রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে হৃদরোগ, কিডনি রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং স্ট্রোক এর মত মারাত্মক অসুখ হওয়ার ঝুঁকি কমাতে চান? তাহলে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও ব্যায়াম করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুমানোর সময় আপনার হৃদপিণ্ড, রক্তনালী, মস্তিষ্ক এবং টিস্যুর মেরামত হয় বলে দীর্ঘমেয়াদী রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে। ক্রমান্বয়ে বড় কোন স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে সেরে উঠতে সাহায্য করে। ৯। দিনে ঘুমানোর প্রয়োজন হয় না রাতের বেলা পর্যাপ্ত ঘুম হলে দিনের বেলায় ঘুমানোর প্রয়োজন হয়না। রাতের পর্যাপ্ত ঘুমের ফলে সকালে উঠতেও সমস্যা হয় না। তাই রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করুন এবং সুস্থ ও সতেজ থাকুন । সূত্র: হাফিংটন পোষ্ট