Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Sports Zone => Cricket => Topic started by: Md. Alamgir Hossan on April 23, 2017, 02:21:50 PM
-
পাশাপাশি বসে আছেন দুই তরুণ। একজন বাজাচ্ছেন কি-বোর্ড। অন্যজন গিটারে সুর তুলে গাইছেন, ‘বাংলার বাঘ তুমি বাংলার অহংকার/ তোমাতে গর্জন তোমাতেই হুংকার/ ভালোবাসি তোমাকে ভালোবাসি দেশ/ মাশরাফি মুর্তজা তুমি প্রিয় ম্যাশ।’
৮ এপ্রিল থেকে ফেসবুক ও ইউটিউবে ভাইরাল হয়েছিল ‘ফিরে এসো ম্যাশ’ শিরোনামের গানের এই ভিডিও। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে টি-টোয়েন্টি দলে ফেরার আকুতি জানিয়ে গানটি করেন তরুণ ভক্ত মহিবুল আরিফ। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে।
ভক্তের গাওয়া গানের খবর পৌঁছায় মাশরাফির কানেও। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুর মাধ্যমে দেখা করার অনুমতি মেলে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসেন আরিফ। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকার মিরপুরের বাসায় মাশরাফির সঙ্গে দেখা হয় আরিফের।
মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে ভক্ত মহিবুল আরিফ। ছবি: সংগৃহীত
মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে ভক্ত মহিবুল আরিফ। ছবি: সংগৃহীত
আপ্লুত আরিফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কী যে ভালো লাগছে, বলে বোঝাতে পারব না। গানটা করার সময় কল্পনাও করিনি এর মাধ্যমে মাশরাফি ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হবে। ভালোবাসার টান থেকে গান গেয়েছি। গানটি লেখা ও সুর করার জন্য দুই রাত টানা আমার ঘুম হয়নি। গাওয়ার পর শান্তি পেয়েছি।’
দেখা করে মাশরাফিকে আরিফ উপহার দিয়েছেন লুঙ্গি, লাল-সবুজের গামছা ও গেঞ্জি। আরিফ জানালেন, উপহার পেয়ে মাশরাফি দারুণ খুশি।
আরিফ বলেন, ‘আমরা যখন মাশরাফি ভাইয়ের বাসায় যাই, তখন তিনি তাঁর বন্ধুদের নিয়ে আইপিএলের খেলা দেখছিলেন। আমার পরিচয় পাওয়ার পর জড়িয়ে ধরলেন।’ সেখানেই মাশরাফিকে পুরো গানটি শুনিয়েছেন বলে জানান আরিফ। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রিয় গিটারটিও। সবাই গান শুনে হাততালি দিয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানান।
উচ্ছ্বসিত আরিফ বলেন, ‘আমার জীবন সার্থক। প্রিয় ম্যাশের দেখা পেয়েছি।’
মাশরাফি বিন মুর্তজার বাসায় গিটার বাজিয়ে গান গাইছেন মহিবুল আরিফ। ছবি: সংগৃহীত
মাশরাফি বিন মুর্তজার বাসায় গিটার বাজিয়ে গান গাইছেন মহিবুল আরিফ। ছবি: সংগৃহীত
আরিফ জানান, ৬ এপ্রিল মাশরাফি টি-টোয়েন্টি খেলা থেকে অবসর নিচ্ছেন জানার পর থেকেই মনটা তাঁর খচখচ করছিল। সারা দিনে কিছুতেই সুস্থির হতে পারছিলেন না। একসময় মধ্যরাতে উঠে বসে গেলেন খাতা-কলম নিয়ে। ব্যস, লেখা হয়ে গেল গান। তারপর সারা রাত বসে সুর ও কম্পোজ করলেন।
পরদিন বন্ধু সরোয়ার উল আলমকে নিয়ে তাঁর বাসায় গিয়ে গানটি রেকর্ডিং করেন। বন্ধু সরোয়ার বাজালেন কি-বোর্ড। আর ভিডিও করলেন আরেক বন্ধু সাদমান সময়। এরপর ফেসবুকে আপলোড করা হয়। ছড়িয়ে পড়ল ইউটিউবেও।
আরিফ বললেন, ‘এভাবে সাড়া ফেলবে বুঝতে পারিনি। কোনো রকমে গানটি রেকর্ডিং করে ছেড়ে দিয়েছি। পরে অবশ্য ৯ এপ্রিল গানটি স্টুডিওতে রেকর্ডিং করে আবারও ইউটিউবে আপলোড করেছি।’
আরিফ ২০০৭ সাল থেকেই যুক্ত প্রথম আলোর বন্ধুসভার সঙ্গে। ছিলেন মিরসরাই বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সমাজকল্যাণ সম্পাদক। আরিফের গানে হাতেখড়ি উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর থেকে। সদ্য চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন। বন্ধুদের নিয়ে তাঁর একটি ব্যান্ডও রয়েছে। নাম ‘নিউরন’। এই তরুণেরা গানের ফেরি করে বেড়ান সবখানেই।