Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Allah: My belief => Topic started by: rumman on October 16, 2017, 03:39:00 PM

Title: Good social uplift
Post by: rumman on October 16, 2017, 03:39:00 PM
ইসলাম আত্মকেন্দ্রিকতার পরিবর্তে সামাজিকতার প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। গুরুত্ব দিয়েছে মানবিক, উদার ও বন্ধুবৎসল হওয়ার প্রতি।
অন্যান্য মহৎ গুণের পাশাপাশি প্রত্যেক মুসলিমকে যে বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে তা হলো, মানুষের প্রতি সুধারণা পোষণ করা। সুধারণা সমাজে কল্যাণ বয়ে আনে, ভ্রাতৃত্ববোধ অটুট রাখে। প্রত্যেক বিবেকবান মানুষেরই সুধারণামূলক মনোভাব থাকা আবশ্যক। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন,  ‘সুন্দর ধারণা সুন্দর ইবাদতের অংশ। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৯৩)

পক্ষান্তরে মন্দ ধারণা কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। মন্দ ধারণা পোষণকারী ব্যক্তি হিংসা-বিদ্বেষ, দ্বন্দ্ব-কলহে ইন্ধন জোগায়। মন্দ ধারণার মধ্য দিয়ে মানুষের ভ্রাতৃত্ববোধে চিড় ধরে। ফলে একতার বন্ধন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তাই অন্য মুসলিম ভাই সম্পর্কে সর্বদা সুধারণা পোষণ করা আবশ্যক।
মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা অধিক ধারণা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা কোনো কোনো ধারণা পাপ...। ’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১২)

মন্দ ধারণা থেকেই হিংসা-বিদ্বেষের সৃষ্টি। আর হিংসা-বিদ্বেষ থেকে অন্যায়ের জন্ম। হাদিসে সংশয়-সন্দেহ থেকে দূরে থেকে পরস্পরের প্রতি সুধারণা পোষণ করতে বলা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা কুধারণা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা ধারণাভিত্তিক কথাই হলো সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা। তোমরা একে অন্যের দোষ অনুসন্ধান কোরো না। পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ কোরো না ও পরস্পর শত্রুতা কোরো না। বরং  হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা পরস্পর ভাই ভাই হয়ে যাও। ’ (বুখারি, হাদিস : ৪৮৪৯)

ইসলামের প্রথম যুগের অনুসারীদের কর্মপদ্ধতি এ রকম ছিল যে তাঁরা কোনো কথা শোনামাত্রই তা খারাপ অর্থে না নিয়ে ভালো অর্থে গ্রহণ করতেন। হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, ‘তোমার ভাইয়ের ভেতর থেকে যে কথা বের হয়েছে, তাকে তুমি খারাপ অর্থে নেবে না। বরং কোনো কথা শোনামাত্রই উত্তমভাবে নেবে। ’ (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৭৯৯২)

তাই মুসলিম ভাইয়ের যেকোনো কথায় বা কাজে তার ওজর-আপত্তি তালাশ করতে হবে। আগের মুসলমানরা কাউকে ক্ষমা করার নিমিত্তে তার ওজর-আপত্তি তালাশ করতেন। তাঁদের কথাই ছিল—‘তোমরা তোমাদের ভাইয়ের ৭০টি ওজর অনুসন্ধান করো। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫১৬৪)

মানুষের উচিত হলো, মনের সব বিষয় একমাত্র গায়েবজান্তা আল্লাহর দিকে ন্যস্ত করা। আল্লাহ আমাদের মানুষের অন্তর চিড়ে তার স্বরূপ উদ্ঘাটনের নির্দেশ দেননি। হজরত উসামাহ বিন জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের হুরাকাহ নামক স্থানে জুহাইনা গোত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য পাঠিয়েছেন। সেখানে আমরা প্রভাতে তাদের ওপর হামলা করি। আমি ও একজন আনসার সাহাবি মিলে তাদের একজনের ওপর আক্রমণ করলাম। আমরা তাকে কাবু করে ফেললে সে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে। ফলে আনসারি সাহাবি তাকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু আমি আমার বল্লম দ্বারা আঘাত করে তাকে হত্যা করে ফেলি। যখন আমরা ফিরে আসি, তখন এ সংবাদ রাসুল (সা.)-এর কাছে পৌঁছে। তিনি বলেন, ‘হে উসামা! ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার পরও তুমি তাকে হত্যা করলে? আমি বললাম, সে হত্যা থেকে আত্মরক্ষার জন্য কালেমা পড়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) কথাটার পুনরাবৃত্তি করতে থাকেন। আর আমি আফসোসের সঙ্গে কামনা করলাম, হায়! আমি যদি এ দিনের আগে ইসলাম গ্রহণ না করতাম (তাহলে তো আমার মাধ্যমে এমন ঘটনা সংঘটিত হতো না)। ’

(বুখারি, হাদিস : ২৪৬৯)

Source: মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, লেখক : ইসলামী গবেষক