Daffodil International University
DIU Activities => Permanent Campus of DIU => Topic started by: Reza. on November 11, 2018, 12:12:48 AM
-
সকালে যখন ইউনিভার্সিটিতে যাই তখন অনেক তাড়াহুড়া করে বের হতে হয়। আমাকে বাসা থেকে প্রথমে যেতে হয় হাউজবিল্ডিং এ। সেখান থেকে ইউনিভার্সিটির বাসে উঠি। বাসা থেকে বের হয়েই রিক্সায় উঠি আর রিক্সাওয়ালাকে বলি দ্রুত যেতে - আমার বাস ধরতে হবে। রিক্সাওয়ালাও প্রাণপণে চালিয়ে যান যত দ্রুত সম্ভব। প্রত্যেক জনই যত দ্রুত সম্ভব রিক্সা চালান। যেই বয়সেরই হোন না কেন। প্রতিদিনই।
আমাদের বাসা থেকে হাউজ বিল্ডিঙয়ের ভাড়া অল্প কয়টি টাকা। অনেক দিন ভেবে দেখেছি তারা যদি আস্তেও চালিয়ে আসেন তাহলেও তো একই ভাড়া তারা পাবেন। কিন্তু রিক্সা চালকেরা এই ব্যাপারে সব সময়ই যাত্রীদের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব দেখান।
রিক্সা চালানো পরিশ্রম সাধ্য কাজ। এতো সকালে তারা যত দ্রুত রিক্সা চালান তাই দেখি আর ভাবি। কি আশ্চর্য আমাদের এই দেশ। কারো কারো কাছে টাকা কোন ব্যাপার না। আবার কেউ অল্প কয়টি টাকার জন্য কত হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। আর আমাদের যত হিসেব তাদের বেলাতেই। আমার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী অনেক সময়ই তাদের প্রতি অমানবিক আচরণও আমরা করি। তাদের নাই কোন ছুটির দিন। নাই বোনাস বা পেনশন। অথচ হিসেব করলে তারাই দেশের সিংহ ভাগ। তাদের নাম কোন অফিসের আকাউন্টস সেকশনে উঠে নাই। একজন অপব্যয় করবে আর অন্য একজন বেঁচে থাকার জন্য হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করবে - এইটাই তো বড় অন্যায়। অনেক ক্ষেত্রেই রাস্তায় চলতে তাদেরকে ঘুস বা উপরিও দিতে হয়। কখনো বড় রাস্তায় চলাচলের জন্য। কখনো বা এক এলাকা থেকে অন্য এলাকাতে যাওয়ার জন্য। ৫ টাকা ১০ টাকা তাদেরকে দিতে হয়।
আমাদের দেশের ট্র্যাডিশন এইটাই। আমরা চালু ট্র্যাডিশনকে ভাঙতে ভয় পাই। হোক তা ক্ষতিকর। আমাদের মাঝে বিড়ালের গলায় ঘন্টা পরানোর মত খুব কম মানুষ আছে। কিছু আমাদের মাঝে অপেক্ষায় থাকে কেউ একজন উঠে আসবে আর আমাদের দেশ চেঞ্জ হবে। কিছু হতাস হয়ে দেশ ত্যাগ করে স্বার্থপরের মত। বাকিরা অন্ধ ভাবে কোন দল বা গোষ্ঠীর অনুগত থাকে। যেন এর মাঝেই আমাদের দেশের মুক্তি লুকিয়ে আছে। তবে কোনটাই যে সঠিক পথ নয় তা অনেক আগেই প্রমাণিত।
আমাদের মনে রাখতে হবে দেশের যেমন ধ্বংস হয় নিরবে ভিতর থেকে। ঠিক তেমন তার উন্নতিও হয় নিরবে ভিতর থেকে। আমাদের সাধারণ চিন্তা ভাবনা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কর্মের মাঝেই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে।