Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Public Health => Topic started by: saima rhemu on April 01, 2018, 04:46:29 PM

Title: মেয়েদের রক্ত স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া এর লক্ষণ ও প্রতিকার
Post by: saima rhemu on April 01, 2018, 04:46:29 PM
রক্তস্বল্পতা বা লৌহস্বল্পতা বর্তমান সময়ে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মেয়েদের একটি প্রধান সমস্যা। এর ফলে শরীরে অক্সিজেন ঘাটতি হয়, যা একজন নারীকে অসুস্থ ও দূর্বল করে তোলে। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাবে পরবর্তীতে সন্তান ধারণেও জটিলতা দেখা দেয়।

বাংলাদেশে শতকরা প্রায় ৪২ ভাগ মেয়ে বা মহিলা আয়রন বা রক্তে লৌহ-স্বল্পতায় ভুগছেন। অর্থাৎ প্রতি ১০ জন মেয়ের মধ্যে ৪ জন আনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতার শিকার।

৪ জন আনিমিয়ায় আক্রান্ত মেয়ের মধ্যে আপনিও আছেন কিনা, তা নিশ্চই জানতে ইচ্ছে হয়। তাহলে জেনে নিন রক্তস্বল্পতার উপসর্গগুলো। বিস্তারিত জানাচ্ছেন জনস্বাস্থ্য পুষ্টিবিদ আসফিয়া আজিম।

১. ক্লান্তিবোধ বা নিস্তেজ বোধ করা

হিমোগ্লোবিন রক্তের একটি অন্যতম প্রধান উপাদান। এই হিমোগ্লোবিনের কাজ হল শরীরের অক্সিজেন সরবরাহকে নিশ্চিত করা। শরীরে আয়রনের কমতি হলে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়। আর হিমোগ্লোবিন কম হওয়া মানেই হল শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহে ব্যঘাত ঘটা।

যখন প্রয়োজনের তুলনায় কম অক্সিজেন পায় তখন শরীর নিস্তেজ বোধ করে। কোনো কিছুতেই উৎসাহ আসে না। তাই যদি দেখেন যে কিছুদিন ধরেই আপনার মধ্যে ক্লান্তিবোধের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, খুব বেশি দুর্বল লাগছে, তবে রক্তের হিমোগ্লোবিন পরিমাপ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্ত পরীক্ষা করান।

২. মনোযোগের অভাব

কোনো কাজে কি ঠিক মতো মনোযোগ দিতে পারছেন না? ক্লাসের লেকচার বা মিটিং থেকে বার বার মন সরে যাচ্ছে?

শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে নিউরোট্রান্সমিটার সিন্থেসিস- এর পরিবর্তন ঘটে যার ফলে মনোযোগের অভাব দেখা দেয়।

৩. আলসেমি

বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে বা পরিবারের সঙ্গে ছুটির দিনে রেস্তোরাঁয় খেতে সবারই ভালোলাগে আশা করি। হয়তো কেনাকাটা করতে ভালোবাসতেন! কিংবা বই পড়তে বা মুভি দেখে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। হঠাতই খেয়াল করলেন এসব কিছুই করতে আর ভালো লাগছে না। জীবন এক আলসেমিতে পেয়ে বসেছে।

দিনের পর দিন আলেসেমি কাটাতে যদি না পারেন তবে, রক্তের হিমোগ্লোবিন মাপতে ভুল করবেন না যেন।

৪. হাপিয়ে যাওয়া

এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যেতেই হাপিয়ে উঠছেন? বা সিড়ি ভেঙে দোতলায় উঠতেই আর চলছে না শরীর।

যখন আয়রনের অভাব হয় রক্তে তখন প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ না হওয়ার কারণেই শরীর হাপিয়ে ওঠে।

৫. মলিন ত্বক

চেহারায় জৌলুস কমে যাচ্ছে দিন দিন। ত্বক আর আগের মতো জেল্লা দিচ্ছে না। শুষ্ক মলিন ত্বকের প্রধান কারণ একটিই, তা হল শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার অভাব।
শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ কম হলে চামড়ার উজ্জ্বলতা নষ্ট হয় খুব তাড়াতাড়ি।

