Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Public Health => Topic started by: rumman on December 21, 2017, 01:07:32 PM

Title: Turmeric that works as a medicine for 25 diseases
Post by: rumman on December 21, 2017, 01:07:32 PM
(http://www.onnodiganta.net/contents/records/article/201710/5232_1.jpg)

শুনতে শোনার মতো না হলেও অনেক ভেষজই চিকিৎসায় বিরাট অবদান রাখে। হলুদ তার মাঝে একটি। প্রাথমিক অবস্থায় এটি পরম বন্ধুর কাজ করে কতক রোগের ক্ষেত্রে। তা ছাড়া আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্যের ভাষায় বলতে হয়, ‘অনেক ব্যাধিই অকস্মাৎ বৃহৎ হয়েও দেখা দেয় না, সেসব ক্ষেত্রে কু-চিকিৎসা না হলে এমনি স্বল্পায়ানা চিকিৎসাতেই সুস্থ হয়ে যায়।’

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ভেষজ উদ্ভিদের প্রচলন তাই স্বাস্থ্য রক্ষার প্রথম দাবি। হলুদ সে ক্ষেত্রে প্রথম সারির ভেষজ। তাই এর বহুল ব্যবহারও চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাঞ্ছনীয়।


হলুদের অপর নাম বর্ণবতী। বলবর্ধক, রক্তপরিষ্কারক, পিত্তনাশক, দাহ-নিবারক এ মসলা উপকারের কারণে বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন কাঞ্চনী, পীত, বরবর্ণিলী, যোষিৎপ্রিয়া ও বর্ণবিধায়িনী। এতে আছে কফ, বাত, পিত্ত, ব্রণ, চর্মরোগ, শোথ, পাণ্ডু, কৃমি, প্রমেহ, অরুচি, উদরী ও বিষদোষ প্রশমন করার ক্ষমতা। প্রাচীনকাল থেকে এটি ঘরোয়া ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এটি ভারতবর্ষে আয়ুর্বেদ ও হেকমিতে ব্যবহৃত। এটি ভেষজ ছাড়াও বর্ণ, রুচি ও দিপ্তির জন্য উপকারী হিসেবে চিহ্নিত। এর ভেষজ ব্যবহার নিম্নরূপ


পেটের বায়ু ও পুরাতন ডায়রিয়া : পেটে বাতাস হলে ও পুরনো ডায়রিয়ায় হলুদের গুঁড়ো বা রস পানিসহ খেলে খুবই উপকার হয়।


পেটের পীড়া : পেটের সংক্রমণ দমনে হলুদ খুবই কার্যকর। মাখন বা দুধের সাথে হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে উপকার মেলে।


কৃমি : কাঁচা হলুদের রস ১৫-২০ ফোঁটা (বয়সানুপাতে) সামান্য লবণ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেতে হয়। কৃমি দমনে কার্যকর ওষুধ, তাই একে কৃমিঘ বা কৃমিনাশকারীও বলে।


লিভারের দোষ : পাণ্ডু রোগে (জন্ডিস) গায়ের রঙ ফ্যাকাশে হয়ে আসছে বুঝতে পারলে হলুদের রস ৫ থেকে ১০ ফোঁটা থেকে শুরু করে বয়সানুপাতে ১ চা চামচ পর্যন্ত একটু চিনি বা মধু মিশিয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা বহু আগে থেকে চলে আসছে। আবার একটু হলুদ গুঁড়া তার দ্বিগুণ পরিমাণ দইয়ে মিশিয়ে খেলে পিলে ও যকৃতের দোষ এবং জন্ডিস সারে। মধুসহ হলুদ খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।


