Daffodil International University
Faculty of Allied Health Sciences => Pharmacy => Topic started by: farjana aovi on June 11, 2019, 11:13:57 AM
-
ছোট–বড় প্রায় সবারই প্রিয় ফল লিচু। কিন্তু ইদানীং লিচু নিয়ে বেশ কিছু প্রচারণা আছে। মাঝেমধ্যে লিচু খেয়ে শিশুর মৃত্যু হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় লিচু খাওয়ার কারণে মস্তিষ্কে প্রদাহ হওয়ার মতো ঘটনা উঠে এসেছে। একিউট এনকেফালাইটিস সিনড্রম নামে এই জটিল সমস্যার একটি কারণ হতে পারে লিচু টক্সিসিটি বা একিউট হাইপোগ্লাইসেমিক টক্সিক এনকেফালোপ্যাথি। কিন্তু তাই বলে লিচু খেলেই শিশুরা এই গুরুতর রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবে, তা–ও নয়। গুজব, বিভ্রান্তি আর ভুল ধারণার বদলে বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা ও সমাধান জানাটা জরুরি।
লিচুতে কিছু টক্সিন সত্যিই থাকে, যেমন হাইপোগ্লাইসন এ, এমসিপিজি ইত্যাদি। এরা আমাদের যকৃতে গ্লুকোজ উৎপাদন ও চর্বি ভাঙতে বাধা দেয়। শিশুরা যদি রাতে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে বা অনেকক্ষণ না খেয়ে থেকে খালি পেটে হঠাৎ অনেকগুলো লিচু খেলে বিপত্তি হতে পারে। বিশেষ করে যেসব শিশু খুব হালকা–পাতলা ও অপুষ্টির শিকার এবং ২ থেকে ১০ বছর বয়সী—তাদেরই ঝুঁকি বেশি। এই রাসায়নিকগুলোর প্রভাবে শিশুর শরীরে হঠাৎ করে গ্লুকোজের অভাব দেখা দেয়। এই টক্সিনগুলো মস্তিষ্কে চলে যায়। মেটাবলিক এসিডোসিস দেখা দেয়। ফলে মাথাব্যথা, বমি, ঘাম, খিঁচুনি, অচেতন হয়ে পড়তে পারে। আধা পাকা ও কাঁচা লিচুতে এই সমসা হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
Source:ডা. শাওলী সরকার
সচেতন থাকুন
লিচু খাওয়া নিষেধ নয়। লিচু বেশ পুষ্টিকর ও মজাদার ফল। কিন্তু খালি পেটে অনেক লিচু খাওয়া ঠিক নয়। বিশেষ করে শিশুদের, কারণ তাদের দেহের বিপাকক্রিয়া পরিপক্ব নয়।
কাঁচা বা আধ পাকা লিচু গাছ থেকে পেড়ে খাওয়া উচিত নয়।
ঠিক কতটি লিচু খেলে এই বিষক্রিয়া হবে, তা এখনো জানা নেই। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, ভরা পেটে বা খাবার গ্রহণের পর একসঙ্গে ৫–৭টি লিচু খাওয়া নিরাপদ।
লিচুর খোসা শিশুরা যেন মুখে পুরে না চোষে, সেদিকে খেয়াল করবেন। কেননা, এতে অনেক সময় কীটনাশক বা বাদুড়ের লালা লেগে থাকতে পারে। শিশুদের খোসা ছাড়িয়ে বাটিতে পরিমিত লিচু পরিবেশন করুন।
আক্রান্ত শিশুকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তর করে দ্রুত গ্লুকোজ প্রতিস্থাপন, খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণ, শরীরে লবণ–পানির ভারসাম্য রক্ষা এবং রক্তের পিএইচ মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে। অন্য কোনো রোগ বা বিষক্রিয়া আছে কি না, তা–ও খতিয়ে দেখতে হবে।
সহকারী অধ্যাপক, শিশু নিউরোলজি বিভাগ, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, ঢাকা