Daffodil International University
Faculties and Departments => Faculty Sections => Departments => Topic started by: SabrinaRahman on April 24, 2017, 11:18:39 AM
-
একদিনে স্বল্প বাজেটে টাঙ্গুয়ার হাওড় ভ্রমনের পরিকল্পনাঃ
এক দিনে টাঙ্গুয়ার হাওড় ভ্রমন পরিকল্পনাঃ আমার বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা থানায় যেখান থেকে টাঙ্গুয়ার হাওড় সহ একাধিক হাওর-বিল সহজেই ঘুরে আসা যায়। কোরবানির ঈদ এর আগেরদিন গিয়েছিলাম টাঙ্গুয়ার হাওড়। ট্রলারে যেতে যেতে খেয়াল করলাম ভরা বর্ষার মতো পানি এখন আর নেই হাওরগুলোতে তবে যা পানি আছে তাতেই অন্তত আরও ১৫ দিন টাঙ্গুয়ার এর রূপ দেখা যাবে মোটামুটি। (শীতকালে গিয়ে সামান্য পানি দেখায় মজা নেই)
যেভাবে যাবেনঃ
অনেক পোস্ট দেখেছি যেখানে টাঙ্গুয়ার হাওড় যাওয়ার জন্য বাসে করে সিলেট- সুনামগঞ্জ হয়ে তাহিরপুর যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমি বলব বেস্ট হল ঢাকা থেকে ট্রেনে করে মোহনগঞ্জ এ যাবেন (হাওড় এক্সপ্রেস, রাত ১১ঃ৫০) । সেখান থেকে ব্যাটারি রিকসায় যাবেন (আনুমানিক ৪০ মিনিট লাগবে) ধর্মপাশা হয়ে কান্দাপাড়া বাজার এর শেষ প্রান্ত যেখান থেকে ট্রলার ছাড়ে। এখান থেকে ট্রলারে যাওয়ার সুবিধা হল টাঙ্গুয়ার হাওড় এর পাশাপাশি আপনি আরও অনেক ছোটখাটো বিল-হাওড় দেখতে পাবেন। দেখতে পাবেন ভাটি এলাকার মানুষের পানির জীবন।
ভ্রমনে কোথায় কেমন সময় লাগবেঃ
- ইন্টারসিটি ট্রেনে (হাওড় এক্সপ্রেস) করে মোহনগঞ্জ যেতে সময় লাগে ৬ ঘণ্টার মত। সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৬ টার মাঝে আপনি মোহনগঞ্জ পৌঁছে যাবেন। সেখান থেকে ধর্মপাশা হয়ে কান্দাপাড়া বাজার এর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ব্যাটারি রিকসায় যেতে সময় লাগবে আনুমানিক ৪০ মিনিট। সেখান থেকে ট্রলারে করে টাঙ্গুয়ার পর্যন্ত সময় লাগবে আড়াই ঘণ্টা। যদি আপনি প্রকৃতি প্রেমিক হয়ে থাকেন এই আড়াই ঘণ্টা আপনার মোটেও একঘেয়ে লাগবে না :) ঢাকায় ফিরবেন কিভাবেঃ
১। ট্রেনঃ মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ইন্টারসিটি ট্রেন "মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস" ছাড়ে রাত ১১ঃ৩০ এ আর ঢাকায় এসে পৌছায় সকাল ৬ টার দিকে
২। বাসঃ মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে একাধিক বাস ছাড়ে রাত ১১ টায়। বাস ঢাকায় পৌছায় ভোর ৪ টার দিকে খরচঃ
- https://www.esheba.cnsbd.com থেকে আপনি ট্রেন এর ভাড়া সম্পর্কে জানতে পারবেন বা অগ্রিম টিকেট কিনতে পারবেন
- মোহনগঞ্জ থেকে ধর্মপাশা হয়ে কান্দাপাড়া বাজার এর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ব্যাটারি রিকসায় যেতে লাগবে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।