তোতলামি : ছোটবেলায় যাদের কথা আটকে যায় বা স্বাভাবিকভাবে তাড়াতাড়ি কথা বলার অভ্যাস, সে ক্ষেত্রে হলুদকে গুঁড়ো করে (কাঁচা হলুদ শুকিয়ে গুঁড়ো করতে হবে) তা দুই-তিন গ্রাম পরিমাণে এক চা চামচ ঘিয়ে একটু ভেজে সেটাকে দুই-তিনবার চেটে চেটে খাওয়াতে হয়। এতে তোতলামি কমে যায়।


শ্লিপদ (ফাইলেরিয়া) : এ অবস্থায় এক চা চামচ হলুদের রস অল্প গুড় ও এক চা চামচ গরুর পেশাব খাওয়াতে বিধান কবিরাজ চক্রপানি দত্তের। এটি আমবাতেও ব্যবহার করা হয়।


হামজ্বর : ক) এ জ্বরে কাঁচা হলুদ শুকিয়ে গুঁড়ো করে সাথে করলা পাতার রস ও অল্প মধু মিশিয়ে খাওয়ালে তা সারে।
খ. হলুদের শিকড় রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে এক চা চামচ মধু ও করলা পাতার রস মিশিয়ে খেলে হাম সারে।
পুরনো ঘুসঘুসে জ্বর, কোষ্ঠবদ্ধতা, হজমে দুর্বলতা, পুরনো কাশি : মধু মিশিয়ে হলুদের গুঁড়ো খেলে এসব রোগে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।


এলার্জি : খাদ্য বিশেষে অনেকের দেহ চাকা চাকা হয়ে ফুলে ওঠে, চুলকায়, লাল হয়ে যায় তাকে চট্টগ্রামে পিঁড়ি বাত বলে। এ ক্ষেত্রে নিমপাতার গুঁড়ো এক ভাগ, কাঁচা হলুদ শুকিয়ে গুঁড়ো করে সেটা দুই ভাগ ও শুকনো আমলকীর গুঁড়ো তিন ভাগ এক সাথে মিশিয়ে এক গ্রাম হারে সেটা সকালে খালি পেটে বেশ কিছু দিন খেতে হয়।


পিপাসা বা তৃষ্ণা : পাঁচ-সাত গ্রাম কাঁচা হলুদ থেঁতলে নিয়ে দেড় কাপ আন্দাজ পানিতে ৫-১০ মিনিট সিদ্ধ করে ছেঁকে নিয়ে ওই পানি চিনিসহ অল্প অল্প করে পান করলে শ্লেষ্মাজনিত পিপাসা চলে যায়।
হাঁপানি : হলুদ গুঁড়ো, আখের গুড় ও খাঁটি সরিষার তেল এক সাথে মিশিয়ে চাটলে হাঁপানি একটু উপশম হয়। এ ছাড়া এক চা-চামচ হলুদের গুঁড়ো এক গ্লাস দুধে মিশিয়ে দিনে দুই-তিনবার খেলে ভালো উপকার মেলে। এটি খালি পেটে খাওয়া ভালো।


কফ, সর্দি ও ঠাণ্ডা লাগা : দুধে হলুদকে সিদ্ধ করে বেটে চিনি মিশিয়ে খেলে সর্দি সারে। পুরনো কফ রোগ, গলা ফোলা ও গলা জ্বালায় আধা চা-চামচ হলুদের গুঁড়ো ৩০ মি.লি. গরম দুধে মিশিয়ে খেলে খুবই উপকার হয়। এতে বড় চামচে দুধ ঢেলে তাতে হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে অল্প আঁচে উৎরিয়ে নিতে হয়।


কাশি : খুব বেশি কাশির ঝোঁক হলে এক কাপ ঈষৎ উষ্ণ পানিতে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে ধীরে ধীরে পান করলে কাশির উপশম হয়।


সর্দিজ্বর : গরম দুধে হলুদ গুঁড়ো ও গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে সর্দিজ্বর কমে।


