Daffodil International University

Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: Md. Rasel Hossen on April 05, 2017, 05:48:42 PM

Title: মালিঙ্গা-পেরেরার কাছে হেরে গেল বাংলাদেশ
Post by: Md. Rasel Hossen on April 05, 2017, 05:48:42 PM
ঢাকে কাঠির একটি বাড়ি পড়লেই নাচানাচি। ভুভুজেলা একটু সুর তুললেই নাচানাচি। আর সারাটা ক্ষণ চিৎকার-চেঁচামেচি। তাঁদের হাতের মোবাইল ফোনগুলো জ্বলল হাজার হাজার জোনাকি হয়ে। কাল শ্রীলঙ্কার দর্শকেরা রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে এসেছিলেন সার বেঁধে, কাতারে কাতারে। বাংলাদেশের ইনিংস শুরু হওয়ার খানিক পর ৪০ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে প্রায় ঠাসা ভিড়। এঁরা শ্রীলঙ্কার জয় দেখেই ফিরে গেছেন উচ্ছ্বাসের ঢেউ ছড়িয়ে।

প্রায় দুঃস্বপ্নে পরিণত হওয়া স্টেডিয়ামে কত যে প্রতীক্ষার এই জয়, কত যে স্বপ্ন রঙিন এই জয়! উল্টোদিকে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি যেন নিয়ে ফেলছে দুঃস্বপ্নের রুক্ষ জমিতে। কাল দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে পরাজয় হলো ৬ উইকেটে। এই নিয়ে টানা আটটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হারল বাংলাদেশ।
টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ ড্রয়ের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে অন্তত জয় নিয়ে ফেরার আশা ছিল। সে আশা এখন কুহকিনী। শেষ টি-টোয়েন্টিতে প্রবলভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারলে বড়জোর এই সিরিজটাও ১-১ করা যাবে। তাহলে আগামীকাল আরেকটি ট্রফির দুই প্রান্তে ধরে দাঁড়াবেন দুই অধিনায়ক। একটু হাসি হাসি মুখ। কিন্তু ট্রফিটা কারও দিকে তাকিয়ে হাসবে না!
শ্রীলঙ্কাকে এই ম্যাচ সহজেই জিতিয়ে দিলেন দুজন। প্রথমে লাসিথ মালিঙ্গা দুটি মাত্র ইয়র্কারে ডানা মেলে উড়তে দিলেন না বাংলাদেশকে। তাতে বাংলাদেশ করতে পারল ৬ উইকেটে ১৫৫ রান। তারপর ব্যাটিংয়ে নেমে কুশল পেরেরা ৫৩ বলে করে গেলেন ৭৭ রান। প্রথম উইকেটেই উপুল থারাঙ্গার সঙ্গে তুলে ফেলেন ৬৫ রান। তাসকিনের বলে এই বাঁহাতি ওপেনার যখন মিডঅফে সৌম্যর হাতে ক্যাচ হলেন, জয় থেকে মাত্র ৯ রান দূরে শ্রীলঙ্কা। সেই কটা রান সেকুগে প্রসন্ন আর থিসারা পেরেরা মিলেই তুলে ফেললেন। বাংলাদেশের হয়ে অধিনায়ক মাশরাফিই সফলতম বোলার। সর্বোচ্চ ২ উইকেট তিনি পেয়েছেন তাঁর শেষের শুরুর টি-টোয়েন্টি ম্যাচটিতে। বাকি দুই উইকেটের একটি নিয়েছেন তাসকিন। চতুর্থটি রানআউটে।
