Daffodil International University
Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Topic started by: faruque on October 22, 2017, 02:08:13 PM
-
আল্লাহর গোসা ও দয়ার ছায়া দুনিয়ায় পড়ে
(http://)
হজরত আদম আলাইহিসসালাম হঠাৎ একদিন আরশের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলেন সেখানে লেখা আছে— আশহাদু আল্লা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। এ পৃথিবীটা দুটি অবস্থার ওপর নির্ভর করে মুসলমানদের এটা বিশ্বাস করতে হবে।
১. আল্লাহর গোসা। ২. আল্লাহর দয়া। দুনিয়াতে যা কিছু নয়, তা হয়তো আল্লাহর গোসার বহিঃপ্রকাশ নয়তো আল্লাহর দয়ার বহিঃপ্রকাশ। এর জন্য মাধ্যম হয় অন্য কিছু। যেমন আমি কথা বলি, মাইক তার মাধ্যম। রাগে কথা বলি মাইকে রাগ প্রকাশ পায়। আনন্দের স্বরে কথা বলি তাহলে মাইকে আনন্দের সুর প্রকাশ পায়। সারা পৃথিবীর মধ্যে যা হচ্ছে শান্তির বলেন আর অশান্তির বলেন, মূলত এগুলো আল্লাহর দু-অবস্থার বহিঃপ্রকাশ। তারই ক্রিয়া হচ্ছে কখনো সূর্যের তাপের মাধ্যমে, কখনো সয়লাবের মাধ্যমে, তুফানের মাধ্যমে, কখনো অগ্নিশিখার মাধ্যমে। আবার কখনো দেখা যায় সকালে ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে, ফলে দিলের মধ্যে শান্তি লাগে।
আসলে এগুলো আল্লাহপাকের দয়ার বহিঃপ্রকাশ। ঠাণ্ডায় শেষ রাতে ঘুম আসে, গরমের দিনেও শান্তি লাগে। কেন? আমরা চিন্তা করি না। আমাদের দেশের যত গুনাহগার চুরি করে, ডাকাতি করে, মদ পান করে, সে সময় সংখ্যায় কমে যায়। জানোয়ার পশু ঘুমিয়ে থাকে। মানবরূপী পশুরাও নিষ্ক্রিয় হয়ে ঘুমিয়ে থাকে, তখন জাগে কারা? আল্লাহপাক বলেন— ওবিল আসহারিহুম ইয়াসতাগফিরুল ‘রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে। ’ তখন কালিমায়ে তাইয়্যেবা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ পড়ে, কোরআন তেলাওয়াতে অভ্যস্ত, তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত, আল্লাহর প্রেমিক তারা শেষ রাতে ঘুমায় না। সে সময় তাদের চোখে অশ্রু ঝরে, তারা হাত তুলে রাখে আল্লাহর দরবারে, কেউ নতশির হয়ে থাকে আল্লাহর দরবারে। কেউ নামাজ পড়ে, কেউ কোরআন তেলাওয়াত করে। আল্লাহপাক দেখেন যে, সারা পৃথিবীর মানুষগুলো ঘুমিয়ে আছে। আর আমার এ বান্দাগুলো গাত্রোত্থান করে আমার কাছে ভিক্ষুকের মতো হাত উঠিয়ে রেখেছে। এ সময় আল্লাহপাক শান্তি বর্ষণ করেন। ফলে মানুষ ফজরের আগে আরামে ঘুমায়। আল্লাহপাক প্রিয় বান্দাদের বলেন— তোমরা আমার জন্য রাতে জাগ্রত যখন রইলে, কাঁদলে, তবে ফজরের নামাজও পড়ে নাও। তাহলে আমি ধরে নেব যে, তোমরা সারা রাত কেঁদেছো।
বলছিলাম যে, আমরা আসলে চিন্তা করি না আল্লাহপাক বলেন, রাহমাতি সাবিকাত গাজাবি— প্রতিযোগিতায় আমার রাগ পরাজিত হয়েছে এবং রহমত বিজয়ী হয়েছে। মনে রেখ হে দুনিয়ার মানুষ! তোমাদের শাস্তি যা হয় এটা আসলে আমার রাগের বহিঃপ্রকাশ। মাধ্যম ইয়াহুদি-খ্রিস্টান হয়, সাপ-বিচ্ছুর হয়, বাঘ-ভাল্লুক হয়, বোমা হয়। মূল পরিচালনায় আমার অসন্তুষ্টি। তাই যদি তুমি নতশির হতে পার, ইস্তিগফার পড়তে পার, অনুতপ্ত হও, তাহলে তুমি কামিয়াব হবে। এ জন্য আমি এখানে লিখে রেখেছি রাহমাতি সাবিকাত গাজাবি।
আমার গোসার সামনে যখন দয়া শুরু হয়ে যায়। তখন গোসা নির্বাপিত হয়ে যায়। আর গোসা নির্বাপিত করার তরিকা হলো, তুমি নতশির হও। আমিত্ব ভাব বর্জন কর। একে অপরকে গ্রাস করার মনোভাব বর্জন কর। শান্তিপ্রিয় হও। আদম (আ.) কে যে শান্তির বাণী দিয়েছিলাম সেটা চালু কর। আল্লাহপাক আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, ঢাকা।