Daffodil International University
Career Development Centre (CDC) => Workplace Behavior => Career Guidance => Appreciation, Patience, Tolerance & Ethics => Topic started by: Reza. on April 08, 2017, 10:06:40 PM
-
কর্পোরেট কালচার নিয়ে কিছুদিন ভাবতেছিলাম। আমাদের আগের জেনারেশন অর্থাৎ আমাদের বাবা চাচারা যে চাকুরী দিয়ে জীবন শুরু করতেন - সেই চাকুরীতেই অবসর নিতেন। আমাদের সময় সম্ভবতঃ সরকারী চাকুরীজীবী ছাড়া অন্য কোথাও এইটা ভাবেন না। অবশ্য এখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারী চাকুরীজীবীদেরও এর ব্যতিক্রম করতে দেখা যায়।
একটা বইয়ে জাপানীদের চাকুরী বিষয়ক কিছু তথ্য পড়েছিলাম। সম্প্রতি ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে আরো কিছু লেখা পেলাম। অনেক লেখাতেই জাপানী ও আমেরিকান অফিস কালচার নিয়ে তুলোনা করা হয়েছে।
বেশিরভাগ লেখায় উল্লেখ করা ছিলো জাপানে একজনকে চাকুরীতে বহাল করা হয় অনেক সময় নিয়ে - তাকে অনেক যাচাই বাছাই করে। তারাও সেই কোম্পানী বা অফিসে তাদের জীবন কাটিয়ে দেন। এমনকি অবসর নেওয়ার পরেও তারা অনেক সময়ই বিনা পারিশ্রমিকে তাদের অফিসে কাজ করে দিয়ে যান। তাদের ব্যাপারে বলা হয় যে They live to work. অর্থাৎ তারা বেঁচে থাকে কাজ করার জন্য। কাজই হল তাদের বেঁচে থাকার প্রেরণা। এদের কাছে নিজের স্বার্থের থেকে অফিস বা কোম্পানীর স্বার্থই বড়। মৌলিক ভাবে এরা অন্যের সম্পত্তি অনেক যত্ন ও শ্রদ্ধার সাথে দেখে। এরা অনেক দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য প্ল্যান প্রোগ্রাম করে। শুধু বেশী বিক্রয় মুল্যের খোজ করে না। এরা বায়ার এবং সাপ্লাইয়ারের সাথে অনেক দীর্ঘকালীন সম্পর্ক গঠন করে। তারাই সিক্স সিগ্মা কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট, লিন ম্যানুফ্যাকচারিং, জাস্ট ইন টাইম এর উদ্ভাবক। পৃথিবীর সব প্রথম শ্রেণীর কোম্পানীগুলো এই সব মূলনীতিতে পরিচালিত হচ্ছে।
অপরপক্ষে আমেরিকান কালচার হল হায়ার এন্ড ফায়ার। তারা যত তাড়াতাড়ি একজনকে চাকুরীতে বহাল করে তার থেকে তাড়াতাড়ি তাকে ছাটাইও করে। অফিসে এতো রদবদল হয় যে এর সাথে রিভল্ভিং ডোর এর তুলনা দেওয়া হয়। যে দরজা দিয়ে আসা যাওয়া লেগেই থাকে। এদের ব্যাপারে বলা হয় যে They work to live. এরা দলবদ্ধ ভাবে চিন্তা না করে ব্যক্তি গত লাভ লোকসানকেই বড় ভাবে। তাদের কাজ করার উদ্দেশ্যই হল এক অফিসে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে আরো ভালো চাকুরী নিয়ে অন্য কোম্পানিতে বহাল হওয়া। এরা নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থই সব থেকে আগে হিসেব করে। অফিস বা কোম্পানীর স্বার্থ এদের কাছে দ্বিতীয় প্রায়োরিটি। অন্যের সম্পত্তির প্রতি এদের যত্ন ও শ্রদ্ধা কম দেখা যায়। এরা শুধু বেশী মুনাফার খোজ করে। যার কাছে হিসেবে অধিক মূল্য পায় তার সাথেই বায়ার বা সাপ্লাইয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলে।
আমি ভাবি আমাদের কথা। আমাদের মনে অনেক উচ্চ মানের চিন্তা ও চেতনা থাকে সব সময়। কিন্তু কিভাবে যেন আমাদের দেশের কালচারে কিছু সহজ জিনিস ঢুকে গেছে। আমাদের দেশের অফিস কালচারেও বিশেষতঃ ফ্যাক্টরি গুলোতে এই হায়ার এন্ড ফায়ার এখন অনেক কঠিন একটি বাস্তবতা। কিন্তু এর ফল যে উন্নত কিছু এনে দেয় না - তার চাক্ষুষ প্রমান আমাদের সামনে আছে। সহজ জিনিস কখনো ভালো পরিণাম বয়ে আনে না।
-
:)