Daffodil International University

Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: nusratjahan on July 05, 2018, 09:55:59 AM

Title: ডেঙ্গু জ্বর হচ্ছে এখন
Post by: nusratjahan on July 05, 2018, 09:55:59 AM
খন জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। এই জ্বর সাধারণ ভাইরাসের কারণে নাকি ডেঙ্গু! আবার চিকুনগুনিয়া নয়তো? মে থেকে সেপ্টেম্বর—বিশেষ করে গরম ও বর্ষার সময় ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। সাধারণ ভাইরাসজনিত জ্বর মশার মাধ্যমে ছড়ায় না। কিন্তু ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া জ্বরের জীবাণু বহন করে মশা এবং তা একই প্রজাতির। দুটোই এডিস মশার কারণে হয়। এই দুটি রোগের লক্ষণে নানা মিল যেমন রয়েছে, তেমনি ভিন্নতাও আছে।
ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশা কাউকে কামড়ালে তিনি চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। এবার আক্রান্তকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেই মশাটি ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে।
এ বিষয়ে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই জ্বর এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে এটি শরীরে জটিলতা সৃষ্টি করে। তবে জ্বরে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে কয়েক দিনেই ডেঙ্গু পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়।’

লক্ষণ
ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত তীব্র জ্বর এবং সেই সঙ্গে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। জ্বর ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত ওঠে। শরীরে বিশেষ করে হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা হয়। মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা হয়। জ্বর হওয়ার চার বা পাঁচ দিনের সময় সারা শরীরে লালচে দানা দেখা যায়। এর সঙ্গে বমি বমি ভাব এমনকি বমি হতে পারে।
রোগী অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ করেন এবং তাঁর রুচি কমে যায়। এই অবস্থা যেকোনো সময় জটিল হয়ে উঠতে পারে। যেমন অন্য সমস্যার পাশাপাশি যদি শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত পড়া শুরু হয়। যেমন: চামড়ার নিচে, নাক ও মুখ দিয়ে, মাড়ি ও দাঁত থেকে, কফের সঙ্গে, রক্তবমি, পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত বা কালো পায়খানা, চোখের মধ্যে ও চোখের বাইরে রক্ত পড়তে পারে।
মেয়েদের বেলায় অসময়ে ঋতুস্রাব বা রক্তক্ষরণ শুরু হলে অনেক দিন পর্যন্ত রক্ত পড়তে থাকা ইত্যাদি হতে পারে। এই রোগের বেলায় অনেক সময় বুকে পানি, পেটে পানি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অনেক সময় লিভার আক্রান্ত হয়ে রোগীর জন্ডিস, কিডনি আক্রান্ত হয়ে রেনাল ফেইলিউর ইত্যাদি জটিলতা দেখা দিতে পারে।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন
ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তবে এই জ্বর সাধারণত নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। তাই উপসর্গ অনুযায়ী সাধারণ চিকিৎসা যথেষ্ট। তবে কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো—
* শরীরের যেকোনো অংশে রক্তপাত হলে
* প্লাটিলেটের মাত্রা কমে গেলে
* শ্বাসকষ্ট হলে, পেট ফুলে পানি এলে
* প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে
* জন্ডিস দেখা দিলে
* অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা দেখা দিলে
* প্রচণ্ড পেটে ব্যথা বা বমি হলে।
চিকিৎসা
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী সাধারণত ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চলতে হবে। যাতে ডেঙ্গুজনিত কোনো মারাত্মক জটিলতা না হয়। ডেঙ্গু জ্বরটা আসলে গোলমেলে রোগ, সাধারণত লক্ষণ বুঝেই চিকিৎসা দেওয়া হয়।
* সম্পূর্ণ ভালো না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রামে থাকতে হবে।
* যথেষ্ট পরিমাণে পানি, শরবত, ডাবের পানি ও অন্যান্য তরল-জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।
* খেতে না পারলে দরকার হলে শিরাপথে স্যালাইন দেওয়া যেতে পারে।
* জ্বর কমানোর জন্য শুধু প্যারাসিটামল-জাতীয় ব্যথার ওষুধই যথেষ্ট। এসপিরিন বা ডাইক্লোফেনাক-জাতীয় ব্যথার ওষুধ কোনোক্রমেই খাওয়া যাবে না। এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়বে।
* জ্বর কমানোর জন্য ভেজা কাপড় দিয়ে গা মোছাতে হবে।

ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও সাধারণ ভাইরাল জ্বরের পার্থক্য
* ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া জ্বরে সাধারণত ঠান্ডা-কাশি হয় না; নাক দিয়ে পানি ঝরে না। তবে সাধারণ ভাইরাসের কারণে হওয়া জ্বরে এগুলো হয়।
* সাধারণ ভাইরাল জ্বরে তাপমাত্রা বেশি ওঠে না, শরীরে ব্যথা তুলনামূলক কম থাকে।
* ডেঙ্গু জ্বরে শরীরে কাঁপুনি, ঘাম ও তীব্র অবস্থায় রক্তক্ষরণ হয়। তবে চিকুনগুনিয়া জ্বরে সাধারণত এগুলো হয় না।
* হাতের আঙুলের জোড়ায়, পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হলে চিকুনগুনিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি। আর মাংসপেশিতে ব্যথা হলে ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
* চিকুনগুনিয়ায় হাত-পা ও মুখমণ্ডলে র‍্যাশ হয়। তবে ডেঙ্গু হলে পুরো শরীরে র‍্যাশ হয়।
* ডেঙ্গু জ্বরে রক্তের অণুচক্রিকার সংখ্যা অনেক কমে যায়। তবে চিকুনগুনিয়ায় রক্তের অণুচক্রিকার সংখ্যা ততটা কমে না।
* চিকুনগুনিয়া জ্বরের অস্থিসন্ধির ব্যথা জ্বর কমে যাওয়ার পরও কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরে অস্থিসন্ধির ব্যথা জ্বর কমে যাওয়ার পর কমে যায়। চিকুনগুনিয়া জ্বর ভালো হলেও রোগটি অনেক দিন ধরে রোগীদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্য কোনো ভাইরাল জ্বরে এতটা ভোগান্তি হয় না।
* একই মশা দিয়ে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু জ্বর হলেও ডেঙ্গুতে ঝুঁকি হয়। চিকুনগুনিয়া হলে কারও মৃত্যু হয় না। আর একই ব্যক্তির শরীরে ডেঙ্গু জ্বর চারবার পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু চিকুনগুনিয়া একবার হলে সাধারণত আর হয় না।

প্রতিরোধ
* যেহেতু এটি একটি মশাবাহিত রোগ সেহেতু মশার বংশবৃদ্ধি রোধ, নিধন ও প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
* ঘর-বাড়ি ও এর চারপাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ক্যান, টিনের কৌটা, মাটির পাত্র, বোতল, নারকেলের মালা ও এ-জাতীয় পানি ধারণ করতে পারে এমন পাত্র ধ্বংস করে ফেলতে হবে, যেন পানি জমতে না পারে। গোসলখানায় বালতি, ড্রাম, প্লাস্টিক ও সিমেন্টের ট্যাংক কিংবা মাটির গর্তে চার-পাঁচ দিনের বেশি কোনো অবস্থাতেই পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। পরিষ্কার ও স্থবির পানিতে ডেঙ্গুর জীবাণু বেশি জন্মায়।
* ঘরের আঙিনা, ফুলের টব, বারান্দা, বাথরুম, ফ্রিজের নিচে ও এসি এর নিচে জমানো পানি নিয়মিত পরিষ্কার করা যাতে বংশবৃদ্ধি করতে না পারে।
* মশা মারার ওষুধ দিয়ে মশা নিধন করা। দিনের বেলায় এডিস মশা কামড়ায় বলে দিনের বেলাতেও মশারির নিচে ঘুমান। বাচ্চাদের হাফপ্যান্টের বদলে ফুল প্যান্ট পরানো। আক্রান্ত রোগীকে পৃথক বিছানায় মশারির ভেতর রাখতে হবে। ঘরের দরজা, জানালায় ও ভেন্টিলেটরে মশানিরোধক জাল ব্যবহার করুন।
Title: Re: ডেঙ্গু জ্বর হচ্ছে এখন
Post by: Nusrat Jahan Bristy on July 05, 2018, 09:57:58 AM
Good to know...
Title: Re: ডেঙ্গু জ্বর হচ্ছে এখন
Post by: Hasna Hena on July 05, 2018, 10:58:59 PM
Thanks for sharing. We need to be careful about this.
Title: Re: ডেঙ্গু জ্বর হচ্ছে এখন
Post by: sheikhabujar on July 06, 2018, 07:24:33 PM
very useful post.
Title: Re: ডেঙ্গু জ্বর হচ্ছে এখন
Post by: sisyphus on July 07, 2018, 01:22:34 PM
এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরী
Title: Re: ডেঙ্গু জ্বর হচ্ছে এখন
Post by: Mousumi Rahaman on July 07, 2018, 03:48:20 PM
Nice Post.. :)