Daffodil International University

Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: provakar_2109 on March 31, 2019, 05:47:52 PM

Title: শাকের খালেলি: নিজ বাড়ির আঙ্গিনাতেই ৩ বছর লুকানো ছিল যার লাশ
Post by: provakar_2109 on March 31, 2019, 05:47:52 PM
গরীবের কুঁড়েঘর থেকে শুরু করে ধনীর বিশাল প্রাসাদ, রহস্য ছড়িয়ে থাকে সবখানেই। শাকের খালেলির জন্ম একটি ধনাঢ্য পরিবারে, তাতে জড়িয়ে ছিল গাঢ় রহস্য। ১৯৪৭ সালের ২২শে আগস্ট মাদ্রাজের একটি পার্সিয়ান মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন শাকের খালেলি। বাবা গোলাম হোসেইন নামাজী এবং মা গওহর তাজ বেগমের মেয়ে ছিলেন শাকের। গওহর তাজ বেগমের বাবা, অর্থাৎ, শাকের খালেলির নানা ছিলেন প্রথমে জয়পুর এবং পরবর্তীতে হায়দ্রাবাদে কর্মরত দেওয়ান। শাকেরের দাদা মোহাম্মদ নামাজীও খুব একটা কম কিছু ছিলেন না।

ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নামাজীর ব্যবসা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল ইরান, সিঙ্গাপুর আর আমেরিকাতেও। ভারতে বেশ প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল তার। ভারত, ইরান এবং সিঙ্গাপুরে জনস্বার্থে নানারকম প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন শাকের খালেলির দাদা। তার ভেতরে নামাজী হাসপাতাল বেশ পরিচিত। জন্মের পর অনেকটা সময় সিঙ্গাপুরেই কাটিয়েছেন শাকের খালেলি। বাবা-মা সিঙ্গাপুরে থাকায় সেখানেই পড়াশোনা করেছেন তিনি।

১৯৬৫ সালে, ১৮ বছর বয়সে নিজের কাজিন আকবর মির্জা খালেলির সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে আবদ্ধ হন শাকের। শাহ তাজ বেগম এবং গওহর তাজ বেগম ছিলেন দুই বোন। তাই শাকের আর আকবরের এই সম্পর্কে কোনরকম বাধা দেন নি তারা। একটা সময় বিয়ে হয়ে যায় আকবর খালেলি এবং শাকেরের। বিয়ের পর শাকের হয়ে ওঠেন শাকের খালেলি। খুব ভালো খেলোয়াড় এবং শিক্ষার্থী ছিলেন আকবর খালেলি। চেন্নাইয়ের লয়োলা কলেজ থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ভারতে বেশ ভালো কিছু করার ক্ষমতা রাখতেন। কিন্তু সবকিছু বাদ দিয়ে দাদার পদাঙ্ক অনুসরণ করেন তিনি। আইএফএস এবং আইএএস- দুটো পরীক্ষাতেই বসেন। ১৯৫৪ সালে আইএফএস এ যোগ দেন। নিজের কাজের তাগিদেই নানা স্থানে বদলি হতেন আকবর খালেলি। মোট চারটি মেয়ে জন্ম নেয় শাকের খালেলি এবং আকবর খালেলির ঘরে; জেবুন্দেহ খালেলি, সাবাহ, রেহানে এবং এসমাত খালেলি। বেশ কেটে যাচ্ছিলো দুজনের সংসার।

হঠাৎ করেই ইরানে বদলি হয়ে যান আকবর খালেলি। মেয়েদের নিয়ে ইরানে যেতে রাজি হননি শাকের খালেলি। মেয়েদের নিয়ে দেশেই থাকেন তিনি। স্থাপত্য নিয়ে বেশ আগ্রহ ছিল শাকেরের। সেটি নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ৩৭ বছর বয়সে নিজের বাড়ি নিজেই তৈরি করেন শাকের। এরপর মায়ের বাড়িতেও সাহায্য করেন। তারপর তার চোখ যায় অন্যান্য দিকে। বাবা-দাদার মতন দানশীল ছিলেন শাকের। তাই আশেপাশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ভেতরে বেশ সুনাম কুড়িয়ে ফেলেন তিনি দ্রুত। কিন্তু তা খুব বেশিদিনের জন্যে নয়। মুরালি মনোহর মিশরা নামে একজনের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক এবং সেই সম্পর্ক বিয়েতে গিয়ে ঠেকে শাকেরের। দ্বিতীয় স্বামীর পরিবারে ভালোই ছিলেন শাকের। মেয়েদের সাথেও কথা হতো তাঁর। কিন্তু হুট করে উধাও হয়ে যান শাকের খালেলি।

১৯৯১ সালের কথা। শাকেরের সন্তান সাবাহ নিজের সাধ্যমতো খুঁজে বেড়ায় তার মাকে। সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজার চেষ্টা করে সে। কিন্তু কিছুতেই কোনো লাভ হয় না। নিজের সৎ বাবার কাছে জানতে চায় মা কোথায়। কিন্তু শাকেরের ২য় স্বামী মুরালি মনোহর মিশ্র স্পষ্টভাবে কোনো উত্তর দেন না। সন্দেহ হয় সাবাহ’র। ১৯৯২ সালে সেই সন্দেহ আর একটা আশঙ্কা গাঢ় হয়ে ওঠে মনের ভেতরে। সোজা বেঙ্গালুরুর কর্ণাটকের অশোক নগর পুলিশ স্টেশনে যায় সাবাহ। ‘হেবিস কোপাস’ কেস দাখিল করে সে। তবে তার আগে বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয় সাবাহকে। টানা এক বছর চেষ্টার পর অবশেষে তার মায়ের উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে পুলিশ কেস করতে সক্ষম হয় সাবাহ।

এরপরের তিনটি বছর শাকের খালেলিকে খুঁজে বেড়ায় ব্যাঙ্গালোর পুলিশ। কিন্তু কোনো খোঁজ মেলে না তার। যেন বিশাল সম্পত্তির মালিক এই নারী কাউকে কিছু না জনিয়েই হুট করে উধাও হয়ে গিয়েছেন। সাবাহ’র সাথে শাকেরের পরিবারের বাকি সদস্যরাও এ সময় খুঁজে বেড়ায় শাকেরকে। কেস করার কিছুদিনের ভেতরেই পুলিশ শাকের খালেলির কেসকে আর সব কেসের মতন ফাইলবন্দী করে রেখে দেয়। ভুলে যায় হারিয়ে যাওয়া শাকের খালেলির কথা। তবে পুলিশকে খুব বেশিদিন চুপ থাকতে দেয়নি শাকের খালেলির পরিবার। শাকের খালেলির প্রথম স্বামী আকবর খালেলি ছিলেন একজন আই এফ এস অফিসার। তাদের পরিবার ছিল সম্ভ্রান্ত এবং প্রভাবশালী। আকবর খালেলি পুলিশকে চাপ দেন শাকেরের ব্যাপারে খোঁজ খবর চালু রাখতে। ফলে পুলিশ একটা সময় তৎপর হয়ে ওঠে সুন্দরী, রহস্যময় আর অগাধ সম্পত্তির মালিক শাকের খালেলির গুম হওয়ার রহস্য উদঘাটনে।

সাবাহ নিজের জবানবন্দীতে কিছু ভাবিয়ে তোলার মতো কথা বলেন। সাবাহ জানান, মুম্বাই থাকায় তখনই মায়ের কাছে যেতে পারছিল না সে। ফোন করে সে সৎ বাবাকে। মুরালি ওরফে শ্রদ্ধানন্দ ফোন এড়িয়ে গেলে মাকে খুঁজতে বেশ কয়েকবার সাবাহ শ্রদ্ধানন্দের কাছে যায়। কিন্তু শ্রদ্ধানন্দ কখনোই কোনো ব্যাপারে খোলাসা করে উত্তর দেননি সাবাহকে। বারবার জিজ্ঞেস করায় একটা সময় শ্রদ্ধানন্দ সাবাহকে জানান, শাকের আমেরিকায় গিয়েছেন।

এমনকি নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালের ঠিকানা দেন তিনি সাবাহকে। সাবাহ সেই হাসপাতালে খোঁজ করে। কিন্তু সেখানে শাকের খালেলি নামে কোনো ব্যক্তি ছিলো না। ফলে আবার শ্রদ্ধানন্দকে ফোন করে সাবাহ। তার কাছে খোঁজ নিতে যায়। তখন স্বামী শ্রদ্ধানন্দ প্রথমে ভাব ধরেন যেন তিনি ঠিক বলেছিলেন। কোনোভাবে শাকের তাকে ঠিক তথ্য দেয়নি। আর তার পরপরই আবার জানান যে, তিনি ভুল বলেছিলেন। শাকের ইংল্যান্ডের কোনো একটি হাসপাতালে গিয়েছেন। আর ভালো আছেন। সাবাহ স্বামী শ্রদ্ধানন্দের কাছে শাকেরের ঠিকানা, ফোন নম্বর বা যোগাযোগ করার মতন কিছু চায়। তিনি সরাসরি না করে দেন সাবাহকে। জানান, শাকের যাওয়ার সময় এমন কিছুই রেখে যায়নি যা দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। সেবার মায়ের সম্পর্কে কথা বলতেই মুম্বাইয়ের একটি রেস্টুরেন্টে স্বামী শ্রদ্ধানন্দের সাথে দেখা করে সাবাহ। সেখানে আবার তাকে জানান স্বামী শ্রদ্ধানন্দ, শাকের খালেলি দেশের বাইরে আছে। কথাবার্তা বলতে বলতে একটা সময় স্বামী শ্রদ্ধানন্দ একটু পাশে যান। আর সেই সময়েই সাবাহ’র চোখ পড়ে স্বামী শ্রদ্ধানন্দের সাথে আনা কিছু কাগজের উপর। কাগজগুলো টেবিলের উপরে রাখা ছিল। সেদিকে ভালো করে তাকাতেই একটি পাসপোর্ট দেখতে পায় সাবাহ। পাসপোর্টটি ছিল তার মা শাকের খালেলির। সন্দেহ তীব্র হয় সাবাহ’র। এখানে যদি শাকেরের পাসপোর্ট থাকে তাহলে শাকের কী করে বিদেশে গেল? তার মানে কি শ্রদ্ধানন্দ মিথ্যে কথা বলছেন?

পুলিশ সন্দেহ করে শ্রদ্ধানন্দকে। কিন্তু প্রশ্ন হল, কে এই শ্রদ্ধানন্দ মিশ্র? তদন্ত শুরু করে পুলিশ। মুরালি মনোহর মিশ্র বা স্বামী শ্রদ্ধানন্দ সম্পর্কে বেশ অন্যরকম কিছু তথ্য পায় তারা। স্বামী শ্রদ্ধানন্দ রামপুর স্টেটের নবাবের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া তিনি উত্তর প্রদেশের রামপুর রয়্যাল ফ্যামিলির জমির দেখভাল করতেন। আকবর খালেলি ও শাকের খালেলির খুব ভালো সম্পর্ক ছিল রামপুর রয়্যাল ফ্যামিলির সাথে। প্রায় সময়েই সেখানে বেড়াতে আসতেন এই দম্পতি। দিল্লিতে শাকেরের সাথে দেখা হয় শ্রদ্ধানন্দের। যেহেতু জায়গা জমি নিয়ে বেশ ভালো বুঝতেন শ্রদ্ধানন্দ, ফলে নিজের জায়গা জমি সংক্রান্ত সমস্যাগুলো তাকে বলেন শাকের। আর সেগুলোর সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এই সময় একে অন্যের সাথে বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন শাকের এবং শ্রদ্ধানন্দ। সে সময় আকবর খালেলি ট্রান্সফার হয়ে শাকেরের কাছ থেকে একটু দূরে অবস্থান করছিলেন। চার মেয়েকে নিয়ে শাকের একাই থাকতেন। এই সুযোগটাকেই কাজে লাগায় শ্রদ্ধানন্দ। এমনিতে ঘনিষ্ঠতা তো ছিলই। সেটাকে আরো একটু বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করে সে এই সময়। শাকের একসময় ধরা দেন শ্রদ্ধানন্দের কাছে।

