Daffodil International University

Faculty of Science and Information Technology => Science and Information => Topic started by: Md. Alamgir Hossan on March 14, 2017, 12:04:16 PM

Title: কোষ
Post by: Md. Alamgir Hossan on March 14, 2017, 12:04:16 PM
আমাদের শরীরে আছে অসংখ্য কোষ। সেগুলো একেক সময় ক্ষয়ে যায়। সেই ক্ষয়প্রাপ্ত অংশ বা বর্জ্যকে আবার ব্যবহারের উপযোগী করে কোষই নিজের সুস্থতা বজায় রাখে। কিন্তু কীভাবে? শরীরের সেই গোপন কলাকৌশল আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জাপানি বিজ্ঞানী ইওশিনোরি ওশুমি।
শরীরের কোষগুলো নিজেই নিজেদের অংশবিশেষ ‘খেয়ে ফেলে’। এই প্রক্রিয়ার নাম অটোফাজি। গ্রিক শব্দ ‘অটো’ মানে নিজে নিজে আর ‘ফাজেইন’ মানে খেয়ে ফেলা। এ দুটো শব্দের সমন্বয়েই অটোফাজি। আর এটা নিয়ন্ত্রণকারী জিনগুলো শনাক্ত করেছেন ওশুমি। তাঁর কাজটাকে নোবেল কর্তৃপক্ষ খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছে। কারণ, ক্যানসার থেকে শুরু করে স্নায়ুতন্ত্রের রোগ পারকিনসনস পর্যন্ত অসুখবিসুখ হলে শরীরে কী ধরনের ত্রুটি দেখা দেয়, সে বিষয়ের ব্যাখ্যা পেতে সাহায্য করেছেন ওশুমি। তাঁর দেখানো জিনগুলোয় সমস্যা দেখা দিলেই এসব রোগ হয়। নোবেল কমিটির ভাষ্য, ওশুমি ক্যানসার, পারকিনসনস এবং টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কে আগের চেয়ে ভালো ধারণা দিতে পেরেছেন।
রোগের সৃষ্টি এবং বিস্তার সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের ধারণাকে এগিয়ে দিয়েছেন ওশুমি। দেখিয়েছেন, কোষগুলো কীভাবে ভেঙে যাওয়ার পরও নিজেদের পুনর্গঠন করে। নোবেল পুরস্কার কমিটি গতকাল সোমবার এবারের বিজয়ী হিসেবে ওশুমির নাম ঘোষণা করে। তিনি ৯ লাখ ৩৩ হাজার মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাবেন।
সুইডেনের ক্যারেলিনস্কা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক চিস্টার হগ বলেন, ওশুমির কাজ মানুষের বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াগুলোর ব্যাখ্যা দিয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে বেড়ে ওঠা থেকে বুড়িয়ে যাওয়া এবং রোগের কাছে হার মানা প্রভৃতি পর্যায়। বয়স হলে শরীরের কিছু অংশের ভাঙন ও পুনর্গঠন করতে হয়। এই প্রক্রিয়াই অটোফাজি। সুস্থতার জন্যই এটা দরকারি। অটোফাজিতে বিঘ্ন ঘটলে কোষের বর্জ্যগুলো পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করা কোষের পক্ষে আর সম্ভব হয় না। তখনই বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়।
ওশুমির জন্ম ১৯৪৫ সালে জাপানের ফুকুওকায়। তিনি ২০০৯ সাল থেকে টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, পুরস্কারটি পেয়ে তিনি ‘অত্যন্ত সম্মানিত’ বোধ করছেন। তিনি বরাবরই এমন কিছু করতে চেয়েছিলেন, যা অন্যরা করবে না। ভেবেছিলেন, কোষের ভাঙন একটা আকর্ষণীয় বিষয়। তাই সেটা নিয়েই কাজ শুরু করেন।
ওশুমি যে কাজের জন্য এবার নোবেল পেয়েছেন, সেটা ১৯৯০-এর দশকের। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অটোফাজি নিয়ন্ত্রণকারী জিনগুলো চিহ্নিত করাটা চিকিৎসাবিদ্যার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এতে ওই জিনগুলোর ত্রুটি চিহ্নিত করে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা বের করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর মেডিকেল রিসার্চের উপপরিচালক ডেভিড রুবিনস্টেইন বলেন, ওশুমি বিশ্বের চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের হাতে ‘গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ’ তুলে দিয়েছেন। এটি ব্যবহার করে বোঝা যাবে কীভাবে বিঘ্নিত অটোফাজি বিভিন্ন সংক্রামক রোগ থেকে শুরু করে ক্যানসার এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন অসুখ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে।
চিকিৎসাবিদ্যা দিয়েই চলতি বছরের প্রথম নোবেল পুরস্কারটি ঘোষণা করল সুইডেনের নোবেল কর্তৃপক্ষ...