Daffodil International University
General Category => Common Forum => Topic started by: Mst. Eshita Khatun on February 20, 2020, 12:41:22 PM
-
আমাদের চারপাশের বাতাস একেবারে বিশুদ্ধ নয় কখনোই। এতে থাকতে পারে বিভিন্ন রোগের জীবাণু, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধূলিকণা, ফুলের রেণু, ক্ষতিকর কিছু গ্যাস, ধোঁয়া, সিসা ইত্যাদি। নিশ্বাসের সঙ্গে এগুলো শরীরে প্রবেশ করলে রোগজীবাণুর কারণে সর্দিকাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সার্স, করোনাভাইরাসজনিত অসুখ হতে পারে। ধূলিকণা, ফুলের রেণু, ধোঁয়া—এগুলোর জন্য হতে পারে শ্বাসনালি ও ফুসফুসের প্রদাহ, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, হাঁচি, কাশি। সিসার কারণে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। শিশুর বুদ্ধিমত্তা কমে যেতে পারে। দেখা দিতে পারে আচরণগত সমস্যা। বাতাসে ভাসমান ধুলা-ধোঁয়ার এসব ক্ষতিকর পদার্থ থেকে নিজেকে কিছুটা রক্ষা করতে ব্যবহার করা যেতে পারে মুখোশ বা মাস্ক। যা ব্যবহার করলে প্রাথমিকভাবে এসব থেকে রেহাই মিলতে পারে।
কাদের মাস্ক ব্যবহার করা উচিত
মাস্ক ব্যবহারেও সতর্ক থাকতে হবে। মডেল: নোমান, ছবি: কবির হোসেন
মাস্ক ব্যবহারেও সতর্ক থাকতে হবে। মডেল: নোমান, ছবি: কবির হোসেন
আমাদের চারপাশের বাতাস একেবারে বিশুদ্ধ নয় কখনোই। এতে থাকতে পারে বিভিন্ন রোগের জীবাণু, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধূলিকণা, ফুলের রেণু, ক্ষতিকর কিছু গ্যাস, ধোঁয়া, সিসা ইত্যাদি। নিশ্বাসের সঙ্গে এগুলো শরীরে প্রবেশ করলে রোগজীবাণুর কারণে সর্দিকাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সার্স, করোনাভাইরাসজনিত অসুখ হতে পারে। ধূলিকণা, ফুলের রেণু, ধোঁয়া—এগুলোর জন্য হতে পারে শ্বাসনালি ও ফুসফুসের প্রদাহ, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, হাঁচি, কাশি। সিসার কারণে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। শিশুর বুদ্ধিমত্তা কমে যেতে পারে। দেখা দিতে পারে আচরণগত সমস্যা। বাতাসে ভাসমান ধুলা-ধোঁয়ার এসব ক্ষতিকর পদার্থ থেকে নিজেকে কিছুটা রক্ষা করতে ব্যবহার করা যেতে পারে মুখোশ বা মাস্ক। যা ব্যবহার করলে প্রাথমিকভাবে এসব থেকে রেহাই মিলতে পারে।
কাদের মাস্ক ব্যবহার করা উচিত
যাঁদের ধুলাবালু, ফুলের রেণু ইত্যাদিতে অ্যালার্জি আছে, তাঁরা মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালার্জি কমবে। যাঁরা সর্দি–কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সার্স, করোনাভাইরাসজনিত অসুখ, যক্ষ্মা, ডিফথেরিয়া ইত্যাদির রোগী, তাঁরা মাস্ক ব্যবহার করবেন। এর ফলে তাঁদের হাঁচি–কাশির মাধ্যমে রোগজীবাণু বাতাসে ছড়ানোর সুযোগ পাবে না। তাতে আশপাশের লোকজন থাকবেন নিরাপদ। কোনো এলাকায় সর্দিকাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হলে রোগীদের আশপাশে থাকা সুস্থ লোকজনও মাস্ক ব্যবহার করবেন, যেন নিশ্বাসের সঙ্গে বাতাসে ছড়িয়ে থাকা রোগজীবাণু শ্বাসনালিতে প্রবেশ করতে না পারে।
কোন মাস্ক ভালো
বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাস্ক পাওয়া যায়। দুই কানের সঙ্গে আটকে রাখার জন্য ফিতা বা ইলাস্টিক ব্যান্ডযুক্ত সার্জিক্যাল মাস্ক ও রেসপিরেটর মাস্ক। সার্জিক্যাল মাস্কগুলো সাধারণত চ্যাপ্টা, চারকোনাকার। আর রেসপিরেটর মাস্কগুলো তিন কোনার, সামনের দিকটি নাকে ফিট হওয়ার জন্য একটু উঁচু। সার্জিক্যাল মাস্কের চেয়ে রেসপিরেটর মাস্ক ভালো। এগুলো নাকে–মুখে ফিট হয় বেশ। মাস্ক আর মুখের ত্বকের মাঝখানে ফাঁক থাকে না। সার্জিক্যাল মাস্কগুলো দ্বারা প্রায় ৮০ শতাংশ রোগজীবাণু ফিল্টার হয়। কিন্তু রেসপিরেটর মাস্কগুলো রোগজীবাণু ফিল্টার করতে পারে প্রায় ৯৫ শতাংশ। তবে শিশুদের মুখ ছোট বিধায় রেসপিরেটর মাস্ক তাদের জন্য উপযোগী নয়। একবার ব্যবহার উপযোগী মাস্কই বেশি ভালো। এক পরতের মাস্কের চেয়ে কয়েক পরতের মাস্ক ব্যবহার করাই শ্রেয়। একাধিক পরত অতি ক্ষুদ্র কণার প্রবেশও রোধ করতে পারে। একবার ব্যবহার উপযোগী সার্জিক্যাল মাস্কে তিনটি পরত থাকে। বেশি মোটার কারণে শ্বাস টানায় বা ছাড়ায় বেশি সমস্যা যেন না হয়, মাস্ক বাছাইয়ের সময় সে খেয়াল রাখতে হবে। মাস্কটা মুখে ফিট হতে হবে ভালোভাবে। মাস্ক আর নাক-মুখের ফাঁক দিয়ে যেন ধুলাবালু ঢুকতে না পারে।
মাস্ক ব্যবহারে সতর্কতা
মাস্ক হওয়া চাই পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন। নাক–মুখ ঢেকেই মাস্ক পরতে হবে। মাস্কের বাইরের দিকটা প্রতিবার ব্যবহারের সময় যেন বাইরের দিকেই থাকে, সে খেয়াল রাখতে হবে অবশ্যই। নইলে শ্বাস টানার সময় মাস্কের বাইরের দিকে লেগে থাকা ক্ষুদ্র কণা ও রোগজীবাণু শ্বাসনালিতে ঢুকে যাবে। একজনের মাস্ক আরেকজন ব্যবহার করা যাবে না। ভেজা মাস্ক ব্যবহার করা যাবে না। মাস্ক খুলতে হবে ফিতা বা ইলাস্টিক ধরে। ব্যবহার করা মাস্ক ফেলতে হবে নিরাপদ স্থানে।
মাস্ক ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা
রোগের বিস্তার বা প্রতিরোধের জন্য মাস্ক অবশ্যই শতভাগ কার্যকর নয়। সম্প্রতি করোনা বা কোভিড–১৯–এর প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বজুড়ে মাস্ক ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। করোনাভাইরাস রেসপিরেটরি ড্রপলেট বা শ্বাসের মাধ্যমে ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি–কাশি বা থুতুর মাধ্যমে অন্যরা আক্রান্ত হতে পারেন। এই ভাইরাসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১৪ দিন। মানে আক্রান্ত হওয়ার পর ১৪ দিন পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির উচিত মুখে মাস্ক পরে থাকা ও লোকসমাগম থেকে দূরে থাকা। পরিচর্যাকারীও মাস্ক ব্যবহার করবেন ও প্রতিবার আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যাওয়ার পর পোশাক ও মাস্ক পাল্টাবেন, হাত ভালো করে ধুয়ে নেবেন। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার্য বস্তু না ধরাই ভালো। তবে মাস্ক ব্যবহার করলেই যে শতভাগ নিরাপদ থাকা যাবে, তা নয়।
তবে সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করলে রোগীর হাঁচি–কাশির মাধ্যমে রোগজীবাণু বাইরে বাতাসে ছড়াবে অনেক কম। কোনো এলাকায় সর্দি–কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হলে সুস্থ মানুষও থাকতে পারবেন অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, যেমন নিয়মিত হাত ধোয়া, অপরিষ্কার হাতে নাক–মুখ–চোখ স্পর্শ না করার মতো স্বাস্থ্যকর অভ্যাস চর্চা করে যেতে হবে সব সময়।
বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ।
-
thanks.