Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Islam & Science => Topic started by: rumman on July 21, 2017, 12:05:46 PM

Title: The way to keep your heart healthy
Post by: rumman on July 21, 2017, 12:05:46 PM
কলব (অন্তর) অর্থ দিক পরিবর্তন করা, স্থান ত্যাগ করা, উল্টানো, ফেরানো। কলব দ্রুত পরিবর্তন হয় বলে একে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে। ব্যক্তি তার অন্তরকে যেদিকে পরিচালিত করে, তা সেদিকে পরিচালিত হয়। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কলব বা মন হলো পালকের মতো, যাকে সামান্য বাতাস দূরে নিয়ে যায়। ’

অন্তর গাড়ির ইঞ্জিনসদৃশ : গাড়ি পরিচালনা করে ইঞ্জিন। ইঞ্জিনের শক্তি অনুযায়ী বডি প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। ইঞ্জিনের শক্তি প্রবল হলে বডি দুর্বল হলেও গাড়ি লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে। মানব দেহের প্রধান বস্তু হলো কলব। মহানবী (সা.) দোয়া করতেন—হে মনের প্রতিষ্ঠাকারী, আমার মনকে আনুগত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখুন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-৮৮, আহমদ-৪/৪০৮)।   মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মানব দেহে এমন একটি গোশতের টুকরো আছে, যা সুস্থ থাকলে গোটা দেহ সুস্থ, আর তা অসুস্থ হলে গোটা দেহ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার নাম ‘কলব’ (বুখারি ও মুসলিম)। এ হাদিস দ্বারা প্রতীয়মান হয়, কলবই দেহের প্রধান বস্তু। আর এ কারণে কলবকে পরিচ্ছন্ন রাখা অপরিহার্য। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আল্লাহ তাআলা মানুষের বাহ্যিক কলবকে আকৃতি ও সম্পদের দিকে তাকায় না, বরং তার কলব ও আমলের দিকে তাকান। ’ (মুসলিম)। 

অন্তর পরিচ্ছন্ন রাখার উপায় : অন্তর বা কলবকে অবশ্যই পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আর একে পরিচ্ছন্ন রাখার উপায় হলো—১. আল্লাহর জিকির তথা আল্লাহ তাআলাকে সদা স্মরণ করা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখো, আল্লাহর স্মরণে হৃদয় প্রশান্তি লাভ করে’ (সুরা রাআদ : ২৮)। আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন, আর যে আমর যিকির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, অবশ্যই তার  দুনিয়ার জীবন হবে সংকীর্ণ। আর কিয়ামতের দিন আমি তাকে অন্ধ অবস্থায় উঠাব। সে বলবে, হে আমার রব, দুনিয়ায় তো আমার চোখ ছিল, এখানে আমাকে অন্ধ বানিয়ে উঠালে কেন? আল্লাহ বলবেন, ‘এভাবেই যখন আমার আয়াত তোমার কাছে এসেছিল তখন তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাওয়া হচ্ছে। ’ (সুরা তাহা : ১২৪-১২৬)।

সদা পরকালের চিন্তা : আখিরাতের চিন্তা মানুষকে পাপমুক্ত রাখতে পারে। আল্লাহ তাআলা  ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে সিজদাবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে আনুগত্য প্রকাশ করে, আখিরাতকে ভয় করে এবং তার রবের রহমত প্রত্যাশা করে (সে কি তার ন্যায়? যে তা করে না?)। ’ (সুরা জুমার : ৯)। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘বুদ্ধিমান ওই ব্যক্তি, যে তার আত্মাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরকালের জন্য কাজ করে। ’ (তিরমিজি)

প্রতিনিয়ত কোরআন পাঠ : মহানবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যত দিন এ দুটি জিনিস আঁকড়ে ধরবে, পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হলো  কোরআন মাজিদ, অন্যটি হাদিস শরিফ। ’ (তারগির ও তারহিব)।   আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে মানবজাতি! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে এসেছে এক নসিহত। এটি অন্তরগুলোর সব ব্যাধির ওষুধ এবং মুমিনদের জন্য পথ প্রদর্শক ও রহমত। ’ (্সুরা ইউনুস : ৫৭)।

প্রতিনিয়ত হাদিস পাঠ : হাদিস হলো মহানবী (সা.)-এর বাণী। মহানবী (সা.) নিজের থেকে কিছুই বলেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা না বলেন। হাদিস হলো কোরআনের ব্যাখ্যা। হাদিস অধ্যয়ন ছাড়া অন্তরকে পরিশুদ্ধ করা সম্ভব নয়। মহানবী (সা.) কর্ম ও চারিত্রিক গুণাবলির প্রতিচ্ছবি হলো হাদিস। রাসুলুল্লাহ (সা.) কেমন ছিলেন, তাঁর মর্যাদা, শ্রেষ্ঠত্ব অলৌকিকতা ইত্যাদি হাদিস শরিফে বিদ্যমান। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘রাসুল তোমাদের যা দেন, তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা থেকে তোমাদের বারণ করেন, তা থেকে বিরত থাকো। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ শাস্তিদানে অতি কঠোর। ’ (সুরা হাশর : ৭)।

পাপাচার বর্জন : মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ কোনো গুনাহ করলে তার কলবে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। তাওবা করলে পরিষ্কার হয়ে যায়। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৩৪)। সুতরাং কলবকে সর্বপ্রকার পাপাচার থেকে পরিচ্ছন্ন রাখা অপরিহার্য।

আন্তরিকতার সঙ্গে ইবাদত করা : রাসুলুল্লাহ (সা.)  ইরশাদ করেছেন, ‘তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করো, যেন তুমি আল্লাহ তাআলাকে দেখছ কিংবা এ বিশ্বাস করো যে আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। ’ (বুখারি মুসলিম)। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তাদের (মুমিনদের) খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ’ (সুরা বাইয়্যিনাহ :  ৫)।

কলবের হিসাব হবে : আল্লাহ তাআলা  ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যাপারে তোমার জ্ঞান নেই, তার  পেছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে। ’ (সুরা বনি ইসরাইল : ৩৬)।

তাওবা-ইস্তেগফার করা : স্বীয় পাপ মোচন করার জন্য স্বীয় মালিকের কাছে তাওবা ইস্তেগফার করা উচিত। আল্লাহ তাআলা  ইরশাদ করেন, আর তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবা করো। হে বিশ্বাসীগণ! আশা করা যায় যে তোমরা সফলকাম হবে। (সুরা আন্নূর : ৩১)। আরো ইরশাদ করেন, আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও এবং তাঁর কাছে তাওবা করো। তাহলে এক বিশেষ মেয়াদ পর্যন্ত তিনি তোমাদের ভালো জীবিকা দান করবেন এবং তাঁর মেহেরবাণী পাওয়ার যোগ্য প্রত্যেককে তিনি অনুগ্রহ দান করবেন। কিন্তু তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও, তাহলে আমি তোমাদের জন্য এক ভয়ানক দিনের আজাবের ভয় করছি। তোমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছেই ফিরে আসতে হবে এবং তিনি সবকিছু করারই ক্ষমতা রাখেন (সুরা  হুদ : ৩, ৪)।

Source: মুফতি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম