Daffodil International University

Faculties and Departments => Business & Entrepreneurship => Department of Innovation & Entrepreneurship => Topic started by: Maruf Reza Byron on May 28, 2017, 12:12:26 PM

Title: বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতিঃ এক
Post by: Maruf Reza Byron on May 28, 2017, 12:12:26 PM
বিশ্ববিদ্যালয় - শব্দটি শুনলেই আমাদের মনে এক স্বাপ্নিক, বিচিত্র অনুভুতির প্রকাশ ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় হলো তারুণ্যের বিচরণ ক্ষেত্র। এই তারুণ্য শুধু বয়সের অবয়বে সীমাবদ্ধ নয়। এই তারুণ্য সৃজনের সূতিকাগার। সেই বিচারে যে কোন সমাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা মেধাচর্চার, মেধা বিকাশের। আর যে পদ্ধতিতে  মেধাচর্চায় উৎসাহিত হয় তারুণ্য তাকে আমরা শিক্ষাপদ্ধতি নামেই জানি। যুগ যুগ ধরে আমাদের সমাজের অভিজাত শিক্ষিত অংশ এবং তার নেতৃত্বের গদিতে আসীন জ্ঞানরাজ্যের রাজ্যপালেরা শিক্ষাপদ্ধতির চেহারা ণির্ণয়ে যে দিক নির্দেশনা পেশ করেছেন তার করুণ পরিণতি বর্তমান বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা পরিস্থিতি। শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগে হাজার হাজার ছেলেমেয়ের জীবন নিয়ে যে প্রহসন অত্যন্ত যত্নের সাথে মঞ্চস্থ হচ্ছে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেটাই আমাদের অতি আদরে লালিত শিক্ষাপদ্ধতি। বহুজাতিক কর্পোরেশনে মোটা বেতনের চাকরির নিশ্চয়তা বিধানে উচ্চনম্বরপ্রাপ্তির প্রতিযোগিতায় মুখস্ত-নির্ভর, সিলেবাসকেন্দ্রিক পড়াশুনার যে কসরত আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখি সেটাই আমাদের পরম আরাধ্য শিক্ষাপদ্ধতি। আমি জানি, আমাদের ক্যাম্পাসগুলোর বিজ্ঞ-মহাজন-শিক্ষকদের এসব কথা ভেবে নষ্ট করার মতো সময় একেবারেই নেই। সব অর্থেই 'অর্থহীন' এসব প্যাচালে ওনারা একেবারেই অনাগ্রহী। অন্যদিকে, বেশিরভাগ 'তরুণ' শিক্ষকই কর্মপন্থা ণির্ণয়ে দিশেহারা। বিশেষত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের 'তরুণ' শিক্ষকদের অবস্থা ভীষণ করুণ। জ্ঞানচর্চা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শিক্ষাপদ্ধতি - এসব তাদের কাছে হয় 'বিলাসিতা' নয়তো 'ব্যর্থ' জীবনের গান। এখন প্রতিনিয়ত আমাদের শুনতে হয়, 'সেই দিন আর নাই; শিক্ষকতা বদলে গেছে'। এক সময়ের 'মহান ব্রত' এখন পরিণত হয়েছে 'বাতিল' পেশায়!
 
কিন্তু, এভাবে আর কতদিন? আমরা স্বপ্ন দেখি একদিন এই বাংলাদেশে তরুণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে শুধু নম্বর পাবার আশায় নয়। সত্যিকার অর্থে জ্ঞানচর্চার উদ্দেশে, জ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের স্বপ্নে বিভোর হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনকে তারা রঙিন করে তুলবে। আর জ্ঞানচর্চার সেই মহোৎসবে তাদের পথ দেখাবে তাদেরই নিঃস্বার্থপ্রাণ শিক্ষকেরা। বর্তমানের আঁধারঘেরা বাস্তবতায় সেদিনের সোনালী সূর্যোদয় ত্বরাণ্বিত করতে আমাদের এখন ঘুরে দাঁড়াতে হবে সব রকম স্বার্থপরতা, ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা, আর কূপমন্ডুকতার বিরুদ্ধে। আমাদের বিশ্বাস, সেদিন বেশী দূরে নয়। আমরা নিশ্চয়ই স্বপ্ন দেখার সাহস হারিয়ে ফেলি নি!