Daffodil International University
Faculties and Departments => Allied Health Science => Topic started by: tahmina on May 29, 2019, 02:35:07 PM
-
বাইরের পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ঠিক রাখতে চেষ্টা করে। দেহের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ত্বকের শিরাগুলো প্রসারিত হয়ে অতিরিক্ত তাপ বাইরের পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া ঘামের মাধ্যমেও শরীর শীতল হয়। প্রচণ্ড গরমে অতিরিক্ত ঘামার কারণে শরীর পানি ও লবণ হারায়। ফলে শারীরিক দুর্বলতা, ক্লান্তি, মাথা ঝিমঝিম করা, মাংসপেশিতে ব্যথা, প্রচণ্ড পিপাসা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। এ অবস্থার নাম ‘হিট ক্র্যাম্প’ বা ‘হিট এক্সোশন’। প্রচণ্ড গরমে ও আর্দ্র পরিবেশে বেশি সময় অবস্থান করলে বা বেশি পরিশ্রম করলে অনেক সময় শরীরের পক্ষে তাপ নিয়ন্ত্রণ করা আর সম্ভব হয় না। ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে উঠে যায়। একে বলে ‘হিট স্ট্রোক’।
হিট স্ট্রোকে ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যায়, শরীরের ঘাম বন্ধ হয়ে যায়। নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত হয়। রক্তচাপ ও প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়। খিঁচুনি হতে পারে। রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। হিট স্ট্রোকের কারণে জীবনসংশয়ও হতে পারে।
কাদের ঝুঁকি বেশি
প্রচণ্ড গরমে ও আর্দ্র পরিবেশে যেকোনো ব্যক্তিরই হিট স্ট্রোক হতে পারে। তবে প্রখর রোদে খোলা মাঠে যাঁরা কায়িক পরিশ্রম করেন, যেমন কৃষক, শ্রমিক, রিকশাচালক, তাঁদের হিট স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বেশি। প্রখর রোদে পথচারী দীর্ঘ সময় হাঁটাহাঁটি করলে বা স্কুলের ছেলেমেয়েরা রোদে স্কুলের মাঠে খেলাধুলা করলেও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি আছে। কারখানা বা ঘরের ভেতর যাঁরা গরম ও আর্দ্র পরিবেশে দীর্ঘক্ষণ কাজ করেন (যেমন পোশাককর্মী) তাঁদেরও হিট স্ট্রোক হতে পারে। শিশু ও বৃদ্ধদের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা এমনিতেই কম, তাই তাঁরা বেশি ঝুঁকিতে আছেন। স্থূলতা, কিছু ওষুধ, যেমন অ্যান্টিহিস্টামিন, মানসিক রোগের ওষুধ ঝুঁকি বাড়ায়।
করণীয়
হিট স্ট্রোক হলে রোগীকে দ্রুত যথাসম্ভব ঠান্ডা পরিবেশে নিয়ে যান। পরনের কাপড় খুলে পানি দিয়ে শরীর ভিজিয়ে ফ্যান বা এসি ছেড়ে দিন। প্রয়োজনে কিছুক্ষণ ভেজা কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখুন। বগলে ও কুঁচকিতে বরফ দিন। রোগীর জ্ঞান থাকলে তাঁকে পানি ও খাওয়ার স্যালাইন খেতে দিন। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যেতে পারে। গরমে যথাসম্ভব ঘরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন। বাইরে যেতে হলে পাতলা ঢিলেঢালা সুতি জামাকাপড় পরুন এবং ছাতা বা ক্যাপ ব্যবহার করুন। প্রচুর পানি পান করুন। বেশি ঘামলে খাওয়ার স্যালাইনও পান করতে পারেন। রোদে কাজ করতে হলে মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নিন এবং পানি, ফলের রস ও স্যালাইন পান করুন। চা বা কফি কম খাবেন, এগুলো শরীরের তাপ বাড়ায়। এই প্রচণ্ড গরমে যাঁরা দীর্ঘ যাত্রা করে ঈদে বাড়ি যাবেন, তাঁরা এ বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ: বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ
-
Nice post.