চোখওঠা : চোখ উঠলে হলুদ থেঁতলে নেয়া পানিতে চোখ ধুলে ও ওই রসে ডুবানো ন্যাকড়ায় চোখ মুছে ফেললে চোখের লাল ভাব কমে যায় ও তাড়াতাড়ি চোখ সেরে যায়। এটি দিনে তিন-চারবার দিতে হয়।
বিষাক্ত ক্ষত : বিষাক্ত ফোঁড়া বা ইংরেজিতে কারবাঙ্কাল ও আর্য়ুবেদিক ভাষায় বল্লিক স্ফোটক বলা হয়, তাতে কাঁচা হলুদ বাটায় গরুর পেশাব মিশিয়ে অল্প গরম করে কয়েক দিন দিনে-রাতে কয়েকবার লাগালে দূষিত পুঁজ পড়া বন্ধ হয়ে যায়।


ফোঁড়া : পোড়া হলুদের ছাই পানিতে গুলে সেটা লাগালে ফোঁড়া পাকে ও ফেটে যায়; আবার গুঁড়ো লাগালে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।


চর্মরোগ : দাদ ও খোস পাঁচড়ায় হলুদের রস চামড়ায় লাগালে তা মধু মিশিয়ে খেলে রোগ সারে। এ ছাড়া হলুদ পিষে তিলের তেল মিশিয়ে গায়ে মাখলে চর্মরোগ সারে।


বাত : হলুদ পোড়া ছাই পানিতে মিশিয়ে (পাঁচ গ্রাম আন্দাজ) রাতে খেলে বাত সারে।


মচকানো ব্যথা : কোনো জায়গায় মচকে গেলে বা আঘাত লাগলে চুন, হলুদ ও নুন মিশিয়ে গরম করে লাগালে ব্যথা ও ফুলা দুই-ই কমে।


প্রমেহ : ক. প্রমেহে প্রস্রাবের জ্বালার সাথে পুঁজের মতো লালা ঝরলে কাঁচা হলুদের রস এক চা-চামচ নিয়ে একটু মধু বা চিনিসহ খেলে রোগের উপশম হয়।
খ. হলুদ পিষে আমলকীর সাথে খেলেও প্রমেহ উপশম হয়।


নাকের ক্ষত : নাকের ভেতর ক্ষত হলে হলুদ গুঁড়ো মহৌষধ হিসেবে কাজ করে।


ডায়াবেটিস : হলুদের গাঠ পিষে, ঘিয়ে ভেজে চিনি মিশিয়ে কিছু দিন খেলে (নিয়মিত) ডায়াবেটিস সারে। প্রমেহও সারে।


পাথুরি : হলুদ ও পুরানো গুড় মিশিয়ে খেলে পাথুরিতে উপকার হয়।


মূর্ছা : হলুদ ও পুরনো গুড় মিশিয়ে খাওয়ালে মূর্ছা রোগ সারে।


রক্তশূন্যতা : হলুদ লোহাসমৃদ্ধ বলে এটির কাঁচা রস এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে প্রতি দিন খেলে রক্তশূন্যতা চলে যায়।


স্বরভঙ্গ : কোনো সাধারণ কারণে স্বরভঙ্গ হলে দুই গ্রাম আন্দাজ হলুদের গুঁড়ো চিনির শরবতে মিশিয়ে একটু গরম করে খেলে চমৎকার উপকার হয়। গরম দুধে এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো দিয়ে রাতে খেলে স্বরভঙ্গ ও গলাবসা ঠিক হয়ে যায়।


জোঁকে ধরা : জোঁকের মুখে হলুদ বাটা বা গুঁড়ো দিলে জোঁকও ছাড়ে, সেই সাথে রক্ত পড়াও বন্ধ হয়।
ভেষজ বস্তুর ব্যবহারে উন্নাসিকতা ছেড়ে যথানিয়মে একাগ্রতার সাথে তা করলে ধনী-গরিব নির্বিশেষে উপকার মেলে, আর প্রচলিত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার হাত থেকে বাঁচা যায়।