Daffodil International University
Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: Nusrat Jahan Bristy on July 15, 2018, 10:08:34 AM
-
এই গরম, আর্দ্রতা ও ভাপসা আবহাওয়ায় ত্বক বা ত্বকের খোসপাঁচড়া, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, প্যারনাইকিয়া, স্ক্যাবিজ জাতীয় নানা ধরনের ত্বকের অসুখ হয়ে থাকে ৷ ভিজে শরীর ভালোভাবে না মুছলে, ভিজে কাপড় ভালোভাবে না শুকিয়ে গায়ে দিলে, রোদ না থাকায় স্যাঁতসেঁতে ঘর—ইত্যাদি কারণে বর্ষাকালে ত্বকের বেশ কিছু অসুখ হয় ৷
এই সময়ে যে কটি চর্মরোগ সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তার মধ্যে ঘামাচির পরই ছত্রাকজনিত চর্মরোগ অন্যতম। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাসুদা খাতুন বলেন, বর্ষাকালে লাগাতার বৃষ্টির কারণে প্রায়ই রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে থাকে। রাস্তার এসব ময়লা পানি শিশুর ত্বকে লাগলে মারাত্মক সংক্রমণ হতে পারে। ত্বক ভেজা থাকলে সহজেই ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে। বৃষ্টির পানি লাগলে দ্রুত তা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে ও শরীর ভালোভাবে মুছে দিতে হবে। আর যারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে ততটা সচেতন নয়, তাদেরই এই রোগগুলো বেশি হতে দেখা যায়।
ছত্রাকের আক্রমণ
রোগটির চিকিৎসা দেওয়া হলে খুব সহজেই ভালো হয়ে যায়। হতাশার দিক হচ্ছে যে কিছুদিন যেতে না-যেতেই পুনরায় দেখা দেয়। আবার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একটু ভালো হওয়ামাত্রই রোগী ওষুধটি বন্ধ করে দেয়। আবার যারা ঠিকমতো ওষুধ ব্যবহার করে, তারাও কিন্তু ঠিকমতো ব্যবহার্য কাপড়-চোপড় পরিষ্কার করে বা রাখে না ফলে খুব সহজেই কাপড়-চোপড় থেকে পুনরায় ছত্রাক দেহে প্রবেশ করে এবং সে কারণেই এ রোগটি কিছুদিনের মধ্যে পুনরায় দেখা দিতে পারে।
কী কী ধরনের ছত্রাক রোগ এই সময়ে হতে পারে?
মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন: ১. দাদ ২. ছুলি ও ৩. ক্যানডিডিয়াসিস।
এই তিন ধরনের ছত্রাক প্রজাতির সবই মূলত ত্বকের বাইরের অংশকে আক্রমণ করে এবং সেই আক্রমণ স্যাঁতসেঁতে, নোংরা, ঘর্মাক্ত দেহে সবচেয়ে বেশি হতে দেখা যায়।
দাদ শরীরের যেকোনো স্থানে দেখা দিতে পারে। তবে দেখা গেছে সাধারণত তলপেট, পেট, কোমর, পাছা, পিঠ, মাথা, কুচকি ইত্যাদি স্থানে বেশি আক্রান্ত হয়।
টিনিয়া ভারছিকলার বা ছুলিও একটি ছত্রাকজনিত রোগ। গরমকালে এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়, শীতকালে আবার এমনিতেই যেন মিলিয়ে যায়। আবার গরম এলে ঘাড়ের চামড়া ভিজে থাকে। সেখানেই সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। যা দেখতে হালকা বাদামি, সাদা গোলাকৃতি মতো দেখা যায়। বুকে, গলার দুপাশে ঘাড়ের পেছনে, পিঠে, বগলের নিচে, এমনকি সারা শরীরে হতে পারে। এতে ত্বক দেখতে সাদা হয়। তাই অনেকেই আবার একে শ্বেতী ভাবতেও শুরু করেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শ্বেতীর সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
ক্যানডিডিয়াসিসও একটি ছত্রাকজনিত চর্মরোগ। যাদের শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যেমন শিশু-বৃদ্ধ কিংবা রোগাক্রান্ত, ডায়াবেটিস আক্রান্ত, দীর্ঘদিন ধরে যারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেছে কিংবা যাদের ত্বকের ভাঁজ পানিতে অথবা ঘামে সব সময় ভেজা থাকে তাদেরই এই রোগটি বেশি হয় যারা সব সময় পানি নড়াচড়া করে, তাদের আঙুলের ফাঁকে, হাতের ভাঁজে, শিশুদের জিহ্বা, মহিলাদের যোনিপথে এবং গর্ভবতী নারীরা এতে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এতে ত্বকের আক্রান্ত স্থান একটু লালচে ধরনের দেখা যায় এবং সঙ্গে প্রচর চুলকানি হয়ে থাকে।
ছত্রাক থেকে দূরে থাকা যায় কীভাবে?
