Daffodil International University

Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: Mousumi Rahaman on October 17, 2017, 10:07:00 AM

Title: ঘর সাজানোয় দেশি উপকরণ
Post by: Mousumi Rahaman on October 17, 2017, 10:07:00 AM

http://paimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/640x355x1/uploads/media/2017/07/03/db24e9e70949dc951c54fd80e1f350b8-595a8360a3847.gif
দেশ থেকে দেশের বাইরে কী উপহার পাঠানো যায়। সবই তো আছে ওখানে। অন্দরসজ্জা সাজানোর উপকরণগুলোর কথাই যেন তখন বেশি মনে পড়ে। দেশীয় উপকরণে তৈরি বিভিন্ন জিনিস যেন বিদেশে পৌঁছে দেয় দেশের ভালোবাসা। অনেকে মনে করেন, দেশীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি জিনিস অন্দরসজ্জায় ভালো লাগে না। কিন্তু যদি সাজাতে পারেন, তাহলে জানালার চিকই পুরো ঘরের চেহারা বদলে দেবে। এথনিক ভাব নিয়ে আসবে অন্দরসজ্জায়।
র্যাডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের প্রধান ও অন্দরসজ্জাবিদ গুলসান নাসরীন চৌধুরী জানালেন, অন্দরসজ্জায় দেশীয় উপকরণ ব্যবহারের ফলে হারিয়ে যেতে থাকা ঐতিহ্য রোজকার জীবনে যেমন ফিরিয়ে আনা সম্ভব, তেমনি এগুলোর মাধ্যমে শিশুকে এ দেশের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সম্পর্কে ছোটবেলা থেকেই অভ্যস্ত করে তোলা যায়। সমাজের অস্থিরতা আর অপরাধপ্রবণতা কমিয়ে আনতে শিশুর বেড়ে ওঠার সময়টাতেই দেশীয় চেতনা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে পরিচয় ঘটানো প্রয়োজন। আর এর শুরুটা বাড়ির ভেতর থেকেই। অন্দরসজ্জার উপাদান শিশুর বিকাশেও ইতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলে।


চিক ঘরের সাজে এনে দেয় ভিন্নতা।
প্রবেশপথে
বাড়িতে ঢোকার পথে মাটি বা টেরাকোটার সামগ্রী ব্যবহার করতে পারেন। আয়না রাখতে চাইলে মাটি, বেত বা কাঠের ফ্রেমের আয়না বেছে নিতে পারেন। পাটের শিকা ঝুলিয়ে দিতে পারেন। শখের হাঁড়ি সাজিয়ে রাখুন শিকায়। চাইলে এসব রঙিন হাঁড়ির মধ্যে প্লাস্টিকের পাত্রে মানিপ্ল্যান্ট জাতীয় গাছও রাখতে পারেন; পরিচর্যার প্রয়োজনে প্লাস্টিকের পাত্রটি সরিয়ে নিতে পারবেন, আবার পরে রেখেও দেওয়া যাবে।


বসার ঘরের একটা কোণ এভাবে সাজানো যায়
বসার ঘর
বেত, বাঁশ বা কাঠের সোফা রাখতে পারেন। সোফা না চাইলেও দুটি উঁচু চেয়ার রাখতে পারেন। সোফার মতো আরামদায়ক চেয়ারও হতে পারে এ দুটি, তবে একটু উঁচু তৈরি করা উচিত। অনেক সময় বয়স্ক ব্যক্তিদের স্বাভাবিক উচ্চতার সোফায় বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়াতে কষ্ট হয়। তাঁদের জন্য বাঁশ বা বেতের তৈরি এ ধরনের চেয়ারের ব্যবস্থা রাখুন। ঘরের এক পাশে বাঁশ বা বেতের নিচু ডিভান কিংবা শতরঞ্জি রাখতে পারেন শিশু আর তরুণদের গল্প-আড্ডার জন্য।
সোফা আর ডিভানের কুশন কভারেও রাখুন দেশীয় নকশার ছোঁয়া। পাটের তৈরি টেবিল ম্যাচ ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া রাখতে পারেন পাটের তৈরি টিস্যু বক্স। পাটের কার্পেটও পাওয়া যাচ্ছে আজকাল।
গ্রামীণ চেকের কাপড়ের পর্দা ব্যবহার করলে ভালো দেখাবে। তাঁত, জামদানি, কাতান বা সুতি কাপড়ের পর্দাও মানানসই। পেলমেট ব্যবহার না করাই ভালো। লুপ লাগানো পর্দা বেশ মানাবে। লুপের জায়গাটাতে নারকেলের খোলের বোতাম লাগানো যায়।
ল্যাম্পশেড রাখতে চাইলে সেটিও বেত, বাঁশ বা মাটির তৈরি হলে ভালো দেখাবে। ঘরে আলো আসলে এক কোণে বনসাই রাখতে পারেন। একই সঙ্গে দুটি বনসাইয়ের ব্যবস্থা রাখা ভালো; একটি বসার ঘরে, আরেকটি বারান্দা বা ছাদে রাখতে পারবেন। এক সপ্তাহ পরপর গাছ দুটি অদল-বদল করে নিন। এর ফলে দুটি গাছই পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পাবে।
সাজানোর জন্য নানা ধরনের দেশীয় উপকরণে তৈরি শোপিস কিনতে পাওয়া যায়। পাট, বেত, কাঠ ও মাটির হরেক রকম শোপিস বিভিন্ন মেলায় পাওয়া যায়। আড়ং, যাত্রা বা আইডিয়া ক্রাফটসেও মিলবে এমন জিনিস।