শাকেরের মেয়েরা বারবার থানায় যেতে থাকে। পুলিশকে চাপ দিতে থাকে মায়ের খোঁজ পাওয়া জন্য। কারণ, তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল কিছু না কিছু খারাপ ঘটনা তাদের মায়ের সাথে ঘটেছে। কেবল সাবাহ না। এবার পুলিশের কাছে আসেন শাকেরের আরেক মেয়ে জেবান্দাহ। পুলিশের এমন অলস হয়ে বসে থাকা নিয়ে কথা তোলে সে। শ্রদ্ধানন্দই যে শাকেরকে গুম করেছে সেটা পুলিশকে জানায় জোবান্দাহ। পুলিশ কেন এখনো শ্রদ্ধানন্দকে আটক করছে না সেটা জানতে চায় সে। এর ভেতরে অবশ্য বেশ কয়েকবার শ্রদ্ধানন্দকে থানায় তলব করা হয়। এভাবে একটা সময় শাকের উধাও হওয়ার ২ বছর কেটে যায়। ১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে কেসটি ব্যাঙ্গালোর ক্রাইম ব্রাঞ্চ পুলিশকে দেওয়া হয়। কারণ পুলিশের মনে তখন বেশ খটকা লাগে ব্যাপারটি নিয়ে। সেইসাথে খালেলি পরিবারের পক্ষ থেকে আসা প্রতিনিয়ত চাপ তো ছিলই। সেন্ট্রাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ নিজেদের সব ধরনের সোর্স কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। অপরাধীদের ডেরাগুলোতে খুঁজে ফেরে যদি কোনো সূত্র পাওয়া যায়। আর সেইসময় হঠাৎ একটা সূত্র চলে আসে পুলিশের হাতে। সেখানে ছদ্মবেশে থাকা পুলিশ কনস্টেবল মহাদেব শুনতে পান দুই মাতালের আলাপচারিতা। শ্রদ্ধানন্দকে নিয়ে কথা বলছিল তারা। কিছুদিন আগে ৮১ রিচমন্ড রোডে কাজ পড়েছিল তাদের। স্বামী শ্রদ্ধানন্দ সেদিন একটা কফিন আনিয়েছিলেন তার ঐ বাড়িতে। এই একটি তথ্যই পুলিশদের কাছে পুরো কাজটাকে অনেক বেশি সহজ করে দেয়। অনেকগুলো প্রশ্ন ছিল পুলিশের মনে। কেন ৮১ রিচমন্ড রোডে কোনো কফিনের দরকার পড়েছিলো? কেউ কি মারা গিয়েছিল ঐ বাড়িতে? যদি মারা গিয়ে থাকে তাহলে সে কে? আর এই সব প্রশ্নের উত্তর কেবল একজনই দিতে পারতেন। আর তিনি হলেন স্বামী শ্রদ্ধানন্দ। ইন্সপেক্টর তথ্যটি থানায় জানালে আটক করা হয় দুই মাতালকে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের। আর তারপর ঘটনার সত্যতা জেনে স্বামী শ্রদ্ধানন্দকে জেরা করে পুলিশ। থানায় আনা হয় তাকে। পুলিশের প্রথম জিজ্ঞাসার সোজা না জানিয়ে দেন তিনি। জানিয়ে দেন যে, কোনো কফিন আনেন নি তিনি। পরে পুলিশ বাধ্য হয় শ্রদ্ধানন্দের সামনে কফিন সরবরাহকারী দুজনকে নিয়ে আসতে। তাদেরকে দেখার পরেই মুখ খুলতে রাজী হন তিনি।

পুলিশকে জানান, তিনি শাকের খালেলির সব রহস্যের সমাধান লুকিয়ে আছে তারই বাড়িতে। পুলিশকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান শ্রদ্ধানন্দ। সেখানে বাড়ির একটা নির্দিষ্ট অংশে চারকোনা করে চক দিয়ে ঘর কাটেন তিনি। সেখানে পুলিশ কোদাল দিয়ে খুঁড়তে আরম্ভ করে। খুব বেশিক্ষণ খুঁড়তে হয় না। তার আগেই উঁকি মারে একটা আস্ত কফিন। কফিনের ভেতরে শুয়ে ছিল একটি কংকাল। কংকালের একদিকে চুড়ি ছিল। খানিকটা ছেঁড়া শাড়ি ছিল পাশে। সিসিবি আরো ভালো করে পরীক্ষার জন্য হায়দ্রাবাদ ল্যাবে ফটোগ্রাফ সুপার ইম্পোজিশন এবং ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট করান কংকালটির। আর ফলাফল? একদম যা ভাবা হয়েছিল তা-ই! কংকালটি ছিল হঠাৎ করে ৩ বছর ধরে উধাও হয়ে যাওয়া শাকের খালেলির। কে খুন করেছিল শাকের খালেলি? নিশ্চয়ই স্বামী শ্রদ্ধানন্দ! কিন্তু এটি সঠিকভাবে বলা এবং স্বামী শ্রদ্ধানন্দকে বিচারের মুখোমুখি করাটা সিসিবির পক্ষে খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, এই হত্যার কোনো চাক্ষুষ সাক্ষী ছিলো না। ঠিক কেন, কীভাবে হত্যা সম্পন্ন হয়েছে সেটা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হচ্ছিলো না। স্বামী শ্রদ্ধানন্দ জানান, তিনি শাকের খালেলিকে খুন করেননি। কারণ, শাকেরকে খুন করার মতন কোনো মোটিভ তার ছিলো না। কোনো কারণ ছাড়া কেন তিনি খুন করতে যাবেন নিজের স্ত্রীকে? তবে সিসিবি থেমে থাকেনি। নিজেদের তদন্ত চালিয়ে যেতে থাকে তারা। আর জানতে পারে যে, মৃত্যুর আগে শাকেরের সমস্ত সম্পত্তির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে নিয়েছিলেন স্বামী শ্রদ্ধানন্দ। ফলে শাকের মারা গেলে তার সমস্ত সম্পত্তি তার কাছেই যায়। শ্রদ্ধানন্দের সাথে সংসার করার সময় বেশ হতাশ হয়ে পড়েন শাকের। অনেক বেশি ঝগড়া বাঁধতো তাদের মধ্যে। আর এর কারণ ছিল শ্রদ্ধানন্দের নেতিবাচক কার্যক্রম। পুলিশের কাছে নিজের স্বীকারোক্তিতে শ্রদ্ধানন্দ জানান, নিজের কিছু বাজে অভ্যাসের কারণে টাকা খরচ করছিলেন তিনি। এর ভেতরে ছিল মদ্যপান, পরনারীর প্রতি আসক্তি, জুয়াখেলা সহ আরো অনেক কিছু। এর সাথে চলে আসে আয়কর আর পারিবারিক কিছু সমস্যা। আর এই অতিরিক্ত টাকা পয়সা খরচ করার ব্যাপার থেকেই ঝামেলা শুরু হতো দুজনের মধ্যে।

