Daffodil International University
Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Allah: My belief => Topic started by: rumman on September 22, 2018, 11:53:11 AM
-
আশুরার দিনকে কেন্দ্র করে মানবেতিহাসে নানা ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। নবী-রাসুলদের সঙ্গে সম্পৃক্ত আশুরার দিনে মর্যাদাপূর্ণ অসংখ্য উপাখ্যান ইতিহাস গ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়।
যেমন- আশুরার দিন পৃথিবীর সৃষ্টি, এ দিনেই কেয়ামত। এ দিনে হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি, একই দিনে তার তওবা কবুল হওয়া। এ দিনেই হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর জন্মগ্রহণ ও নমরুদের প্রজ্বলিত আগুন থেকে মুক্তিলাভ। হজরত আইউব (আ.)-এর আরোগ্য লাভ ও হজরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পাওয়াসহ অসংখ্য ঘটনার বর্ণনা ইতিহাসের গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে।
তবে আল্লামা আবুল ফরজ আবদুর রহমান ইবনুল জাওজি তার বিখ্যাত ‘মাওজুআতু ইবনে জাওজি’-তে বলেন, আশুরার দিনে সংঘটিত ঘটনাবলি বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। তা সত্ত্বেও ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সেসব ঘটনার আবেদন কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
হাদিস শরিফে আশুরার ইতিহাস সম্পর্কে বলা হয়েছে—হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) যখন মদিনায় হিজরত করেন, তখন ইহুদিরা আশুরার দিনে রোজা পালন করতো। তিনি তাদের বললেন, ‘এটি কোন দিন, তোমরা যে রোজা রাখছ?’ তারা বলল, ‘এটি এক মহান দিন, যেদিন আল্লাহ মুসা (আ.)-কে মুক্তি দিলেন ও ফেরাউনের পরিবারকে ডুবিয়ে মারলেন। তখন মুসা (আ.) শোকর আদায় করার জন্য রোজা রাখলেন (দিনটির স্মরণে আমরা রোজা রাখি)।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আমরা মুসার অনুসরণে তোমাদের চেয়ে বেশি হকদার। তখন তিনি রোজা রাখলেন ও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।’ (বুখারি, হাদিস নং : ৩৩৯৭; মুসলিম, হাদিস নং : ১১৩০)
অন্য এক হাদিসে এসেছে, ‘এটি সেদিন, যেদিন নুহ (আ.)-এর নৌকা ‘জুদি’ পর্বতে স্থির হয়েছিল। তাই নুহ (আ.) আল্লাহর শুকরিয়াস্বরূপ সেদিন রোজা রেখেছিলেন।’ (মুসনাদে আহমাদ : ২/৩৫৯)
ইতিহাসের পরম্পরায় ৬০ বা ৬১ হিজরির ১০ মুহাররম সংঘটিত হয় কারবালার হৃদয়বিদারক, মর্মন্তুদ ও বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ। যেখানে হজরত হুসাইন (রা.), তার পরিবারের সদস্য ও সাথীদের পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয়।
জুবাইর ইবনে বাক্কার বলেন, হুসাইন ইবনে আলী (রা.) চতুর্থ হিজরির শাবান মাসের পাঁচ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। আর তাকে আশুরার জুমার দিনে ৬১ হিজরিতে শহীদ করা হয়েছে। তাকে সিনান ইবনে আবি আনাস নাখায়ি হত্যা করে। তাতে সহযোগিতা করেছে খাওলি ইবনে ইয়াজিদ আসবাহি হিময়ারি। সে তার মাথা দ্বিখণ্ডিত করেছে এবং উবাইদুল্লাহর দরবারে নিয়ে এসেছে। তখন সিনান ইবনে আনাস বলেন, ‘আমার গর্দানকে স্বর্ণ ও রৌপ্য দ্বারা সম্মানিত করুন। আমি সংরক্ষিত বাদশাহকে হত্যা করেছি, মা-বাবার দিক দিয়ে উত্তম লোককে আমি হত্যা করেছি।’ (তাবরানি, মুজামে কবির, হাদিস নং: ২৮৫২)
সেদিন নরাধম-অভাগারা যে পাশবিকতা ও নির্মমতার পরিচয় দিয়েছে, তা যেকোনো হৃদয়েই বেদনা সৃষ্টি করে। ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ আছে, শাহাদাতের পর হজরত হুসাইন (রা.)-এর দেহ মোবারকে মোট ৩৩টি বর্শার এবং ৩৪টি তরবারির আঘাত ছাড়াও অসংখ্য তীরের জখমের চিহ্ন ছিল। এছাড়া ঘাতক ও হন্তারকরা তার সঙ্গে থাকা মোট ৭২ জনকেও হত্যা করেছে।