খাবার টেবিলে রানার ও টুকটাক জিনিসপত্র এনেছে নান্দনিকতা
খাবার ঘর
বসার ঘর আর খাবার ঘরের মাঝে পাটের তৈরি উপকরণ সুন্দর বিভাজকের কাজ করবে। শিকাজাতীয় বুননে তৈরি পাটের লম্বা স্তরে ঝিনুক লাগানো থাকলেও বেশ লাগবে। খাবার টেবিলটা কাঠের হতে পারে, আবার ওপরটায় কাচও থাকতে পারে। টেবিলের ওপর তাঁতের রানার (যেটি লম্বাভাবে খাবার টেবিলে বিছিয়ে দেওয়া হয়) রাখতে পারেন। খাবার টেবিলের ওপর পাটের তৈরি নান্দনিক ঝুরিতে দরকারি জিনিসগুলো গুছিয়ে রাখা যায়। ঝুরির ঠিক মাঝ বরাবর সাধারণ কাচের বোতলে বালু ভরে ঝুরিজাতীয় ফুল রেখে দিতে পারেন।
আজকাল খাবার ঘরের চেয়ারে কভার লাগানোর পুরোনো রীতিটা নতুনভাবে ফিরে আসছে। এই কভারও দেশি কাপড়ে তৈরি করে নিতে পারেন। অনেক বাড়ির খাবার ঘরে মাইক্রোওয়েভ ওভেন, টোস্টার, জুসার ইত্যাদি রাখার জন্য মেঝে থেকে ফুট তিনেক উঁচু তাক থাকে। এই তাকেও দেশীয় উপকরণে তৈরি শোটি বা ফুলদানি রাখতে পারেন।

শোয়ার ঘর
বেত বা বাঁশের সুন্দর খাট রাখতে পারেন শোয়ার ঘরে। বেডকভার হতে পারে নকশিকাঁথা। দেয়ালেও বাঁধানো নকশিকাঁথা সাজিয়ে রাখতে পারেন। মাটির পাত্রে পানিতে গোলাপের পাপড়ি বা ছোট মোমবাতি ভাসিয়ে রাখতে পারেন। মাটির বড় ফুলদানিতে রজনীগন্ধা বা দোলনচাঁপা রাখা যায়। ল্যাম্পশেডেও দেশীয় উপকরণ থাকতে পারে। এ ঘরেও তাকের পর্দা লাগালে ভালো দেখাবে।

শিশুর ঘর
শিশুর ঘরের মেঝেতে শতরঞ্জি বিছিয়ে রাখতে পারেন। অনেক সময় শিশুরা খেলনা নিয়ে মেঝেতেই বসে পড়ে। শতরঞ্জি থাকলে ওরা এর ওপর বসে খেলতেও পারবে। দেয়ালে দেশের পতাকা, কাজী নজরুল ইসলামের ছবি রাখতে পারেন। এতে ওদের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই দেশীয় সাহিত্যে আগ্রহ তৈরি হবে। ছবির ফ্রেমও দেশীয় উপকরণে তৈরি হলে ভালো।
বারান্দায় ঝোলানো বেতের দোলনা রাখা যায়। এ ছাড়া রাখুন গাছ। গাছে ফুল ফুটলে শিশু আনন্দ পাবে। অযত্নে গাছ মারা যায়, এই বিষয়টি দুঃখের—এমন বোধ ওর মধ্যে তৈরি হলে বড় হতে হতে ও যত্নশীল হয়ে উঠবে। আবেগ-অনুভূতিগুলো সুস্থ পরিবেশের মাঝেই তৈরি হবে। এ ধরনের উপকরণ শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়ক।
Title: Re: ঘর সাজানোয় দেশি উপকরণ
Post by: Nusrat Jahan Bristy on October 17, 2017, 10:09:22 AM
 :)