Daffodil International University

Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: sisyphus on March 23, 2017, 05:27:45 AM

Title: মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন ক্ষতিকর পর্যায়ের
Post by: sisyphus on March 23, 2017, 05:27:45 AM
বাংলাদেশে মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ার থেকে নিঃসৃত বিকিরণের (রেডিয়েশন) মাত্রা উচ্চ পর্যায়ের এবং তা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে সরকারি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তৈরি করা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই প্রতিবেদন বুধবার বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাই কোর্ট বেঞ্চে জানানো হয়।

প্রায় পাঁচ বছর আগে আদালতের নির্দেশনার পর গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা আগামী ২৮ মার্চের মধ্যে জানাতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

এদিন আদালতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদন তুলে ধরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী জিনাত হক।

পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।

মোবাইল ফোন টাওয়ারের রেডিয়েশন নিঃসরণ নিয়ে ২০১২ সালে হাই কোর্টে রিট আবেদন করে এইচআরপিবি। আদালত রেডিয়েশনের মাত্রা এবং এর স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রভাব খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেয়।

বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কয়েকটি মোবাইল ফোন টাওয়ার পরিদর্শন করে রেডিয়েশন বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।একইসঙ্গে সাতদিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করতে স্বাস্থ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এই কমিটিতে বিজ্ঞানী, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অধ্যাপক,স্বাস্থ্য ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং আণবিক শক্তি কমিশনের প্রতিনিধিসহ সাতজন সদস্য রাখতে বলা হয়। এই কমিটিকে মোবাইল টাওয়ার থেকে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও পরিবেশগত প্রভাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

এসব অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি আদালত রুলও জারি করে। রুলে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত মোবাইল কোম্পানির টাওয়ারগুলো থেকে নিঃসৃত রেডিয়েশন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

আদালতের ওই নির্দেশে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়। ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি পৃথক একটি সাব কমিটি গঠন করে। এ সাব কমিটি ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই প্রতিবেদন দেয় বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে। বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দেয়।

সাব কমিটির এ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞ কমিটি তিনটি সুপারিশ পাঠায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে।

ওই সুপারিশে বলা হয়- (ক) সাব কমিটি বিকিরণ পরিমাপকালে একটি মোবাইল অপারেটর বেস ট্রান্সিভার স্টেশন (বিটিএস)-এ মাত্রাতিরিক্ত বিকিরণ পেয়েছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তাই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৬টি অপারেটর কর্তৃক স্থাপিত বিটিএস সমুহ পরীক্ষাপূর্বক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত নিরাপদ মাত্রার মধ্যে বিকিরণ নামিয়ে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিটিআরসিকে বলা যেতে পারে।

(খ) নিয়মিতভাবে সকল মোবাইল ফোন অপারেটরের বিটিএস-এর বিকিরণ মনিটরিং করার জন্য বিটিআরসিকে বলা যেতে পারে। এবং

(গ) বিটিএস স্থাপন ও এর টাওয়ার থেকে বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নীতিমালা বা গাইডলাইন অতিসত্বর প্রণয়ন করার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসিকে বলা যেতে পারে।

ব্যারিস্টার কাজী জিনাত হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ সুপারিশ পাওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিটিআরসিকে বিকিরণের মাত্রা কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। আর বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদনটি আজ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত এটি হলফনামা আকারে দাখিল করতে বলেছে।”

তথ্যসূত্রঃ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর