Daffodil International University
Help & Support => Common Forum/Request/Suggestions => Topic started by: thowhidul.hridoy on July 15, 2019, 11:49:44 AM
-
যদি এতটুকু মনে রাখা হয় যে, ইসলাম এবং নৈতিক চরিত্র একই তারে বাঁধা এবং নৈতিক চরিত্র গঠন ও পরিশুদ্ধিই ইসলামের প্রাণবন্ত রূপ। তাহলে এমন এক জীবনপরিক্রমায় উপনীত হওয়া যাবে, যেখানে ইহলৌকিক মঙ্গল ও পারলৌকিক সাফল্য আছে। আর আছে বলেই রাসূল সা. উদাত্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন, রোজ কিয়ামতে মুমিনদের দাঁড়িপাল্লায় উত্তম নৈতিক চরিত্র অপেক্ষা ভারী জিনিস আর কিছুই হবে না।
আর যে ব্যক্তি নিরর্থক, অশ্লীল ও নিকৃষ্ট ধরনের কথাবার্তা বলে, আল্লাহপাক তাকে মোটেই পছন্দ করেন না; বরং তাকে ঘৃণা করেন। এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে এই যে, ঈমান এবং নৈতিক চরিত্রের মাঝে এমন এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে, যার একটিকে বাদ দিয়ে অপরটি কল্পনা করা যায় না। ঈমানদার ব্যক্তি অবশ্যই দুনিয়ার পবিত্র চরিত্রের অধিকারী হবে। এই চরিত্রই রোজ কিয়ামতের দাঁড়িপাল্লায় সবচেয়ে ভারী বস্তু বলে প্রতিষ্ঠিত হবে।
এতে এই দিকনির্দেশনাও লাভ করা যায় যে, মুমিন ব্যক্তিমাত্রই উত্তম নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হবে। আর এটাই আল্লাহপাকের সস্তুষ্টি ও রেজামন্দির কারণ। তারা এমন আল্লাহভীরু হবে যে, জীবন চলার পথে তারা অনর্থক ও অশ্লীল কথাবার্তা বলবে না। কেননা অশ্লীল কথাবার্তা ও আচার-আচরণ ঈমানের বিপরীত দিকে অবস্থান করে।
মানুষের মুখের কথা যেমন তার অন্তরের গোপন অবস্থাকে প্রকাশ করে তেমনি বাহ্যিক আবরণকেও প্রভাবান্বিত করে। মানুষ যা বলে তার অভিব্যক্তি এই প্রতিবিম্বকে সমুদ্ভাসিত করে তোলে। ঈমানদার তাই এমন কোনো কাজ বা অনুষ্ঠানে আত্মনিয়োগ করে না, যা তার উভয় দিকের সর্বনাশ করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি হতে দূরে সরিয়ে দেয়।
দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানেই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা ঈমানের চাহিদা। এই চাহিদা পরিপূরণ করার লক্ষ্যে অপ্রয়োজনীয় ও বেহুদা বাক্যালাপ পরিত্যাগ করাই বুদ্ধি ও বিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ বলে গণ্য হবে।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমাদের মাঝে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে তারাই যাদের নৈতিক চরিত্র তোমাদের সবার চেয়ে উত্তম। মানুষের প্রকৃত মর্যাদা ও অধিষ্ঠান নির্ণীত হয় সততা, নিষ্ঠা ও একান্ত আন্তরিকতাপূর্ণভাবে নির্দেশ পালনের মাধ্যমে।
দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদনে তারাই সর্বদা তৎপর থাকেন, যারা নৈতিক দৃঢ়তা ও নিষ্ঠার ভাব বজায় থাকুক এ অনুযায়ী কর্ম সম্পাদন করেন। এটাই রাসূল সা.-এর শিক্ষার মর্মকথা। উত্তম নৈতিকতার দ্বারাই এর ভিত্তি রচিত হয়। তাদের পরিচয় কোরআনে বহু স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে প্রদান করা হয়েছে। যারা রাসূল সা.-এর সাথী ও সহচর, তারা কোনোক্রমেই অবিশ্বাস কুফরিকে সহ্য করতে পারেন না। তাদের মাঝে পাওয়া যায় পরস্পর দয়া, স্নেহ ও অনুকম্পার মূর্ত প্রকাশ। একই সাথে তারা রুকু ও সিজদাহ সহকারে আল্লাহপাক ও তার রাসূলের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে থাকে। তাদেরকেই আল্লাহপাক বিভিন্ন নিয়ামতে ভ‚ষিত করেছেন।
হযরত আয়েশা রা. বলেন, রাসূল সা. বলেছেন, নিশ্চয়ই মুমিন ব্যক্তি তার উত্তম চরিত্রের সাহায্যে সেইসব লোকের মতো সম্মান ও মর্যাদা লাভ করবে, যারা রাতভর নফল নামাজ পড়ে এবং সর্বদা দিনের বেলা রোযা রাখে। নফল রোযা ও নফল নামাজ আদায় অধিক পুণ্য লাভের উপায়, যা সহজেই বোঝা যায়। বান্দা যখন উত্তম নৈতিকতার অধিকারী হয় তখন দীর্ঘ সাধনাপ্রসূত নফল ইবাদাতসমূহ তার সহজাত প্রবৃত্তিতে পরিণত হয়ে যায়।