Daffodil International University

Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: sisyphus on April 02, 2019, 09:24:28 AM

Title: কিডনির বড় সমস্যার নীরব ৭ লক্ষণ
Post by: sisyphus on April 02, 2019, 09:24:28 AM
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আমেরিকার মতো উন্নত দেশেও আড়াই কোটির বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কিডনি রোগ সঙ্গে নিয়ে বাস করছেন। এবং ভয়ংকর তথ্য হচ্ছে, এর মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ জানে যে, তাদের কিডনি সমস্যগ্রস্ত।

আমাদের দেশেও কিডনি রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ২০১৬ সালে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুইটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালের জরিপ অনুযায়ী আমাদের দেশে প্রতি সাতজনের মধ্যে একজন কিডনি রোগে আক্রান্ত।

কিডনি রোগ এমনই মারাত্মক যা কোনো প্রকার সরব লক্ষণ বা উপসর্গ ছাড়া খুব ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করে। কখনো কখনো রোগী কোনো উপসর্গ বুঝে ওঠার আগেই তার কিডনির শতকরা ৫০ ভাগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

তাই কিডনি রোগের নীরব লক্ষণগুলো জেনে রাখা জরুরি। জেনে নিন কিডনির বড় ধরনের সমস্যার ৭টি নীরব লক্ষণ। এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ত্বকে অস্বাভাবিক ফুসকুড়ি বা চুলকানি
কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বের করে খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে। যখন কিডনি রক্তের পুষ্টি উপাদান ও খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেনা তখন আপনার ত্বক শুষ্ক ও ফেটে যেতে পারে যা কিডনি রোগের অন্যতম বড় নীরব লক্ষণ। তাছাড়া কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়লে রক্তে ক্রমাগত বর্জ্য পদার্থ বাড়তে থাকে। এটি ত্বকে চুলকানি এবং র্যা শ তৈরি করতে পারে, যা সাময়িক চিকিৎসা দিয়ে সামান্য পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

মুখের স্বাদ নষ্ট হওয়া
সুস্থ কিডনি সাধারণত ব্লাড কোষগুলোকে শরীরের ভেতরে রেখে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ মূত্র হিসেবে বের করে দেয়। যখন কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন রক্তধারায় বিষাক্ত পদার্থ জমা হতে থাকে যা মুখে দুর্গন্ধ ও বিস্বাদ তৈরি করে। এছাড়া জিহবা ভারী হয়ে যায়। কোন কোন রোগী মাংসের স্বাদ আর আগের মতো পায় না।

বমি বা বমি বমি ভাব
কিডনি অকার্যকারিতার কারণে রক্তে যথেষ্ট বর্জ্য পদার্থ বেড়ে যাওয়ায় বমি বমি ভাব বা বমির সম্মুখীন হতে পারেন। বমি বমি ভাব আপনার ক্ষুধামন্দা সৃষ্টি করতে পারে। এটা যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য ঘটতে থাকে, তাহলে আপনার ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।

অপ্রয়োজনীয় প্রস্রাবের বেগ অনুভব
কিডনি রোগের একটি বড় লক্ষণ হল, প্রস্রাবের সময়সূচি পরিবর্তন হওয়া। কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাব বেশি হয় বা কম হয়। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে লক্ষণ হিসেবে দেখা গেছে, প্রস্রাবের বেগ আসলেও প্রস্রাব সামান্য হয়। আবার কিছু মানুষের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি প্রস্রাব হয়। অনেকে জানিয়েছেন, বিশেষ করে রাতের বেলা প্রস্রাবের অস্বাভাবিক সময়সূচি দেখা দেয়।

প্রস্রাবে পরিবর্তনসমূহ
কম অথবা বেশি প্রস্রাবের লক্ষণ ছাড়াও প্রস্রাবের নিজেরও কিছু পরিবর্তন লক্ষণীয়। যেমন-
* প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া
* স্বাভাবিকের চেয়ে প্রস্রাবের রঙ গাঢ় বা হালকা হওয়া
* প্রস্রাবে বেশি ফেনা বা বুদবুদ দেখা দেওয়া

যখন কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন ব্লাড কোষ বের হতে শুরু করে, ফলে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। কিডনির ফিল্টার ড্যামেজ হয়ে গেলে অ্যালবুমিন নামক প্রোটিন লিক হয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে বেড়িয়ে যায়, ফলে বেশি ফেনা বা বুদবুদ তৈরি হয়।

গোড়ালি, পা, পায়ের পাতা বা মুখ ফোলা ভাব
কিডনির আরেকটি কাজ হলো শরীর থেকে বাড়তি তরল বের করে দেয়। কিডনিতে সমস্যা হলে এই বাড়তি তরল বের হতে সমস্যা হয়। বাড়তি তরল শরীরে ক্রমাগত জমার ফলে গোড়ালি, পা, পায়ের পাতা, মুখ, এবং হাতে ফোলাভাব তৈরি করে।

ক্লান্তি এবং অবসাদ
কিডনির কর্মক্ষমতা যখন মারাত্মকভাবে কমে যায় তখন রক্তে অপদ্রব্য হিসেবে বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন হয়। এর ফলে আপনি দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভব করেন এবং কোনো বিষয়ে মনোযোগ দেয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আরেকটা জটিলতা দেখা দিতে পারে, আর তা হচ্ছে এনেমিয়া বা রক্তস্বল্পতা। এছাড়া শীত শীত অনুভব হওয়া, শ্বাসের সমস্যা হওয়া (ছোট ছোট করে শ্বাস নেওয়া) ইত্যাদি কিডনি সমস্যার অন্যতম লক্ষণ।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট