Daffodil International University
Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: Mousumi Rahaman on August 13, 2018, 02:33:27 PM
-
বর্ষা এলেই প্রকৃতি সবুজে সাজে। শহুরে বাড়ির বারান্দা ও ছাদে দেখা যায় সবুজ গাছপালা। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় বর্ষাকালে গাছের কম যত্ন নিতে হয় বলে অনেকেই বাগান করেন। তবে শখের বাগানি থেকে নগর কৃষক হয়ে ওঠা কঠিন কিছু না। ফুল-ফলের গাছের বাইরেও নানা ধরনের সবজির আবাদ করা যায় ছাদে, যেখান থেকে আপনার ঘরের নিয়মিত রান্নায় সবজির জোগান পাবেন।
আমি এক দিন পরপর আমার বাগান থেকে নানা ধরনের শাকসবজি তুলি। সেটা রান্না করে খাওয়ার মধ্যে আলাদা একটা আনন্দ আছে। বাজারের কেনা সবজি থেকে এসব সবজির স্বাদও হয় আলাদা। রাজধানীর কল্যাণপুরের কৃষ্ণচূড়া অ্যাপার্টমেন্টে নিজের এই ছাদবাগান শুরু করেছিলাম ২০০৮ সালের দিকে। নিজেই যখন ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটের অন্দরসজ্জা করি, তখন মাথায় রেখেছিলাম এক টুকরো বাগানের। কিছুই না জেনে বাগানে নানা ধরনের গাছ লাগাতে শুরু করি। নার্সারি থেকে গাছ এনে লাগানোর পর মরে যেত। নার্সারির বিক্রেতারা অনেক সময় ভুল তথ্য দেন, যে গাছ ছাদের উপযোগী, সেটাকে তাঁরা বারান্দার গাছ বলেও বিক্রি করেন। শুরুতে এই সমস্যায় অনেকবার পড়েছি। এরপর নানা বিষয়ে পড়াশোনা ও কর্মশালা করে গাছের যত্ন নিতে শিখেছি।
ছাদ বা বারান্দায় বাগানের জন্য কিন্তু যত্ন গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে মাটি তৈরি করতে হবে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রেখে—সহজে যেন পানি নিষ্কাশন হয়, পরিপূর্ণ পুষ্টি পায়, মাটি যেন ঝুরঝুরে হয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন গাছে অতিরিক্ত পানি দেওয়া না হয়। আবার কম পানিও দেওয়া যাবে না। বর্ষাকালে নিয়মিত বৃষ্টি হয়, তাই গাছের গোড়া না শুকিয়ে গেলে আলাদা করে পানি দিতে হবে না। খেয়াল রাখুন টব বা বেডে যেন পানি জমে না থাকে।
গাছ লাগানোর পর নিয়মিত বাগানের আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। ছাদে ছোট জলাশয় থাকলে জলজ উদ্ভিদের সংগ্রহ রাখতে পারেন। নানা রকম শেওলা, বড়নখা, কচুরিপানা ইত্যাদি জলাশয়ে রাখতে পারেন। অনেক সময় সেখানে মশা হতে পারে। তাই জলাশয়ে গাপ্পি মাছ ছেড়ে দিলে তারা মশার লার্ভা খেয়ে ফেলবে। ফলে মশা জন্মাবে না। গাছগুলো মাঝে মাঝে প্রুনিং (ছেঁটে দিলে, বছরে অন্তত একবার) করলে বৃদ্ধি এবং ফলন ভালো হবে। তবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক গাছ নির্বাচন করা। জানতে হবে কোন গাছের জন্য কোন পরিবেশ দরকার।
আমাদের ছাদের এক পাশে মাটিতে কাউগ্রাস লাগিয়েছি। তার পাশ দিয়ে নানা রকম ফুলের গাছ, যেমন কামিনি, কাঠগোলাপ, রঙ্গন ইত্যাদি। ভাঙা বাথটাব, ফেলনা কমোড, বেসিন ইত্যাদি উপকরণের মধ্যে গাছ লাগিয়েছি। নানা রকম টব আছে বাজারে। তবে টবে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, মাটি, প্লাস্টিক বা টিনের টব যা-ই হোক, সেটা ভালো মানের হতে হবে। প্লাস্টিকের টবে বড় প্রজাতির গাছ লাগালে শিকড় বড় হওয়ার সময় টব ফেটে যাওয়ার ভয় থাকে। এদিক থেকে মাটির টব ভালো। আবার আম, পেয়ারা বা জামের মতো বড় গাছ টিনের ড্রাম বা টবে ভালো হবে।
আমি মৌসুমি সবজির চাষ করি নানা রকম বেড তৈরি করে। প্লাস্টিকের ঝুড়ি ও লম্বা টবে সবজির চাষ করা যেতে পারে। টমেটো, করলা, বেগুন, ঢ্যাঁড়স, বরবটি, মরিচ ইত্যাদি সবজি সেখানে ভালো হবে। কলা ও পেঁপের ফলনও ছাদবাগানে ভালো হয়। নানা রকম মসলা ও ঔষধি গাছও ভালো হবে কিছুটা রোদ পেলে।
এখন গ্রীষ্মের কিছু সবজি যেমন লালশাক, ডাঁটা, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়স ইত্যাদি ছাদবাগানে উৎপাদন করা যাবে। বারোমাসি সবজি হিসেবে কলমিশাক, বরবটি, কচুশাকও এখন বাগানে পাবেন। সামনে শীতকাল, শীতের ছাদবাগানে করা যাবে শিম, বরবটি, লাউ, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, ক্যাপসিকাম, চায়নিজ সবজি, লেটুস, ধনেপাতা, স্ট্রবেরি, পালংশাক ইত্যাদি। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর শীতকালীন সবজি লাগানোর জন্য উপযুক্ত সময়। শীতের সময় বিভিন্ন ফুলের মধ্যে ডালিয়া, গাঁদা, পিটুনিয়া, ডায়ান্থাস, ভারবেনা, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা, এস্টার ইত্যাদি ভালো হবে। তবে মৌসুমের শুরুতে মাটি পর্যাপ্ত ভারমি কম্পোস্ট, পচা শুকনো গোবর, চুন, ব্লিচিং পাউডার দিয়ে তৈরি করে নিতে হবে। তাহলে ফলন ভালো হবে।
বাগান করা যেমন শখের একটি বিষয়, তেমনি পারিবারের জন্য বিষমুক্ত খাবারেরও একটি উৎস। ঝুমবৃষ্টিতে ইট-কাঠের নগরে থেকেও সবুজ ঘাসে পা ভেজানোর আনন্দ পাই ছাদবাগানের কারণেই। বিকেলের ফিকে আলোয় সবুজ বাগানে বসে চায়ে চুমুক দেওয়ার মতো আনন্দ আর কিসে মিলবে!
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, বিন্তীস ফেয়ারী গার্ডেন
-
Thanks.....
-
Thanks...
-
:-*Nusrat Jahan Bristy
-
:)@tokiyeasir
-
:)
-
সকলে এই প্র্যাকটিস চালু করতে পারি।
-
:)
-
Congrats
-
:)