Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Allah: My belief => Topic started by: rumman on April 21, 2018, 01:13:25 PM

Title: The key to success and failure of human beings
Post by: rumman on April 21, 2018, 01:13:25 PM

    মানুষের ছোট্ট দেহের ভেতরে কী কী রয়েছে, কোন কোন বৈশিষ্ট্য রয়েছে; সেগুলো সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন। অথচ নিজেকে জানার মধ্য দিয়ে সেসব বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অবহিত হবার সুযোগ রয়েছে।

    এভাবে নিজেকে দেখার মধ্য দিয়ে মানুষে নিজের সম্পর্কে যথাযথ মূল্যায়ন করতে সক্ষম হয়। নিজেকে চেনার, জানার ও দেখার মধ্যে রয়েছে মানুষ যে আদর্শের কথা চিন্তা করে; সে আদর্শ অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তোলার যথার্থ উপাদান।

    মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের আচার-ব্যবহার, অনুভূতি ও দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি নির্ভর করে ব্যক্তিগত বোধ- বিশ্বাসের ওপর। মানুষের সব ব্যর্থতা ও সাফল্যের নেপথ্যের চালিকাশক্তি এগুলো।

    বস্তুত নিজেকে চেনার উপায় অর্জনের ওপর নির্ভর করে অনেককিছু। তাই তো সামগ্রিকভাবে বলা যায়, নিজেকে চেনার পথগুলো অর্জনের মধ্যে রয়েছে গঠনমূলক ও সুন্দর আচরণ, দায়িত্বশীলতা এবং আত্মসম্মানের বীজ।

    দুনিয়াতে যুগে যুগে আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসূলগণ (আলাইহিস সালাম) সমকালীন যুগে মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন নিজেকে চেনার দিকে। নিজেকে চেনা, আল্লাহকে চেনার সূচনা এবং পৃথিবীর সব জ্ঞানের উর্ধ্বে বলে মনে করতেন তারা।

    তাইতো ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, যে নিজেকে জানলো সে তার খোদাকে জানতে পারবে। আর নিজেকে চিনে আল্লাহকে চেনার মধ্যে রয়েছে মানুষে প্রভূত সাফল্য ও পরম শিক্ষা।

    এর ব্যাখ্যায় আলেমরা বলেছেন, এই নফস মানে আমিত্ব, ব্যক্তিত্ব ও আত্মা এমন এক মানুষ- যে সব মেধা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের যাবতীয় কর্মকাণ্ড ও শিক্ষাকে আত্মীকৃত করে অর্থাৎ অর্জন করে। সুতরাং এই নফসকে যদি চেনা না যায় তাহলে না জ্ঞান-বিজ্ঞানের পরিচয় ও শিক্ষা আমরা উপলব্ধি করতে পারবো, না পারবো সেসব জ্ঞানের ভালো-মন্দ দিক কিংবা ক্ষতি ও উপকারের দিকগুলো মূল্যায়ন করতে।

    নিজেকে চেনার বিষয়টি কোরআন ও হাদিসে বলা হয়েছে। মানুষের নিজের ভেতরে যে বিশাল মেধা, প্রতিভা ও সামর্থ্য লুকায়িত রয়েছে; সেগুলোকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাগিয়ে তোলাকে বোঝানো হয়েছে। পৃথিবী ও পরকালীন জীবনের জীবন বাস্তবতা সম্পর্কে জাগৃতি ও সচেতনতার ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে বহু আয়াত আছে। কোরআনে কারিমে বুদ্ধিমত্তাকে চেনার সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে বলে উল্লেখ করে মানুষের বোধ এবং যুক্তিকে বুদ্ধির উপকরণ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। কোরআন মানুষকে আহ্বান জানিয়েছে নিজেকে নিয়েএবং এই বিশ্ব চরাচর নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার মধ্য দিয়ে সৌভাগ্য ও সাফল্যের পথ খুঁজে নিতে।

কোরআন একইভাবে গভীর চিন্তা-ভাবনাকে ইবাদত বলে উল্লেখ করেছে। চিন্তার জন্য চিন্তাশীলদের আহ্বান জানিয়েছে কোরআন বলেছে, বুদ্ধিমত্তা ও যুক্তির সাহায্যে চিন্তা-ভাবনা ব্যতীত কোনো নীতি সঠিক নয়।

এ থেকে অনুমিত হয় যে, মানুষের চিন্তা-চেতনাগত ভ্রান্তি ও অবক্ষয়ের পেছনে রয়েছে নিজেকে না চেনা এবং এই বিশ্ব প্রকৃতি সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকা। এই দুয়ের জ্ঞানহীনতাই মূলত সব ধরনের ভুলভ্রান্তি ও গোমরাহির মূল উৎস। ভুল স্বীকার করে সেগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার ফলে সমালোচনা গ্রহণ করার মন-মানসিকতা বৃদ্ধি পায়। সেইসঙ্গে নিজের ব্যক্তিসত্ত্বা ও ব্যক্তিত্ব আরও বেশি শক্তিশালী হয়।

সমালোচনা গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে ব্যক্তিত্ব ও আত্মমর্যাদা বাড়ে। সুতরাং মানুষ যদি চায় সুস্থ জীবনযাপনের পথে পা বাড়িয়ে সৌভাগ্য, কল্যাণ ও সাফল্যের পথে অগ্রসর হতে তাহলে তাদের উচিত আত্মসচেতন হওয়া অর্থাৎ নিজেকে চেনা।

কোরআনের দৃষ্টিতে আত্মসচেতনতা সরাসরি মানুষের বোধ, জ্ঞান, প্রজ্ঞা, বুদ্ধি, বিবেক এবং মেধার সঙ্গে সম্পৃক্ত। নিজের সম্পর্কে মানুষ যত বেশি জানবে, মানুষের চিন্তার গভীরতা তত বাড়বে। আর এটাই জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা ও সাফল্য।

এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা কোরআনের সূরা মায়েদার ১০৫ নম্বর আয়াতে বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! নিজেদের কথা চিন্তা করো! যদি তোমরা সত্য সঠিক পথ বা হেদায়েতের পথে থেকে থাকো। যারা গোমরাহিতে নিমজ্জিত রয়েছে তারা তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’

Source:  মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম