Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Islam & Science => Topic started by: Mrs.Anjuara Khanom on July 21, 2018, 12:33:40 PM

Title: প্রয়োজন আধ্যাত্মিক সাফল্য
Post by: Mrs.Anjuara Khanom on July 21, 2018, 12:33:40 PM
নিজেকে চিনিনা বলে দিন দিন যান্ত্রিক হয়ে আদর্শচ্যুত হয়ে মানবিক গুণাবলী হারাচ্ছি আমরা। জগতের নানা টানাপোড়েনে একান্নবর্তী পরিবারের সুখ অনেক আগেই হারিয়েছি।

একান্নবর্তী পরিবারে কী সুখ, যারা সেখানে বড় হয়েছেন তারাই জানেন। মায়ের বকুনি খেলে দাদি-নানির হাত বুলানো আদর আর হাসিমাখা রূপকথার গল্প সব দুঃখ ভুলিয়ে দিত। আর এখন মায়ের বকুনি খেয়ে দুষ্টু বন্ধুদের শিকারে পরিণত হয়ে জীবননাশ হচ্ছে কত প্রতিভাবান সন্তানের। এখন আমরা হারাতে বসেছি পারিবারিক সুখ।

সারা দিন উপার্জনের খাটুনি শেষে ঘরে ফিরে স্ত্রীর হাসি মুখের সাদর সম্ভাষণ আমাদের সারা দিনের খাটুনি ভুলিয়ে দেবে তা এখন সুদূরপরাহত। দেখবেন সবাই যন্ত্র নিয়ে বসে আছে।

স্মার্ট টেলিভিশন, স্মার্ট মোবাইল এ যেন সংসার ভাঙার মারণাস্ত্র; যা মনুষ্যত্বকে গলাটিপে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। সুখের সংসার বিনষ্ট করছে, মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া তাকে উঠিয়ে শিক্ষাকে যান্ত্রিক করে দিচ্ছে। মানুষ যখন যান্ত্রিক হয় বা স্বার্থপর হয়, তখন মানুষ আর মানুষ থাকে না। কোরআনের ভাষায় উলায়িকা কাল আন’আম, তারা পশু সদৃশ্য হয়ে যায়।

কারণ তারা তখন হৃদয় দিয়ে কোনো কিছু উপলব্ধি করতে পারে না। অথচ তারা কিন্তু হৃদয়হারা নন; কিন্তু হৃদয় দিয়ে বোঝার শক্তি হারিয়ে ফেলে। আল্লাহ বলেন, লাহুম ক্বুলুবুন, তাদের হৃদয় আছে লা ইয়াফক্বাহুনা বিহা; কিন্তু সে হৃদয় দিয়ে কিছু বুঝতে পারে না। তারা বহু বিদ্যা শিক্ষা করে সমাজের বড় পণ্ডিত হয়েছে বটে; কিন্তু প্রকৃত বিদ্যার অভাবে জীবনভর নির্বোধ থেকে যায়। জার্মান কবি গোঁতে’র ভাষায়-

‘করেছি দর্শন পাঠ তীব্র কৌতূহলে/ আইনশাস্ত্র চিকিৎসার গুপ্ত সারতসার

তুলনাহীন শ্রমে অধিকারে এনেছি আমার/ ডুবুরির মতো ডুবে ধর্মতত্ত্ব করেছি মন্থন

কানাকড়ি মূল্যহীন/ এসব স্বেদসিক্ত অন্তরের শ্রম/ এখনো পূর্বের মতো রয়েছি নির্বোধ’।

কবি এখানে প্রাচীন গ্রিসে সোফিস্টদের কাছে শিক্ষাপ্রাপ্ত বিদ্যার্থীর কথা এ কবিতায় বলেছেন। হাল আমলে আমাদের দেশেও বিদ্যার অবস্থা তেমনি হয়েছে। নইলে ঝুলি ভর্তি বিদ্যার সনদের কাছে মনুষ্যত্বের সনদ হারিয়ে গেল কোথায়? খোঁজ নিয়ে দেখুন বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে আশ্রিতদের সন্তানাদি প্রায় শতভাগই পাবেন তথাকথিত আধুনিক শিক্ষিত।

এক সময় প্রাচীন গ্রিসে অনেক ভ্রাম্যমাণ বিদ্যা বেপারি ছিল। তারা সোফিস্ট নামে পরিচিত। তাদের ক্ষুরধার যুক্তি ও বাগ্মিতা অ্যাথেন্সবাসী যুবকদের আকৃষ্ট করত। জ্ঞানদান ছিল তাদের কাছে নিছক জীবিকা নির্বাহের একটি মোক্ষম উপায়। তাদের কোনো সুদূরপ্রসারী আদর্শ ছিল না। না ছিল কোনো মানবিক কল্যাণবোধ। চতুর ব্যবসায়ীরা যেমন লাভের ব্যাপারে কোনো বাছবিচারের পরোয়া করে না তারাও ছিল তেমনি।

গ্রিসের নগর রাষ্ট্রের শাসনকার্যে এমন যুক্তি এবং বাগ্মিতার প্রয়োজন হতো; তাই তারা সোফিস্টদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে শিক্ষা সনদ কিনে নিত। অনেকটা হাল আমলের কোচিং সেন্টার ও বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো।

যেখানে নোট ও পাঠের নামে অত্যাচার এবং মোটা দাগে কিছু লেকচার, সেমিনার শেষে সনদ বণ্টন হয় মাত্র; কিন্তু নৈতিকতা, মানবিক চেতনা, সামাজিক মূল্যবোধের ব্যাপারে তারা মোটেও যত্নবান নন।

কিন্তু জাগতিক সফলতার সঙ্গে সঙ্গে আধ্যাত্মিক সাফল্য না এলে জীবন শুধু যান্ত্রিক হয়ে যায় সে সম্পর্কে তারা থাকত বেখবর। ওই সময় মহামনীষী সক্রেটিস তার শিষ্য প্লেটো তরুণদের বোঝাতে উদ্যোগ নিলেন এসব সফলতাই শিক্ষার চূড়ান্ত বিবেচ্য নয়, মানবতা এবং মানব জীবনের সার্থকতাই শিক্ষার চূড়ান্ত বিবেচ্য হওয়া উচিত।

আর মানব জীবনের সার্থকতা জানার জন্য সক্রেটিস বলেছেন know thy self বা নিজেকে জান। আর আমাদের নবীজি (সা.) বলেছেন, মান আরাফা নাফসাহু ফাক্বাদ আরাফা রাব্বাহু, যে নিজেকে চিনেছে সে খোদাকে চিনেছে অর্থাৎ খোদার গুণে গুণান্বিত হলেই আদর্শবান হওয়া যায়। কালামে পাকে আছে সিবগাতাল্লাহ আল্লাহর রঙে রঙিন হও। হাদিস শরিফে এসেছে তাখাল্লাক্বু বি আখলাক্বিল্লাহ তোমরা আল্লাহর আদর্শে আদর্শবান হও।

লেখক : প্রাবন্ধিক


Title: Re: প্রয়োজন আধ্যাত্মিক সাফল্য
Post by: fahad.faisal on January 31, 2019, 01:42:18 PM
Thanks for sharing.