Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Pharmacy => Topic started by: aklima.ph on June 27, 2019, 11:44:12 AM

Title: ঢাকার স্কুলশিশুদের ‘৯৫ শতাংশের দেহে উচ্চ মাত্রার নিকোটিন’
Post by: aklima.ph on June 27, 2019, 11:44:12 AM
পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ঢাকার স্কুলপড়ুয়া শিশুদের ৯৫ শতাংশের দেহে উচ্চ মাত্রার ‍নিকোটিনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে একটি গবেষণার বরাত দিয়ে জানিয়েছে তামাকবিরোধী সংগঠন প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা)।

বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবসের আগের দিন বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরেছে তারা।

প্রজ্ঞার বিবৃতিতে বলা হয়, “তামাক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে শিশু যক্ষ্মা রোগী উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৭ সালে এই হার বেড়ে ৪.৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০১৩ সালে ছিল মাত্র ২.৮ শতাংশ।

“সাম্প্রতিক এক গবেষণায় রাজধানী ঢাকার প্রাথমিক স্কুলে পড়া ৯৫ শতাংশ শিশুর দেহে উচ্চমাত্রার নিকোটিন পাওয়া গেছে, যার মূল কারণ পরোক্ষ ধূমপান।”

গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখনও তিন কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে।

গবেষণার তথ্য তুলে ধরে প্রজ্ঞার বিবৃতিতে বলা হয়, “কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৮১ লাখ মানুষ। এমনকি বাড়িতেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে ৪ কোটি ৮ লাখ মানুষ এবং এক্ষেত্রে নারীরা আক্রান্ত হচ্ছে অনেক বেশি। “

বিবৃতিতে বলা হয়, তামাক ব্যবহারের ফলে প্রতি বছর বিশ্বে ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায় । আর পরোক্ষ ধূমপানের কারণে মারা যায় ১০ লাখ মানুষ, যার বড় একটি অংশ শিশু।

“ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্র সংক্রান্ত অসুস্থতা বিশ্বব্যাপী অকাল মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এবং গোটা বিশ্বে মৃত্যুর ৫টি শীর্ষস্থানীয় কারণের মধ্যে ২টিই ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্র সংক্রান্ত জটিলতা।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগ।

ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্র জটিলতার সঙ্গে তামাক সেবনের সম্পর্ক বিষয়ে জনসাধারণ এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ব্যাপক পরিসরে সচেতনতা তৈরিতে এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে ‘টোবাকো অ্যান্ড লাং হেলথ’।

এই প্রতিপাদ্য অনুসরণ করে বাংলাদেশে বিশ্ব তামাক দিবসের স্লোগান করা হয়েছে,  ‘তামাকে হয় ফুসফুস ক্ষয়, সুস্বাস্থ্য কাম্য তামাক নয়’।

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসকে সামনে রেখে ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকপণ্যের দাম বাড়িয়ে ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানিয়েছে প্রজ্ঞা।

এ বিষয়ে প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কার্যকর কর ও মূল্য পদক্ষেপের অভাবে বাংলাদেশে তামাকপণ্যের দাম অত্যন্ত কম। ফলে দেশের তরুণ এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী খুব সহজেই তামাক ব্যবহার শুরু করতে পারে।

“স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যই আসন্ন বাজেটে কার্যকর কর আরোপের মাধ্যমে তামাকপণ্যের দাম জনগণ, বিশেষ করে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে।”

গৃহস্থালি, কর্মস্থল, গণপরিবহনসহ সব ধরনের পাবলিক প্লেসে পরোক্ষ ধূমপানের প্রকোপ কমানো না গেলে ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্র সংক্রান্ত জটিলতা এবং মৃত্যু হ্রাস করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন তিনি।

“এক্ষেত্রে সকল পাবলিক প্লেস থেকে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করাসহ বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ বাস্তবায়নের মাধ্যমে তামাক কোম্পানির আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে,” বলেন জুবায়ের।

১৯৮৭ সাল থেকে প্রতিবছর ৩১ মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং এর সহযোগী সংস্থাগুলো তামাকের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তুলে ধরে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ণের লক্ষ্যে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালন করে আসছে।
Source: https://bangla.bdnews24.com/health/article1627918.bdnews