শ্রদ্ধানন্দের মাথায় একটা সময় শাকেরের টাকাগুলোর লোভ জেঁকে বসে। তার ভেতরে আশংকা ছিল শাকের নিজের সমস্ত সম্পত্তি থেকে শ্রদ্ধানন্দকে বাদ দিয়ে দেবেন। আর তাই শাকেরকে ভুলিয়ে ভালিয়ে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। শাকেরকে অজ্ঞান করে জীবন্ত কবর দেন তিনি। শাকের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই তার সমস্ত সম্পত্তি একটু একটু করে ভাগ করতে শুরু করেন শ্রদ্ধানন্দ। তারপর সেই সম্পত্তি বেচতে থাকেন আর কিছুদিনের ভেতরেই কয়েক কোটি রুপির মালিক হয়ে যান। কফিন খুঁজে পাওয়ার পর এমন কিছু কাগজ আসে সিসিবির হাতে যেগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছিলো যে, শাকেরের মৃত্যুর পর শাকেরের ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে অনেক কাগজ চালিয়েছেন শ্রদ্ধানন্দ। এসব কিছুকে আমলে নিয়ে স্বামী শ্রদ্ধানন্দের উপরে শাকের খালেলি হত্যার অভিযোগ আনে সিসিবি।

২০০৫ সালের মে মাসে আদালত স্বামী শ্রদ্ধানন্দকে ফাঁসির রায় শোনায়। পরবর্তীতে এই রায় নিয়ে আপিল করা হয়। তবে তাতে লাভ হয় না। সুপ্রিম কোর্টেও একসময় চলে যায় মামলাটি। ২০০৮ সালের জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্ট স্বামী শ্রদ্ধানন্দের ফাঁসির রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বদলে দেন। বর্তমানে তিনি জেলে আছেন।
Title: Re: শাকের খালেলি: নিজ বাড়ির আঙ্গিনাতেই ৩ বছর লুকানো ছিল যার লাশ
Post by: Raihana Zannat on May 14, 2019, 02:36:21 PM
 ??? >:(
Title: Re: শাকের খালেলি: নিজ বাড়ির আঙ্গিনাতেই ৩ বছর লুকানো ছিল যার লাশ
Post by: Sharmin Jahan on May 22, 2019, 10:57:46 AM
Horrible!!
Title: Re: শাকের খালেলি: নিজ বাড়ির আঙ্গিনাতেই ৩ বছর লুকানো ছিল যার লাশ
Post by: Sharminte on June 12, 2019, 11:49:47 AM
terrible
Title: Re: শাকের খালেলি: নিজ বাড়ির আঙ্গিনাতেই ৩ বছর লুকানো ছিল যার লাশ
Post by: tasnim.eee on June 23, 2019, 04:25:52 PM
horrible