- কান্দাপাড়া থেকে টাঙ্গুয়ার ঘুরে আসতে ট্রলার ভাড়া লাগবে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা। আগে থেকেই ট্রলার ফোনে বুকিং দিয়ে যেতে হয়
- খাওয়ার খরচ তেমন কিছু নয়। মোহনগঞ্জ বা ধর্মপাশায় অনেক খাবার হোটেল আছে। মান মোটামুটি। একজন ট্রলার মালিক কাম চালক এর নাম ও নাম্বারঃ
রিপন - ০১৭৫১৮৫৫১৩৫
উনার ট্রলারে করে গিয়েছিলাম। মাঝারি সাইজ ট্রলার। ২০ বা তার কম সংখ্যক মানুষের জন্য অনেক আরামদায়ক। রিপন ভাইকে অনেক ভাল আর আন্তরিক মানুষ মনে হয়েছে।
একটি সল্প বাজেটের টাংগুয়ার হাওড় ভ্রমণ: ২ দিন আগেই টাংগুয়ার হাওড় থেকে ঘুরে আসি।কোন ধারণাই ছিল না,শুধু ট্র্যাভেলার্স অফ বাংলাদেশ গ্রুপ থেকে অন্যদের পোস্ট পড়ে প্ল্যান করে ফেলি। আর যা দেখলাম,তা নিজ চোখ ছাড়া বিশ্বাস করা সম্ভব না।তাই কম খরচে এই মিশন কি করে পসিবল করা সম্ভব তা জানানোটা দায়িত্ব ই মনে করি।তো আসল কথায় আসা যাক।
প্রথমে চট্টগ্রাম/ঢাকা/যে কোন প্রান্ত থেকে বাসে করে সুনামগঞ্জ এর রাতের বাস ধরবেন।চট্টগ্রাম থেকে ৭০০টাকা ভাড়া, আর ঢাকা থেকে ৫০০ টাকা। একদম সকালে সুনামগঞ্জ পৌছাবেন।ওখানেই নাস্তা সেরে নিন।তারপর ৫/১০ টাকা লোকাল অটো তে করে বৈঠাখালী ব্রিজ পার হবেন।ওখান থেকে ৬০/৭০ টাকা লোকাল লেগুনা তে করে তাহিরপুর চলে যান। ১.৩০ ঘন্টা লাগবে প্রায়।
এবার আসুন মেইন কথায়।এতক্ষণ যা বললাম তা বেলা ১০/১১ টার আগেই করতে হবে। কেননা যত লেইট করবেন ঘাটে নৌকা তত কমতে থাকবে,এন্ড বোট ক্রাইসিস বাড়বে।যদি গ্রুপ করে যান তাহলে বাকিদের লেগুনার ওদিকে দাড় করিয়ে যে কোন ২জন নৌকার ঘাটে চলে যান। ঘাটে পৌছে বার্গেইনিং গেইম ইজ অন।অবশ্যই ছাদ ওয়ালা নৌকা দেখবেন।এখন বলি খরচ কি করে কমাবেন।
বলবেন টাংগুয়ার হাওড়ে ওয়াচ টাওয়ার, হিজল বাগান হয়ে ঘুরাঘুরি করে ট্যাকেরঘাট পর্জন্ত রিজার্ভ।মাঝি যাই বলুক ওয়াচ টাওয়ার এ টাইম দিবেন,চাইলে শাওয়ার করে নিতে পারেন।হাওড়ে চড় উঠলে নেমে দেখতে পারেন।এসবে ১৫০০-২০০০ এর বেশি যাবে না,
তবে আপনি যদি রাতটাও কাটাতে চান নৌকায়, তাহলে পরের দিন ১০-১২ টা পর্যন্ত রিজার্ভ করতে পারেন।খরচ ৩০০০-৩৫০০ টাকার বেশি হবে না, খরচ কমাতে চাইলে নৌকা একদম সকালেও ছাড়তে পারেন, একচুয়ালি ট্যাকেরঘাট পৌছালে মাঝির প্রয়োজন নেই।
যারা সন্ধায় নৌকা ছাড়বেন তারা ট্যাকেরঘাট এ রেস্ট হাউসে কাটাতে পারেন।তবে সাজেস্ট করব ২৫০০ টাকায় ভাড়া করে মাঝিকে সকাল সকাল ছেড়ে দিন।
