Daffodil International University
Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: Mousumi Rahaman on September 13, 2018, 02:23:51 PM
-
৮ থেকে ৯ বছর বয়স থেকে শুরু হয় বয়ঃসন্ধি। ১২ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত একজন কিশোরী বা টিনএজ মেয়ে শরীরে-মনে নানাভাবে বাড়তে থাকে। নানা রকমের হরমোনজনিত পরিবর্তন ঘটে তার শরীরে। এই সময় চাই একটি সুষম বা সঠিক পুষ্টি। সঠিক ধারণার অভাবে এ সময় কারও বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, কেউ আবার হঠাৎ মোটা হয়ে যেতে থাকে, কারও দেখা দেয় রক্তশূন্যতা, ভিটামিনের অভাব। তাই কিশোরীর পুষ্টি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা চাই।
প্রথমত, বয়ঃসন্ধিতে মেয়েদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মেনার্কি বা রজঃস্বলা হওয়া। এ সময় যথেষ্ট আয়রনযুক্ত (লৌহ) খাবার না খেলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। মাসিকের দিনগুলোতে প্রতিদিন একটি মেয়ের এক মিলিগ্রাম করে আয়রন চলে যায়। তাই বাড়ির ছেলেটির চেয়ে মেয়েটির আয়রনযুক্ত খাবারের চাহিদা বেশি। ছেলেদের আয়রনের দৈনিক চাহিদা ১১ মিলিগ্রাম, মেয়েদের প্রায় ১৫ মিলিগ্রামের বেশি। এই বাড়তি আয়রন পেতে আপনার মেয়েকে নিয়মিত সবুজ শাক, বিশেষ করে কচু, কচুশাক, মাংস, কলিজা, ডিম, নানা ধরনের ফল, বিশেষ করে বেদানা, আনার, খেজুর, সফেদা, কিশমিশ ইত্যাদি খেতে দিন।
দ্বিতীয়ত, শারীরিক বৃদ্ধির জন্য এবং মজবুত হাড়ের জন্য টিনএজারদের প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি চাই। বয়স বাড়লে পুরুষদের তুলনায় নারীদের অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বেশি। কেননা একজন নারীকে সন্তান ধারণ করতে হয়, বুকের দুধ খাওয়াতে হয় যখন প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়ামের দরকার হয়। তা ছাড়া হাড়ের সর্বোচ্চ ঘনত্ব তৈরি হয়ে যায় ১৮ থেকে ২১ বছরের আগেই, এরপর তা আর বাড়ে না। তাই মজবুত হাড়ের জন্য খেতে হবে দুধ, দুগ্ধজাত খাবার যেমন: দই, পনির, কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ, পাতাওয়ালা সবুজ সবজি ইত্যাদি।
তৃতীয়ত, সঠিক বেড়ে ওঠা ও পেশির বৃদ্ধির জন্য ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী মেয়ের দৈনিক ৩৪ গ্রাম আমিষ খাওয়া উচিত, আর ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সে দৈনিক ৪৫ গ্রাম। তাই প্রতিদিনি মাছ বা মাংস, ডিম, দুধ, বীজ ও ডালজাতীয় খাবার, নানা ধরনের বাদাম দিন মেয়েকে। যারা একটু খেলাধুলা করে, তাদের আমিষের চাহিদা আরও বেশি। এর বাইরে টিনএজ মেয়েদের আয়োডিন, জিঙ্ক ও ফলেট-জাতীয় খনিজের চাহিদা বেশি। তাই খেতে হবে সামুদ্রিক মাছ, সবুজ শাকসবজি ও ফল।
চতুর্থত, এই বয়সে হঠাৎ মুটিয়ে গেলে নানা ধরনের হরমোনজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়ে, মুখে লোম গজায়। তাই অতিরিক্ত ক্যালরি-সম্পন্ন খাবার যেমন: ভাজাপোড়া, মিষ্টান্ন, কেক পেস্ট্রি, ফাস্ট ফুড, কোমল পানীয় ইত্যাদি কম খাওয়াই ভালো। আজকাল অনেক কিশোরী আবার স্লিম হওয়ার জন্য ক্রাশ ডায়েট করে, যা খুবই ক্ষতিকর।