Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Nutrition and Food Engineering => Topic started by: saima rhemu on March 07, 2018, 04:25:25 PM

Title: কাঁচা আমের অজানা গুণ
Post by: saima rhemu on March 07, 2018, 04:25:25 PM
গ্রীষ্মের আগেই বসন্তের ছোঁয়ায় আমগাছগুলো ভরে উঠে অসংখ্য মুকুলে। তার কিছুদিন পরই পাতার ফাঁকে ফাঁকে দেখা যাবে ছোট-বড় সবুজ রঙের কাঁচা আম। কাঁচা আমের নাম শুনলেই  মুখে পানি চলে আসে। আর মাথায় আসে মরিচ ও ধনে পাতা দিয়ে তৈরি স্বাদের ঝাল ভর্তা, টক আচার, মিষ্টি আচার, চাটনি ও আমের মোরব্বা। আম কাচা-পাকা দুই-ই দারুণ মজা। শুধু  স্বাদেই  অনন্য এই রাজা মশাই তা কিন্তু নয়। এই রাজার আছে অনেক ঔষধি গুণ তা আমাদের অনেকেরই অজানা। তাই যারা কাঁচা আম খেতে পছন্দ করেন না, তাদের বলছি, আপনি কিন্তু মৌসুমি কাঁচা আমের স্বাদ গ্রহণের পাশাপাশি বঞ্চিত হচ্ছেন এর ঔষধি গুণ থেকেও! তাই জেনে নিন কাঁচা আমের কিছু উপকারি তথ্য ও পথ্য।

কাঁচা আমে যে সকল খাদ্য উপাদান রয়েছে সেগুলো হল-ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, অক্সালিক এসিড, সাইট্রিক এসিড, ম্যালিক এসিড ও সাকসেনিক এসিড। আরও রয়েছে  ক্যারটিন, বিটা-ক্যারটিন, ফাইবার, আয়রন , পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ  উপাদানসমূহ।

রক্ত পরিষ্কারক

কাঁচা আম আমাদের দেহের  রক্ত পরিষ্কার করে। এর ভিটামিন সি-এই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানটি আমাদের শরীরকে ইনফ্লামেশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং রক্ত সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও কমায়। রক্তনালীগুলো ভিটামিন সি এর কারণে ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী ও অনেক বেশি স্থিতিস্থাপক হয়ে ওঠে। ভিটামিন সি নতুন রক্ত কণিকা সৃষ্টিতে সাহায্য করে, আয়রনের শোষণে এবং রক্তপাতের প্রবণতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

চোখ ভালো রাখে

কাঁচা আমের ক্যারটিন ও ভিটামিন  আমাদের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে।

লিভার সুস্থ রাখে

কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা যকৃতের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাহায্য করে। নিয়মিত সীমিত পরিমাণে কাঁচা আম খেলে যকৃতের সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়, কারণ এটি পিত্তরসের নিঃসরণ বৃদ্ধি করে এবং অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধক

কাঁচা আমে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় তা  সিজনাল ও গরমকালে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি এই সকল রোগ এর সমস্যা উপশম করে।

এসিডিটি ও কোষ্ঠকাঠিন্য

এসিডিটি ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ে ভুগতে হয় প্রায় কম বেশি সকলকেই। আর এধরনের বাজে সময়গুলোতে স্বস্তি দিবে কাঁচা আম। এটি ফাইবার সমৃদ্ধ এবং এতে ক্ষারের পরিমাণ বেশি থাকে বলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা সমাধানের জন্য কাঁচা আমের সাথে মধু ও লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন।

গরম কালের পরম বন্ধু

কাঁচা আম গরমের বাজে প্রভাব থেকে আমাদের রেহাই দেয়। ডায়রিয়া, আমাশয়কে আমারা রোগের আওতায় না নিলেও প্রাণ যখন যায় যায় অবস্থা, তখন বলি এ মামুলি রোগ নয় মহাশয়! কিন্তু একটা কাঁচা আম মধু লবণ মিশিয়ে খেলে হয়ত এসব ক্ষেত্রে কম বেগ পেতে হবে। পেটে ব্যাথা হলেও তা করতে পারেন। গরম কালের ভয় বেশি হয় হিট স্ট্রোক নিয়ে।  হিট স্ট্রোক থেকে রেহাই পেতে চিনি দিয়ে কাঁচা আমের জুস করে খেয়ে নিন। এতে শরীরের পানিশূন্যতা কমবে এবং তৃষ্ণা মেটাবে। পাশাপাশি হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি দুর হবে। কাঁচা আমের জুস শরীরের সোডিয়াম ক্লোরাইডের সঠিক মাত্রা ধরে রাখতে সহায়তা করে।

ঘামাচি নিরাময়ে

অবাক হচ্ছেন? অবাক হলেও এ কথা মিথ্যে নয়। ঘামাচির অত্যাচার থেকে বাঁচাবে কাচা আম। কাঁচা আমের সঙ্গে চিনি, জিরা ও একটু লবণ মিশিয়ে সেদ্ধ করে জুস করে খেলে তা ঘামাচি রোধ করতে সাহায্য করে।কাঁচা আমের একটি আশ্চর্য গুণাগুণ এটি।

ত্বক উজ্জ্বল করে

কাঁচা আমে পাকা আমের তুলনায় বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। যার ফলে আমাদের ত্বক উজ্জ্বল হয় নির্জিবতা ঝেড়ে।

হাড় ও দাঁতের ক্ষয় রোধক

ভিটামিন সি শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণে সহায়ক। আমের এই গুরুত্বপূর্ণ  উপাদানটি আমাদের দেহের হাড় ও দাঁতকে মজবুত করে।

সুতরাং কাঁচা আম শুধু আমাদের জিভের স্বাদ মেটাতেই নয়, বরঞ্চ চাই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশের সুস্থতার জন্যও। লিভার সুস্থ রাখার পাশাপাশি কাচা আম মারণ রোগ ক্যান্সার এবং কিডনির সমস্যাও দূর করে। কাঁচা আম খেলে সাইনাসের সমস্যা কমে। কাঁচা আমে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকায় স্ট্রেস ও হার্টের সমস্যা দূরীকরণেও এটি কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।

কাঁচা আম কমবেশি সবাই খায়। হাতে কাঁচা আমের কুঁচি, ভর্তা আর আচার নিয়ে গ্রীষ্মের শুরুটা কিন্তু বেশ হয়। আজ থেকে তাই শুধু স্বাদেই নয়, সুস্বাস্থ্যেও থাকবে কাঁচা আম।