Daffodil International University

Entrepreneurship => Successful Entrepreneur => Agriculture => Topic started by: Kazi Sobuj on December 23, 2019, 10:43:02 AM

Title: খামার থেকে জ্বালানির জোগান
Post by: Kazi Sobuj on December 23, 2019, 10:43:02 AM
খামার থেকে জ্বালানির জোগান

(https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/640x360x1/uploads/media/2019/12/23/d95492c526c7c78a3074138545254c94-5e003e62db450.jpg)

লোকালয়ে লেয়ার মুরগির খামার করে বিপাকে পড়েছিলেন খামারি নাছির উদ্দিন। মুরগির বিষ্ঠার গন্ধে স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে থানায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে অভিযোগ করেন। তখন তাঁর খামারটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। পরে এক প্রকৌশলীর পরামর্শে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৫ ঘনমিটারের একটি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরি করেন খামারে। সেখানে এখন মুরগির বিষ্ঠা থেকে বায়োগ্যাস তৈরি হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন বিষ্ঠার গন্ধ থেকে মুক্তি মিলেছে, অন্যদিকে নিজের গ্রামের মানুষজনের জ্বালানির জোগান দিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

সীতাকুণ্ড পৌর সদরের দক্ষিণ মহাদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা নাছির উদ্দিনের বর্তমানে তিনটি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট রয়েছে। একটিতে ১৫০ ঘনমিটার, অন্য দুটি যথাক্রমে ৩৫ ও ২০ ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে।


নাছির উদ্দিন জানিয়েছেন, সৈয়দপুর, বাড়বকুণ্ড ও সীতাকুণ্ড পৌর সদরের দক্ষিণ মহাদেবপুর ও ইদিলপুরে লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির আটটি খামার রয়েছে। এসব খামারের মুরগি বিষ্ঠাই হলো বায়োগ্যাসের কাঁচামাল। খামারগুলো রক্ষণাবেক্ষণে ১৫-২০ জন শ্রমিক কাজ করেন। বায়োগ্যাস বিক্রির টাকা থেকেই তাঁদের বেতন পরিশোধ করেন তিনি।

এ তিনটি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণে তাঁর ব্যয় হয়েছিল অর্ধকোটি টাকার মতো। বর্তমানে ছোট দুটি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট উৎপাদিত গ্যাস ব্যবহার করছে ৬০টি পরিবার—যা থেকে আয় হয় মাসে ৫০ হাজার টাকা। নতুন প্ল্যান্ট থেকে অন্তত ২০০ পরিবারে গ্যাস সরবরাহ করার ক্ষমতা থাকলেও বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস বিক্রি শুরু করেননি তিনি।

নাছির উদ্দিন বলেন, ১৯৯৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা পাশের পর আর পড়াশোনা না করে মুদি দোকান দেন তিনি। ১৯৯৭ সালে মাত্র ৫০০টি ব্রয়লার মুরগি দিয়ে খামার শুরু করেন। ধীরে ধীরে তার আয় বাড়তে থাকে। বাড়াতে থাকেন খামার। ২০০৭ সালে দেশে বার্ড ফ্লু রোগ দেখা দেয়। বার্ড ফ্লুর কারণে লেয়ার মুরগির খামার বন্ধ করে দিচ্ছিলেন খামারিরা। সে সময় তিনি এক বিক্রেতাকে দুই হাজার লেয়ার মুরগির বাচ্চার ফরমাশ দিলে বিক্রেতা পাঠিয়ে দেন ছয় হাজার বাচ্চা। সুবিধামতো সময়ে দিতে টাকা পরিশোধের সময় দেন তাঁকে। এতে তাঁর ব্যবসার অনেক লাভ হয়। এভাবেই তিনি শুরু করেন লেয়ার মুরগির খামার।

বর্তমানে নাছির উদ্দিন বাড়বকুণ্ড বেড়িবাঁধ এলাকায় চারতলাবিশিষ্ট মুরগির খামার তৈরি করছেন। ২০১৬ সাল থেকে তিনি খামারটি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। এর মধ্যে দুইতলার কাজ শেষ হয়েছে। পুরোপুরি কাজ শেষ করতে পারলে খামারে ৪০ হাজার লেয়ার মুরগির জায়গা হবে। বর্তমানে সেখানে তিনি ১০ হাজার মুরগির খামার চালু করেছেন।

খামারটির দক্ষিণ পাশেই ৩০ ফুট গভীর ও ৩০ ফুট ব্যাসের বায়োগ্যাস প্লান্টের অবস্থান। ৪০ হাজার মুরগির বিষ্ঠা ওই ট্যাংকে দিতে পারলে দৈনিক ১৫০ ঘনমিটার বায়োগ্যাস উৎপাদিত হবে। এখনো সেখানে বায়োগ্যাস উৎপন্ন হচ্ছে। এর পাশাপাশি প্ল্যান্ট থেকে বের হওয়া পানি স্থানীয় কৃষকেরা জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করছেন।

নাছিরের বায়োগ্যাস ব্যবহার করেন সীতাকুণ্ড পৌর সদরের বাসিন্দা রাজিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, পাঁচ বছর আগে তাদের পাঁচটি ভাড়া ঘরে নাছিরের বায়োগ্যাস সংযোগ দেন। প্রতিটি চুলায় এক হাজার টাকা করে দিতে হয়। সব সময় গ্যাসের চাপ ঠিক থাকলেও অতিরিক্ত শীত ও ভারী বৃষ্টি হলে গ্যাসের চাপ কিছুটা কমে যায়।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শাহজালাল মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, যাঁরা খামারি রয়েছেন তাঁরা নাছিরের বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট অনুসরণ করলে পরিবেশদূষণ বন্ধ হবে।

সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. তাশারফ হোসেন বলেন, প্লাস্টিকের পাইপের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা অত্যন্ত
ঝুঁকিপূর্ণ। গ্যাসলাইন হতে হবে লোহার পাইপের। এ পাইপ নিতে হবে মাটির নিচ দিয়ে। এতে ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।


Source: https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1630712/%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A5%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8