সকালে উঠে যে কাওকে জিজ্ঞেস করে সুরুম এ গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নিন।অইটা আসলে ঝর্ণার পানি,স্বাদ যেন অন্য লেভেল এর।তারপর সোজা বামে যেতে থাকুন।পৌছে যাবেন লাকমাছড়া।মনে রাখবেন আপনি তখন বর্ডার থেকে কয়েক গজ দূরে মাত্র।জায়গাটি অনেকটা বিছানাকান্দি,জাফলং এর মত।তবে পানির স্রোত বেশি।কিন্তু ওভারল পানি আপনার হাটুর নিচে থাকবে।পানিতে এঞ্জয় করে আগের মত ঘাটে ফিরুন।হোটেলে ব্রেকফাস্ট সেরে নিন।তারপর ঘাটের কাওকে জিজ্ঞেস করেই নিলাদ্রী চলে যান, একদম কাছে।পানি আসলেই নীল এবং ক্রিস্টাল।সাতার না জানলে লাইফজ্যাকেট নিবেন মাস্ট।ঘন্টা দেড়েক পানিতে সাতার কাটতে পারেন।অন্য মাত্রার মজা পাবেন।পাশেই ট্যাকেরটিলা,২০-২৫ মিনিট টাইম কাটান।টাইম পেলে ট্যাকেরঘাটে ঘুরতে পারেন,অনেক কিছুই দেখার আছে।কথা বলতে পারেন ভারতীয় গারোদের সাথে। ১ টার মাঝে সব সেরে লাঞ্চ করুন।তারপর বাইক ভাড়া করতে হবে একেবারে বারিক্কাটিলা,জাদুকাটা নদী,সুনামগঞ্জ পর্যন্ত ।এক বাইকে ২ জন,২৫০ টাকা করে নিবে।চলে যাবেন,রাজাই হয়ে বারেক্কাটিলা।চাইলে পথে মনোরম স্থানগুলো তে থামতে পারেন,বিশেষ করে রাজাই তে।টিলায় পৌছে ২০-২৫ মিনিট সময় দিন।তারপর প্রতি বাইক ২০ টাকায় ট্রলার করে জাদুকাটা নদী পার হোন।আধঘন্টার মত জাদুকাটায় গোসল করতে পারেন।মজার ব্যাপার নদীর পারে কক্সবাজারের মত বালু পাবেন।আর নদীর অনেক ভেতরে ঢুকলেও দেখবেন পানি আপনার কোমরের নিচেই।তবে লাইফ জ্যাকেট নিবেন মাস্ট,সেফটি ফাস্ট।ওখান থেকে আবার আগের বাইকে সুনামগঞ্জ চলে জাবেন।৩.৩০ এর মাঝেই সব হবে।এবার বলি ফ্যামিলি নিয়ে গেলে অর বাইক এভয়েড করতে চাইলে অটো নিতে পারেন।টাইম এন্ড খরচ কিছু বেশি।আর তাও যদি না চান আপনার আগের নৌকা করে চলে জাবেন আগের মত তাহেরপুর হয়ে সুনামগঞ্জ।সেক্ষেত্রে নৌকা ভাড়া করার সময় কথা বলে নিবেন পরদিন ১২টা পর্যন্ত।
৪.৩০এর মাঝে সুনামগঞ্জ পৌছালে ঘুরে আসুন একদম কাছেই হাছন রাজার বাড়ি,ভাল্লাগবে।কিছুক্ষণ ঘুরে হোটেল রোজগার্ডেন এ ডিনার করে নিবেন,এখানকার বেস্ট হোটেল।তারপর ওই রাতেই চট্টগ্রাম/ঢাকার বাস ধরুন।কেও রাত কাটাতে চাইলে হোটেল নূর এ উঠতে পারেন।ডাবল বেড নন এসি ৩৩০টাকা টিভি ছাড়া,৫০০ টাকা টিভি সহ।এসি নিলে ১০০০টাকা দামাদামি আপনার উপর।
এবার কিছু কথা বলে রাখি,
-- সরকারী ছুটিতে যাবেন না,খরচ বাড়বে,এই প্ল্যান টা বেস্ট হয় যদি বৃহস্পতিবার রাতের বাসে রওনা দেন,রবিবার ভোরে এসে পৌছাবেন।
আর যদি হাওড়ের সবচেয়ে বড় নৌকায় রাজার হালে যেতে চান এন্ড নতুন কিছু দেখতে চান,তবে হাবিব মাঝির (01743537180) নৌকার উপর কথা হবে না,যা দরকার সব ই আছে।খরচ ৩৫০০-৪/ ৪.৫ ও পরতে পারে।তবে আপনি সেরাটুকু পাবেন।
-- মনে রাখবেন আপনি যা খাবেন মাঝি এবং তার ২ জন এসিস্ট্যান্ট কেও তা খাওয়াতে হবে।মানে তাদের মিল খরচ আপনার উপর।আর যত পারেন ভাব জমাবেন।তাহলে মাঝি টাইম ও দিবে, অনেক কিছুই দেখাবে।
-- আর নিজেরা রান্না অর বাবুর্চি নিলে রাতের বাজার করে নিবেন।বাবুর্চি খরচ ৫০০টাকা।
মিনিমাম সিস্টেমে গেলে আর গ্রুপ ১০ জনের হলে ঢাকা থেকে জনপ্রতি ২০০০ টাকায় সারতে পারবেন।চট্টগ্রাম হলে ৪০০টাকা গাড়ি ভাড়া বেশি হবে।
আর কোন কিছু জানার থাকলে ফিল ফ্রি টু ইনবক্স।