Source: বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮
-
আশুরার দিনকে কেন্দ্র করে মানবেতিহাসে নানা ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। নবী-রাসুলদের সঙ্গে সম্পৃক্ত আশুরার দিনে মর্যাদাপূর্ণ অসংখ্য উপাখ্যান ইতিহাস গ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়।
আশুরার দিন বা মুহাররমের ১০ তারিখ যেসব তাৎপর্যময় ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল, বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য সংক্ষেপে সেগুলো তুলে ধরা হলো:
১. এ দিনে আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করেন। আর এ দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে।
২. এ দিনে আল্লাহ মানবজাতির আদি পিতা হজরত আদম (আ.)-কে প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্টি করেন। জান্নাত থেকে দুনিয়ায় প্রেরণ করেন। এ দিনে আল্লাহ পাক আদম (আ.)-এর দোয়া ও তওবা কবুল করেন। এ দিনে তিনি স্ত্রী হাওয়া (আ.)-এর সঙ্গে আরাফার ময়দানে সাক্ষাৎ করেন।
৩. হজরত নুহ (আ.)-এর জাতির লোকেরা আল্লাহর গজব মহাপ্লাবনে আক্রান্ত হওয়ার পর ১০ মুহাররম তিনি নৌকা থেকে ঈমানদারদের নিয়ে ‘জুদি’ নামক পাহাড়ে অবতরণ করেন।
৪. হজরত ইবরাহিম (আ.) নমরুদের অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হওয়ার ৪০ দিন পর ১০ মুহাররম সেখান থেকে মুক্তি লাভ করেন।
৫. হজরত আইয়ুব (আ.) ১৮ বছর কঠিন রোগ ভোগ করার পর, মুহাররমের এ দিনে আল্লাহর রহমতে সুস্থতা লাভ করেন।
৬. হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর পুত্র হজরত ইউসুফ (আ.) তার ১১ ভাইয়ের ষড়যন্ত্রে কূপে নিক্ষেপ হন এবং এক বণিক দলের সহায়তায় মিসরে গিয়ে হাজির হন। তারপর আল্লাহর বিশেষ কুদরতে তিনি মিসরের প্রধানমন্ত্রী হন। ৪০ বছর পর ১০ মুহাররম পিতার সঙ্গে পুনরায় মিলিত হন।
৭. হজরত ইউনুস (আ.) জাতির লোকদের প্রতি হতাশ হয়ে নদী অতিক্রম করে দেশান্তরিত হওয়ার সময় নদীর পানিতে পতিত হন এবং মাছ তাকে গিলে ফেলে। মাছের পেট থেকে তিনি আল্লাহর রহমতে ৪০ দিন পর মুক্তি পান ১০ মুহাররম তারিখে।
৮. এ দিনে আল্লাহ হজরত মূসা (আ.) ও তার অনুসারী বনি ইসরাইলিদের ফেরাউনের অত্যাচার থেকে মুক্ত করে পানির মধ্যে রাস্তা তৈরি করে দিয়ে পার করে দেন এবং ফেরাউনকে তার দলবলসহ সাগরে ডুবিয়ে মারেন।
৯. হজরত ঈসা (আ.)-কে ইহুদিরা হত্যার ষড়যন্ত্র করলে মুহাররমের ১০ তারিখ আল্লাহ তাকে আসমানে উঠিয়ে নেন।
১০. মুহাররম মাসের ১০ তারিখ কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনা সংঘটিত হয়। এদিন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে হজরত হোসাইন (রা.) কারবালা প্রান্তরে শাহাদাতবরণ করেন।
১১. ঘটনাক্রমে হজরত সুলায়মান (আ.) সাময়িক রাজত্বহারা হন। আল্লাহ তায়ালা তাকে আবারো রাজত্ব ফিরিয়ে দেন আশুরার দিনে।
১০. এ দিনে হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্ম হয় এবং আল্লাহ তায়ালা তাকে ফেরেশতাকর্তৃক সশরীরে আসমানে উঠিয়ে নেন এ দিনেই।
১২. এ দিনে সর্বপ্রথম পবিত্র কাবা শরিফ গিলাফাবৃত করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, আল্লামা ইবনুল জাওজি (রহ.) তার বিখ্যাত ‘মাওজুআতু ইবনে জাওজি’-তে বলেন, আশুরার দিনে সংঘটিত ঘটনাবলি বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। তা সত্ত্বেও ইতিহাসের উপাদান হিসেবে এসব ঘটনার আবেদন কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
-
Thank you for sharing.