অথচ এই ম্যাচ একটু অনিশ্চয়তা নিয়েই শুরু হয়েছিল। সে ফলের দিক দিয়ে সম্ভবত নয়। বৃষ্টি এসে খেয়ে নেয় কি না সেই ভয়। শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীত তখন মাঝপথে। ঝিরঝির করে শুরু হলো বৃষ্টি। অনাহূত বৃষ্টি, তবে অপ্রত্যাশিত ছিল না। সন্ধ্যার মুখে বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস ছিল। এই বৃষ্টি ম্যাচের শুরুটা পিছিয়ে দেয় ১০ মিনিট। তবে শ্রীলঙ্কার উইকেট পেতে দেরি করায়নি একটুও। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই ভয়ংকর লাসিথ মালিঙ্গার ইনসুইঙ্গিং ইয়র্কারে বোল্ড তামিম ইকবাল। দলের প্রথম রান আসে ওয়াইড বলের বাউন্ডারি থেকে। শেষ বলেই ফিরে যেতে পারতেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার। নিজের বলে সৌম্যর ফিরতি ক্যাচটি নিতে পারেননি মালিঙ্গা।
বাংলাদেশের ব্যাট হাসল মালিঙ্গা ফিরতেই। নুয়ান কুলাসেকারার করা দ্বিতীয় ওভারে মিড উইকেট দিয়ে চার মেরে সৌম্য বুঝিয়ে দিলেন, বাংলাদেশ ঘাবড়ে যায়নি। ওই ওভারে এল ১২ রান। মালিঙ্গার দ্বিতীয় ওভারে এল ১৭, ফ্লিক করে সৌম্য যে ছক্কাটি মারলেন ফাইন লেগের ওপর দিয়ে, সেটির মুগ্ধ দর্শক যেন মালিঙ্গাও। ৫ ওভারেই উঠে গেল ৫৭ রান, রান রেট ১১.৪। এই বাংলাদেশ তো পাল্টা আক্রমণে শ্রীলঙ্কাকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে!
বড় রানের আশা তখন পেখম মেলে নাচছে। কিন্তু দলটি যখন বাংলাদেশ, এই আশা তো পরক্ষণেই হতাশা। ভিকুম সঞ্জয়ের করা ষষ্ঠ ওভারেই ২ উইকেট নেই। প্রথম বলেই অলসভাবে দৌড়ে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে সেকুগে প্রসন্নর সরাসরি থ্রোয়ে রানআউট সাব্বির (১৬)। ভাঙল ৪.৫ ওভারে গড়া সাব্বির-সৌম্যর ৫৭ রানের জুটি। ওভারের পঞ্চম বলে সৌম্য ফিরলেন লং অনে ক্যাচ তুলে দিয়ে। তিন চার ও এক ছয়ে ২০ বলে তাঁর ২৯ রান। সৌম্য টিকে থাকলে কী দারুণ জায়গাতেই না যেত বাংলাদেশের ইনিংস। টিকে থাকা জরুরি ছিল অভিজ্ঞ মুশফিকুর ও সাকিব আল হাসানেরও। তাঁরাও পরিস্থিতির ডাকে সাড়া না দিয়ে আউট। আসেলা গুনারত্নের অফকাটারে প্যাডল সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড মুশফিক। প্রসন্নর লেগব্রেকে পয়েন্টে ক্যাচ হয়ে ফিরলেন সাকিব।
১১.১ ওভারে ৫ উইকেটে ৮২ রানে পরিণত বাংলাদেশকে উদ্ধার করে আরেকটি ৫৭ রানের জুটি। ৭ ওভারে যেটি গড়েছেন ময়মনসিংহের দুই ‘ম’ মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক। নিজের চতুর্থ ওভারে মালিঙ্গাই আরেকটি ইয়র্কারে বোল্ড করেছেন মাহমুদউল্লাহকে। আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে করেছেন ৩১। দলের সর্বোচ্চ ৩৪ রান মোসাদ্দেকের। বিদায়ী টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নামা অধিনায়ক মাশরাফিকে নিয়ে বাংলাদেশকে পৌঁছে দিয়েছেন ১৫৫ রানে। ইনিংস শেষে যে রানকে বড় কিছু মনে হয়নি। মালিঙ্গা-হুমকি সামলে সাব্বির-সৌম্য যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে স্কোরবোর্ডে আরও ২০টি রান জমা হতেই পারত।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৫/৬
শ্রীলঙ্কা: ১৮.৫ ওভারে ১৫৮/৪