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছত্রাক সংক্রমণ প্রায় ১০০ ভাগ নিরাময় করা সম্ভব। তবে সেটা আবারও হতে পারে। কারণ, ত্বকে ফাঙ্গাস বেড়ে ওঠার পরিবেশ সৃষ্টি হলে সেখানে ফাঙ্গাস বেড়ে উঠতে চেষ্টা করবে। তাই ফাঙ্গাস প্রতিরোধে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে সেগুলো হচ্ছে পা, আঙুলের ফাঁক, নখের গোড়া ভালো করে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। আর ত্বক পরিষ্কার বা ধোয়ার পর শুষ্ক টাওয়েল দিয়ে ভেজা স্থান মুছে শুষ্ক করে ফেলতে হবে। বিশেষ করে আঙুলের ফাঁক, ঊরুসন্ধির ভাঁজ, বগল, ঘাড়, মাথার চুল ইত্যাদি পুরোপুরি শুকনো না করলে সেখানে ফাঙ্গাস বেড়ে উঠতে পারে।
ত্বকের ছোঁয়াচে রোগ
স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া ত্বকের একটি ছোঁয়াচে রোগ। যে কেউ যেকোনো সময় এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে বর্ষাকালে এর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। একজন আক্রান্ত হলে পুরো পরিবার এমনকি ঘনবসতিপূর্ণ ঘরে একত্রে বসবাস করে যেমন স্কুল, হোস্টেল, বস্তি এলাকায় তাদের মধ্যে যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। চুলকানি হলো প্রধান উপসর্গ আর রাতে সেই চুলকানি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এমনকি ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে ঘা হতে পারে।
কীভাবে ছড়ায়?
অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন, এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে একসঙ্গে বিছানায় শুলে কিংবা ব্যবহারকৃত কাপড় অন্য কেউ ব্যবহার করলে খুব সহজেই এ রোগ ছড়াতে পারে। কারণ জীবাণুটি ব্যবহৃত কাপড়ের মধ্য দুই দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। শিশু-কিশোরেরাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
অন্য রোগগুলোও কম-বেশি হয়ে থাকে। তবে কিছু সাধারণ নিয়মকানুন যেমন: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিয়মিত গোসল ইত্যাদি মেনে চললে এসব রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।
এই সময়ের সচেতনতা
* এ সময় ভারী জামা-কাপড় না পরে হালকা রঙের সুতি পাতলা জামা পরুন। ঘামে ভিজে গেলে দ্রুত পাল্টে নিন। ভেজা কাপড় পরে থাকলে ছত্রাক সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি।
* প্রয়োজনে দিনে দুবার গোসল করুন। জীবাণুনাশক সাবান ব্যবহার করতে পারেন। ঘামে বা বৃষ্টিতে ভিজলে ত্বক ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
* এই সময় সারা দিন জুতা-মোজা না পরে বরং খোলা স্যান্ডেল পরা ভালো। তবে খালি পায়ে হাঁটবেন না। রাস্তায় এখন যত্রতত্র নোংরা পানি জমে আছে। পায়ের ত্বককে এই নোংরা পানি থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। কেননা, এই পানিতে রয়েছে হাজার রকমের জীবাণু।
* ভেজা চুল ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে তবে বাঁধবেন, নইলে মাথার ত্বকে সমস্যা হতে পারে।
* বাড়িতে কারও ছত্রাক সংক্রমণ হয়ে থাকলে শিশুদের তার কাছ থেকে দূরে রাখুন।
* বর্ষার ফল খেতে হবে। বেল, কলা, পেয়ারা, শসা, টমেটো, গাজর, পাতিলেবু ও জাম্বুরা ত্বকে এনে দেয় প্রাণ।
-
Nice
-
Thanks Madam..
-
:) :)
-
:(
-
:(
-
Thanks for sharing.....