Daffodil International University

Help & Support => Common Forum/Request/Suggestions => Topic started by: thowhidul.hridoy on July 21, 2019, 11:46:21 AM

Title: বুড়ো হওয়ার ছবিতে বিপদের আশঙ্কা !!
Post by: thowhidul.hridoy on July 21, 2019, 11:46:21 AM
বেশ সাড়া ফেলেছে ‘ফেসঅ্যাপ’। এই অ্যাপের মাধ্যমে তরুণ কিংবা বৃদ্ধ বয়সের ছবি বানানো যাচ্ছে। সেই ছবি আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করে আনন্দও শেয়ার করছে মানুষ। সেই আনন্দের মাঝে ক্রমেই দানা বাঁধছে আশঙ্কা। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- এতে ফোনের সব ছবি চুরি বা ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে না তো?

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এডিটিংয়ের এই অ্যাপটি যখন ভাইরাল হয়েছে, তখন থেকে কিছু মানুষ এর শর্তাবলী নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা অভিযোগ করেছেন যে, ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নিয়ম বহির্ভূতভাবে উপাত্ত সংগ্রহ করছে অ্যাপটি।
সম্প্রতি অ্যাপ ডেভেলপার জশুয়া নজি এক টুইট বার্তায় অভিযোগ করেন, ফেসঅ্যাপ অনুমতি না নিয়েই ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনের সংরক্ষিত ছবি আপলোড করছে।

যেখানে দেখা দিয়েছে আশঙ্কা:

মার্কিন আইনজীবী এলিজাবেথ পটস ওয়েনস্টেইন বলেন, অ্যাপটির শর্তাবলীর মধ্যে একটি হচ্ছে, ব্যবহারকারীর ছবি বাণিজ্যিক কাজে লাগাতে পারবে তারা। যেমন, ফেসঅ্যাপের নিজস্ব বিজ্ঞাপন তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিষয়ক আইনজীবী প্যাট ওয়ালশের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসঅ্যাপের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার শর্তে আছে- বিজ্ঞাপনের জন্য কিছু কিছু সময়ে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে। এমনভাবে কাজটি করা হয়েছে যে, পদ্ধতিটি আসলে স্পষ্ট নয়।
আইনজীবী প্যাট ওয়ালশ বলেন, এসব কারণেই মানুষ তাদের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ পেতে ব্যর্থ হয়। আর এজন্যই অনেকের কাছে এটাই হচ্ছে মূল চিন্তার বিষয়।
ফেসঅ্যাপের প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ওয়্যারলেস ল্যাব কোম্পানি। এটি একটি রাশিয়ার প্রতিষ্ঠান। যাদের অফিস রয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গে। তবে ফেসঅ্যাপের যে সার্ভারে ব্যবহারকারীদের ছবি সংরক্ষিত হয় সেটি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। ফলে অনেকে মনে করছেন ফেসঅ্যাপের মাধ্যমে তথ্য চুরির সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ রুশ গোয়েন্দাদের সুখ্যাতি বা কুখ্যাতি সর্বজনবিদিত।
এর আগে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফেসবুকের কোটি কোটি গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগটি ওঠে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। সে সময় বিভিন্ন অ্যাপ ও গেমসের মাধ্যমে এই তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, অনেকেই যেটা আশঙ্কা করছেন, তা হলো এই অ্যাপ ফোনের সব ছবি নিজেদের সার্ভারে আপলোড করছে কিনা।
মার্কিন সেনেটর চাক শুমার এফবিআইকে বলেছেন ফেসঅ্যাপ তদন্ত করে দেখতে। এছাড়া মার্কিন ক্রেতা সুরক্ষা সংস্থা এফটিসিকে দিয়ে জাতীয় পর্যায়ের তদন্ত করতে বলা হয়েছে।

কীভাবে কাজ করছে ‘ফেসঅ্যাপ’?

‘ফেসঅ্যাপ’ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ইয়ারোসলাভ গনশারভ জানিয়েছেন, যে ছবিগুলি এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য বেছে নেওয়া হয়, সেগুলি আপলোড হয় সংস্থার সার্ভারে। তারপর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সার্ভার থেকে সেই ছবি মুছে ফেলা হয়। তাদের সার্ভারে ওই ৪৮ ঘণ্টার জন্যও যদি কেউ নিজের ছবি না রাখতে চান, তারও ব্যবস্থা আছে ‘ফেসঅ্যাপে’। এ জন্য অ্যাপটির সেটিং-এর সাপোর্ট অপশনে গিয়ে সাবজেক্ট লাইনে ইংরেজিতে ‘প্রাইভেসি’ লিখেতে হবে। তা হলেই সার্ভার থেকে ছবি মুছে ফেলার অনুরোধ জমা পড়বে সংস্থার কাছে।
এক বিবৃতিতে ‘ফেসঅ্যাপ’বলছে, ব্যবহারকারীদের আপলোড করা ছবি ক্লাউডে সংরক্ষণ করা হয়। এর কারণ হচ্ছে, যাতে ব্যবহারকারীকে প্রতিবার এডিটের সময় আলাদা আলাদা করে ছবি আপলোড করতে না হয়।

আশঙ্কার বিষয়ে কী বলছে ‘ফেসঅ্যাপ’:

অ্যাপটির প্রধান নির্বাহী গনশারভ জানান, ফেসঅ্যাপ এডিটিংয়ের জন্য শুধু গ্রাহকের সরবরাহ করা ছবিই ব্যবহার করে। বেশিরভাগ ছবিই আপলোডের ৪৮ ঘণ্টা পর সার্ভার থেকে ডিলিট করে দেওয়া হয়।
গনশারভ বলেন, ‘এই অ্যাপ শুধুমাত্র সেই ছবিগুলোই সার্ভারে আপলোড করে, যেগুলো আপনি বেছে দিচ্ছেন। এর বাইরে আমরা আর কোন ছবি স্থানান্তর করি না। ফেসঅ্যাপ যেহেতু ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে তথ্য মুছে ফেলার অনুরোধ বাস্তবায়ন করে তাই প্রতিষ্ঠানটির সাপোর্ট টিম খুবই ব্যস্ত সময় পার করে।’
রাশিয়ার বিষয়ে কথা ওঠায় ফেসঅ্যাপ এক বিবৃতিতে জানায়, ব্যবহারকারীদের তথ্য রাশিয়ায় পাঠানো হয় না। তাই ফোনের সব ছবি চুরি হয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগই নেই।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফরাসি এক সাইবার নিরাপত্তা গবেষক যিনি ইলিয়ট অ্যালডারসন ছদ্মনাম ব্যবহার করেন, তিনি দাবি করেন, এ ধরনের বড় মাপের কোন আপলোডিং হয় না। ব্যবহারকারীরা যে ছবি জমা দিতে রাজি হয় সেসব ছবি নিয়েই কাজ করে এই অ্যাপটি।
যুক্তরাজ্যের তথ্য কমিশনারের দফতর বিবিসি নিউজকে জানায়, আমরা মানুষদের বলবো যেকোনো অ্যাপে সাইন আপ করার সময় তাদের ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে ব্যবহার করা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত না জেনে ব্যক্তিগত তথ্য না দেওয়া।

সব শেষে বলা যায়, গোটা বিশ্বে যখন প্রাইভেসি বা তথ্যের গোপনীয়তা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে, তখন এই অ্যাপটিওতে যে আশঙ্কা থাকবে না তার কতটুকু গ্যারান্টি আছে?