Daffodil International University
Faculty of Science and Information Technology => Science and Information => Topic started by: afrin.ns on March 27, 2018, 10:50:49 AM
-
ক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের একটা ঘরে একটা ছোট্ট ধূসর বাক্স রয়েছে। এই বাক্সেই ঘরের সব থেকে মূল্যবান বস্তু— অধ্যাপক স্টিফেন হকিংয়ের কণ্ঠস্বর। ‘অ্যামিওট্রোপিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস’ (এএলএস)-এ আক্রান্ত অধ্যাপক হকিংকে গত ৩০ বছর ধরে বৈদ্যুতিক স্বরক্ষেপণ প্রযুক্তি ব্যবহার করেই কথা’ বলতে হতো।
১৯৮৫ সালে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হকিংয়ের গলা ফুঁড়ে ট্র্যাকিওস্টোমি করা হয়েছিল, ফলে কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন হকিং। নিজের ধ্যান-ধারণা ও তত্ত্ব প্রকাশ করতে হকিং টাইপ করা শুরু করেন। কিন্তু ক্ষয়িষ্ণু পেশিশক্তির ফলে সেটিও যথেষ্ট কষ্টকর কাজ ছিল। মিনিটে খুব বেশি হলে মাত্র ১৫টি শব্দ টাইপ করতে পারতেন হকিং।
এভাবেই তিন বছরে শেষ হয় ৫০৭৫০ শব্দে ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম। ততদিনে টাইপ করা শব্দ কণ্ঠস্বরে রূপান্তরিত করার প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফের কথা বলতে শুরু করেছেন অধ্যাপক।
কিন্তু রোগকে যে বেধে রাখা যায় না! কয়েক বছরের মধ্যেই বুড়ো আঙুল চালানোর ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন হকিং। মিনিটে একটা শব্দের বেশি বলা সম্ভব হচ্ছিল না। বন্ধ হয়ে যায় টাইপ করা এবং কথা বলাও।
তখন কম্পিউটার নির্মাতা সংস্থা ইন্টেলের সহপ্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুরকে চিঠি লেখেন হকিং। অধ্যাপকের প্রশ্ন ছিল- আজকাল আমার স্পিচ ইনপুটের গতি খুব ধীর হয়ে গেছে। আপনারা কী কোনোভাবে আমাকে সাহায্য করতে পারেন?
মুরের নির্দেশে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজে নামেন ইন্টেলের প্রকৌশলীরা। হকিংয়ের গালের একটা পেশি ও চোখের কুঞ্চন, রেটিনার স্ক্যান এবং মস্তিষ্কের তরঙ্গ— এটুকু সম্বল করেই এক অসম লড়াই শুরু হয়। অধ্যাপকের শরীরে মারণ এএলএসের দ্রুত বংশ বিস্তারের সঙ্গে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির লড়াই। গত কয়েক দশক ধরে কিন্তু রোগকে জিততে দেননি কম্পিউটার প্রকৌশলীরা। অসংখ্য বক্তৃতা দিয়েছেন অধ্যাপক, সারা পৃথিবী শুনেছে তার যান্ত্রিক কণ্ঠস্বর। সেই কণ্ঠস্বরই এখন বাক্সবন্দি।
এই কাঁপাকাঁপা যান্ত্রিক কণ্ঠেই হকিং একবার তার সহকর্মীদের বলেছিলেন- আমার সমাধি প্রস্তরে যেন শুধু ওই সমীকরণটি লেখা থাকে। কোন সমীকরণ? যার সাহায্যে হকিং দেখিয়েছিলেন যে, ব্ল্যাকহোল থেকেও তেজস্ক্রিয় রশ্মির বিকিরণ হয়। আর এই শেষ ইচ্ছে পালন করতেই ফাঁপড়ে পড়ে গিয়েছেন ক্যামব্রিজের পাথর খোদাইকারেরা। কারণ তারা তো জানেনই না, কী করে লিখতে হয় ‘পাই’!