Daffodil International University

Faculties and Departments => Faculty Sections => Faculty Forum => Topic started by: khadija kochi on June 23, 2018, 02:00:07 PM

Title: দোয়া কবুলের মাস রমজান
Post by: khadija kochi on June 23, 2018, 02:00:07 PM

দোয়া কবুলের মাস রমজান

দোয়া হচ্ছে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে বান্দার কথোপকথনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। তাই আল্লাহর দরবারে যেকোনো সময় দোয়া করা যায়। আল্লাহর আরেক নাম গাফ্ফার—অর্থ পরম ক্ষমাশীল, আরেক নাম আল ওয়াহাব, যার অর্থ সবকিছু দানকারী। আল্লাহ ওই মুহূর্তটিকে বেশি পছন্দ করেন, যখন বান্দা চরম বিপদ-আপদে ধৈর্যধারণ ও সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে কায়মনোবাক্যে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেন, তাঁর কাছে মাগফিরাত ও নাজাত কামনা করেন। মাহে রমজান দোয়া কবুলের সময়। আল্লাহ রোজাদারদের গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে নতুন জীবন লাভ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তাই নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের নিদ্রা ইবাদততুল্য, চুপ থাকা তাসবিহ-তাহলিলতুল্য, আমল ইবাদত সওয়াব হাসিলে বেশি অগ্রগণ্য, দোয়া কবুলযোগ্য ও তার গুনাহ ক্ষমার যোগ্য।’ (বায়হাকি)। আল্লাহর কাছে দোয়া করলেই তা কবুল হয়। যা চাওয়া হয় তাই দেওয়া হয়। কারও কারও মনে এই প্রশ্ন আসে যে, কেন তাঁর দোয়া কবুল হচ্ছে না। এর উত্তর হচ্ছে, অনেক দোয়া পরকালের জন্য জমা রাখা হয় অথবা দোয়ায় যা চাইছেন তা আপনার জন্য কল্যাণকর নয়, তাই দেওয়া হয় না।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এমন দুটি বাক্য আছে, যা উচ্চারণ করতে খুবই সহজ, কিন্তু কিয়ামতের দিন আমলনামা ওজনের পাল্লায় খুব ভারী এবং আল্লাহর কাছে খুবই পছন্দনীয়। তা হলো, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম।’ (বুখারি ও মুসলিম)। আয়াতুল কুরসি, ইসমে আজম বা আল্লাহর ৯৯টি নামের অর্থসহ আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ শরিফসহ দোয়া করলে তা কবুল হয়। আল্লাহর প্রশংসা যেমন, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন’ দোয়ার শুরুতে বলা। ‘ওয়া ইলাহুকুম ইলাহু ওয়াহিদুন লা ইলাহা ইল্লা হুয়ার রাহমানুর রাহিম’ (সুরা বাকারা ১৬৩)। ‘আলিফ লাম মীম। আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম’ (সুরা আল ইমরান ১)।

নবী করিম (সা.) রমজান মাসে দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা সম্পর্কে বলেছেন, ‘এই মাসে তোমরা চারটি কাজ অধিক পরিমাণে করো, ১. বেশি বেশি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”-এর জিকির করা; ২. আল্লাহর কাছে মাগফিরাত তথা ক্ষমা প্রার্থনা করা। ৩. জান্নাত চাওয়া, ৪. জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া।’ রোজা অবস্থায় দোয়া কবুল হয়। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। তাঁদের একজন হলেন রোজাদার ব্যক্তি। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ইফতারের আগ পর্যন্ত তাঁর দোয়া কবুল হয়। আরেক বর্ণনায় এসেছে ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। রোজাদার ব্যক্তির উচিত সময়-সুযোগমতো আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকা।

সাধারণত দোয়ার নিয়ম হলো- একাকী দোয়া করা। অজু না থাকলেও দোয়া করা যায়। এমনকি হাত না তুলে মনে মনে কিংবা মুখে বান্দা নিজের সব কামনা-বাসনার কথা আল্লাহর কাছে বলতে পারেন। হজরত আদম (আ.) থেকে এ পর্যন্ত যত নর-নারী পৃথিবীতে এসেছেন এবং কবরে শায়িত আছেন, তাঁদের সবার জন্য দোয়া করতে হবে।

 রাতের শেষ তৃতীয়াংশে অজু করে পবিত্র হয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়ে ও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে সুবাহানাল্লা (আল্লাহ পবিত্র) আলহামদুলিল্লাহ (সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য) আল্লাহু আকবার (আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ) ইয়া ওয়াহহাব (আল্লাহ সবকিছু দানকারী) আসতাগফিরুল্লাহ (আমি আমার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি) দোয়া ইউনুছ তথা লা ইলাহি ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুন-তু মিনাজ জোয়ালেমিন (আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, আল্লাহ পবিত্র মহান, আমি তো সীমা লঙ্ঘনকারী) এবং রাসুল (সা.)–এর ওপর দরুদ শরিফ পড়ে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।

হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ মহান সবচেয়ে কাছের আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকছ? আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার কাছে চাইছ? আমি তাকে তা দেব। কে আছ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব (মুসলিম)।

ইহকাল ও পরকালের সফলতার জন্য কীভাবে দোয়া করতে হবে, এই মর্মে আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে শিক্ষা দিয়েছেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাদের ইহকালে কল্যাণ দাও এবং পরকালেও কল্যাণ দাও এবং আমাদের আগুনের আজাব থেকে রক্ষা করো (সুরা বাকারা ২০১)

প্রতিদিন ইফতারের আগে ও পরে, সাহ্‌রির আগে ও পরে, তাহাজ্জুদ নামাজের শেষে আল্লাহর কাছে প্রাণভরে দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তা কবুল করেন। বেশি করে দোয়া, ক্ষমা প্রার্থনা, তওবা, ইস্তিগফার, দরুদ শরিফ, তাসবিহ, তাহলিল প্রভৃতি জিকির করা যায়।