Daffodil International University
General Category => Common Forum => Topic started by: Mohammad Nazrul Islam on March 01, 2017, 08:26:21 AM
-
যুগ যুগ ধরে ধর্মীয় দ্বন্দ মানব সমাজকে একে অপরের প্রতি, প্রতিহিংসা পরায়ণ ও নৃশংস করে তুলেছে। মায়াবী দুনিয়ার সমাজনীতি, রাজনীতি কিম্বা অর্থনৈতিক প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধর্মীয় ‘উস্কানী’ বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। মানুষ জন্মগত ভাবেই ‘ভাব-সত্যে বিশ্বাসী’। এই সত্য আবিস্কারে মানুষ দিন-কে দিন নানা অভিমত বাখ্যা করে চলেছে যাকে তারা ‘ধর্মীয় বানী’ বলে প্রচার করছে। ফলে এই অভিমত বা ধর্মীয় বানীর অনুকূলে গড়ে উঠছে ভিন্ন ভিন্ন জাতি-গোষ্ঠি; যারা এক অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে নানা প্রকার বিভ্রান্তিমূলক আচার-আচরনে প্রবৃত্ত রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে, যুগ যুগের বিশ্লেষন ধর্মী আরাধনায় পরি-সমাপ্তি ঘটছে। ধর্মীয় সংজ্ঞা বলা হয়েছে ‘আত্মায় সত্যের আসন প্রতিষ্ঠা করাই ধর্ম। মহাকবি মাওলানা রুমী তার কবিতায় ধর্মের বাখ্যা করেছেন এই ভাবে- ‘মানুষের মধ্যে দেবত্ব-পশুত্ব দু‘টুই রয়েছে, যদি পশুত্বকে দূর করতে পার, তবে দেবত্বকেও অতিক্রম করতে পারবে। আবার অনেকে মতে ‘শয়তানের উপর জয়যুক্ত হওয়া-ই মনুষ্যত্বের শ্রেষ্ঠ ধর্ম। অথবা ‘সত্যের উপর যে প্রাণবন্ত ঝংকার, মানুষের আপন আত্মায় অনুভূত হয় তাই -ধর্ম। ‘বিশ্ব-মানব’ ধর্মেরই মূলমন্ত্র।
প্রশ্ন আসতে পারে সত্য কি? আদি-অনন্তে শ্রষ্ঠা নিজেই গুপ্ত বলে পবিত্র কুর-আনে তাকে ‘আলিমুল গায়েব’ বলা হয়েছে। মানুষ সৃষ্টির মাধ্যমে স্রষ্ঠার আত্ম -প্রকাশ ঘটেছে । কাজেই মহান প্রভুর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ-ই সত্য। তাই কবি বলেছেন ‘সবার উপরে মানূষ সত্য তাহার উপরে নাই’।
যদি মানুষকে সত্য জ্ঞান করা হয় তবে মানব জীবনের মূলমন্ত্র ভালবাসা, প্রেম-ভক্তি। বুদ্ধদের মতে ‘জীবে দয়া করে যে জন, সে‘ জন সেবিছে ঈশ্বর’। কাজেই বলা যায় বৃহত্তর ধারনাকে মনের ভিতর পুঞ্জিভূত করে একাগ্র চিত্তে তাকে পাবার বাসনাই ‘প্রাথর্না। এই প্রার্থনার মূলমন্ত্র হল ভালবাসা বা প্রেম-ভক্তি এ কথা সকল ধর্মের সার-সত্য।
সৃষ্টির সার তত্ত্বও প্রেম বা ভালবাসায় আড়ষ্ট্র। সৃষ্টির গুনেই জীবে-ভালবাসা ‘শ্রষ্ঠার আরাধ্য’ হয়েছে। জীবন ’লয়ের ধারায় বয়োঃসন্ধিক্ষনে জীবের ভালবাসার প্রেম-ভক্তির রুপ পরিবর্তিত হয়। শ্রষ্টার প্রতি জীবের আদি ভালবাসা, জন্মের পর চলন্ত ভালবাসা, যৌবনে আসক্তির ভালবাসা, মৃত্যুতে অনন্ত ভালবাসা জীবনকে কাদাঁয়।
এ কথা সত্য যে, শ্রষ্ঠা আর সৃষ্টির দূরত্ব সৃষ্টিকারী ‘আসক্তি নামক ভালবাসা মানুষকে পরমার্থিক মুক্তিতে বাধাঁর সৃষ্ঠি করে। এই বাধাঁ অতিক্রম করাই প্রতিটি মানুষের কতর্ব্য। আবার এ কথা সত্য যে, আসক্তিমূলক ভালবাসা না থাকলে দুনিয়ায় ‘মানব বাগান’ সৃষ্টি হতো না। তাই বলা হয় প্রত্যেকটি ভালবাসার ধাপ পরিক্রমায় আল্লাহর সীমাহী পরীক্ষা।
বিশুদ্ধ চিত্তে ভালবাসা বা প্রেম-ভক্তিতেই মানুষের মুক্তি। যেহেতু প্রত্যেকটি জীবনে-ই শ্রষ্ঠার অস্তিত্ব। তাই জীব শ্রষ্ঠারই অংশ বিশেষ। তাই বলা হয় ‘নৈঃবস্ব্য লীলা চারণ। এই ধরা জীব আত্মা আর পরম আত্মার লীলাভূমি। নিদিষ্ট সময় শেষে জীব আত্মা পরমে বিলিন হয়ে চরম সত্যে পৌছিয়ে যাবে। ফলে একা নিরাঞ্জন শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করবে। জীবন-মৃত্যু-প্রেম-ভালবাসা এই ধরা পরিচালনার তন্ত্রখেলা।
তাই কবি নজরুল বলেছেন ‘যে দিন শ্রষ্ঠার বুকে জেগে ছিল আদি সৃষ্টি কাম সে দিন তুমি আসিলে আমি আসিলাম। নারী শ্রষ্টারই অংশ আর পুরুষ শ্রষ্ঠার রুপ। দুনিয়া সৃষ্টির অযুহাতেই শ্রষ্ঠা নিজেই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পৃথিবী নামে এই লীলাভূমি সৃষ্টি করেছেন প্রেম/ভক্তি ভালবাসার আশায়। কাজেই সৃষ্টি, সত্য, ধর্ম ভাব-ভালবাসা, প্রেম-ভক্তি সকলই দৈব অস্তিত্ব পরম সত্ত্বার সার সংকলন। সত্য সুন্দরের পথে- ভক্তের ভক্তিতেই শ্রষ্ঠার অস্তিত্ব। তাই সর্বকালের শ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব পবিত্র কুর-আনে আল্লাহ নিজেই ঘোষনা করেছেন ‘সিরাতুয়াল-লা-জিনা আন্ আমতা আলইহীম, গায়রুল মাহ্গদু‘বে আলাহীম ওয়া-লা- দুয়াল্লিম।
-
Nice Writing. It was really informative.