Daffodil International University
Faculties and Departments => Business & Entrepreneurship => Business Administration => Topic started by: MD. ABDUR ROUF on October 10, 2017, 11:37:27 AM
-
পত্রিকায় পড়লাম- দেশের দুই মেধাবী ছেলে ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে গিয়েছে এই বছর। তো, এই দুই ছেলের একজনের এইচএসসির জিপিএ হচ্ছে ৪.৫০, আরেকজনের হচ্ছে ৪.৫৭। আমি মোটামুটি নিশ্চিত কম মার্কসের কারনে এই দুইজনের কারো পক্ষেই হয়তো দেশের
বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দেয়াই সম্ভব হয়নি। অথচ এই দুই ছেলে'ই পৃথিবীর সব চাইতে নামকরা এবং ভালো বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একটি'তে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চলে গেছে। আরো ব্যাপার আছে। আপনাদের নিশ্চয় জানা আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হবার জন্য চারটা ফার্স্ট ক্লাস থাকতেই হবে, এমন একটা
নিয়ম চালু করা হয়েছে। অর্থাৎ কারো এসএসসি কিংবা এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট যদি খারাপ থাকে, সেই ছাত্রই যদি এরপর অনার্স এবং মাস্টার্সে ফার্স্ট হয়ে বসে থাকে, কোন লাভ নেই! সে শিক্ষক হবার আবেদন'ই করতে পারবে না! শুধু তাই না, ধরুন আপনি অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ কিংবা হার্ভার্ড থেকে অনেক ভালো
রেজাল্ট নিয়ে পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করলেন, কিন্তু দেখা গেলো আপনার এসএসসি কিংবা এইচএসসি'র কোন একটাতে প্রথম বিভাগ নেই; তাহলেও আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবার জন্য আবেদন করতে পারবেন না! তাহলে কারা শিক্ষক হচ্ছে? কিছুদিন আগে পত্রিকার খবর'টা নিশ্চয়
আপনাদের সবার'ই জানা আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক অন্যের গবেষণা নিজেদের বলে চালিয়ে দিয়ে সেটা প্রকাশও করে ফেলছিলো! এটা অবশ্য'ই এক ধরনের চুরি! তাহলে তারা এমন চুরি কেন করছিলো? এর প্রথম কারন হচ্ছে, এরা এভাবে চুরি করতে করতেই শিক্ষক হয়ে গিয়েছেন! হয় শিক্ষকদের
বাজার করে দিয়ে, পেছনে পেছনে ঘুরে কিংবা রাজনীতি করে কিংবা অন্য অনেক উপায়ে। বলছি না, সবাই এই উপায়ে শিক্ষক হচ্ছে, তবে বেশিরভাগই এই উপায়ে শিক্ষক হচ্ছেন।
শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ক্ষেত্রেই ব্যাপার গুলো অনেকটা এই রকম! এরা কিন্তু সবাই ফার্স্ট ক্লাস পেয়েই শিক্ষক হচ্ছেন। আপনারা আবার ভেবে বসবেন না, এদের রেজাল্ট খারাপ! এদের সবার রেজাল্ট'ই ভালো। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এরা ভালো রেজাল্ট কিভাবে করছে? আমি মোটামুটি নিশ্চিত সবার এই বিষয়ে কম বেশি জানা আছে। আরেকটা কারন অবশ্য আছে। আমার কি ধারনা জানেন? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেই শিক্ষক
গুলো অন্যের লেখা নিজের বলে চালিয়ে দিয়েছেন; এরা জানেই না কিভাবে গবেষণা রিপোর্ট লিখতে হয়। কারন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে একাডেমীক রাইটিং কিংবা কিভাবে সাইট করতে হয় বা একটা পেপার(সায়েন্টিফিক) কিভাবে লিখতে হয় সেটা শেখানো হয় না। তাই এরাও এইসবের কিছুই জানে না!
অথচ গিয়ে দেখুন পৃথিবীর সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষেই এইসব শেখানো হয়! আর আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স, মাস্টার্স করা এবং শিক্ষক হয়ে যাওয়া বেশিরভাগ লোকজনই জানে না একটা একাডেমীক পেপার কিভাবে লিখতে হয়! তো এই হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ! এদের কাছ থেকে আসলে বেশি কিছু আশা করা নির্ঘাত বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক'রা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয় - চারটা ফার্স্ট ক্লাস না
থাকলে শিক্ষক হওয়া যাবে না, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক'দের চিন্তা শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়! আমি আমার ইউরোপিয়ান এক সহকর্মীকে এই ব্যাপারটা
বলেছিলাম। সে আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বলছিলো -স্কুলের রেজাল্ট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কি করবে? তোমাদের শিক্ষকরা এই ধরনের সিদ্ধান্ত কি করে নিলো? যেই ছেলেপেলেরা অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজে পড়াশুনা করতে চলে যেতে পারছে, সেখানে শিক্ষকও হয়ে যেতে পারছে; সেই ছেলেপেলেরা'ই নিজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে আবেদন পর্যন্ত করতে পারছে না স্রেফ কিছু নির্বোধ শিক্ষক এবং তাদের সিদ্ধান্তের জন্য।
একটা দেশের মেধার চর্চা'কে পুরোপুরি ডুবিয়ে দেয়ার দায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়'কে নিতেই হবে। কারন এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে দেশের বাদ বাকী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো অনুসরণ করে।