৬. মাংসপেশির জড়তা

আয়রনের অভাব হলে মাংসপেশির স্বাভাবিক সংকোচন প্রসারণের ক্ষমতা বাধা প্রাপ্ত হয়। ফলে সামান্য ব্যায়াম বা হঠাৎ অতিরিক্ত পরিশ্রমে মাংসপেশিতে টান পড়ে। আর পেশিতে ব্যথা লাগে।

৭. ভঙ্গুর নখ

শরীরে আয়রনের অভাব আছে কিনা, তা নখ খেয়াল করলেও বোঝা যায়। রক্তস্বল্পতার কারণে পাতলা ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে নখ। অনেকের নখ চামচের মতো বেঁকে যেতে থাকে। এটাও আয়রনের অভাবের একটা সাধারণ লক্ষণ।

৮. অসুস্থতা

প্রায়শই অসুস্থ হয়ে পড়াটাও রক্তস্বল্পতার আরও একটি কারণ। ছোটখাটো সর্দি-কাশি থেকে শ্বাসতন্ত্রের অসুখ— এ সবের অন্যতম প্রধান কারণ আয়রনের ঘাটতি।

এখানে বলে রাখা ভালো— এই উপসর্গগুলো যদি কোনো ছেলের ক্ষেত্রেও মিলে যায় তবে বুঝে নিতে হবে তারও রয়েছে আয়রনের অভাব।

প্রতিকার

* শরীরে আয়রনের ঘাটতি যদি খুব মারাত্মক আকার ধারণ করে তবে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। রক্তস্বল্পতার তীব্রতা অনুযায়ী চিকিৎসা ভিন্ন।

* যদি মৃদু রক্তস্বল্পতা হয় তবে সুষম, আয়রন সমৃদ্ধ ও ভিটামিন সি’জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

* তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু খাবার ও পথ্য দিয়ে রক্তস্বল্পতার চিকিৎসা সম্পূর্ণ হয় না। পথ্যের পাশাপাশি আয়রন, ফলিক এসিড ট্যাবলেট দিয়ে থাকেন চিকিৎসক।

* ক্ষেত্র বিশেষে তীব্র রক্তস্বল্পতায় রোগীকে রক্ত দেওয়া হয়ে থাকে।

* তাই অন্য সব অসুখের মতোই রক্তস্বল্পতার ক্ষেত্রেও প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধই ভালো।

* ডিমের কুসুমও আনিমিয়া রোধে কার্যকর।

প্রতিরোধ

* আয়রনের ঘাটতি পূরণে প্রাণীজ প্রোটিনের ভূমিকা অসাধারণ। ‘রেডমিট’ আয়রনের সবচেয়ে ভালো উৎস। পাশাপাশি কলিজা, ডিমের কুসুমও আনিমিয়া রোধে সমান কার্যকর।

* এছাড়া উদ্ভিদ-জাতীয় খাবারের মধ্যে কচুশাক, কাঁচকলা থেকেও আয়রন পাওয়া যায়।

* উদ্ভিজ্জ খাবারের মধ্যে লৌহের প্রধান উৎস তরমুজ।

* ফুলকপির ডাটাতেও আয়রন আছে প্রচুর। তবে উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে আয়রন পেতে হলে শাক বা কপির সঙ্গে ভিটামিন সি’জাতীয় খাবারও খেতে হবে।

*পুষ্টিবিজ্ঞানিরা বলে থাকেন, খাবারের আয়রনকে পুরোপুরি ব্যবহার করার জন্য ভিটামিন সি’জাতীয় খাবার যেমন- পেয়ারা, আমলকি, বাতাবিলেবু, কমলা ইত্যাদি খেতে হবে। কারণ ভিটামিন সি’ জাতীয় খাবার উদ্ভিজ্জ উৎসের আয়রনকে খুব ভালোভাবে শরীরে শোষণ করতে সাহায্য করে।
Title: Re: মেয়েদের রক্ত স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া এর লক্ষণ ও প্রতিকার
Post by: imran986 on April 03, 2018, 09:35:45 AM
Nice to Know..
Title: Re: মেয়েদের রক্ত স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া এর লক্ষণ ও প্রতিকার
Post by: saima rhemu on April 03, 2018, 09:52:55 AM
 :)