Daffodil International University
Faculties and Departments => Faculty Sections => Departments => Topic started by: snlatif on February 26, 2020, 03:20:50 PM
-
কেউই আত্মহনন থেকে নিরাপদ নয়। আমরা যদি ভাবি সফলতা আত্মহত্যার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে, তাহলে হয়তো আমরা ভুল। সফল এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদের আত্মহত্যা আমাদেরকে সেই সত্যের কথাই মনে করিয়ে দেয়। অর্থাভাব কিংবা স্বাধীনতার তো কোনো কমতি তাদের ছিল না।
বরং যাদের দিকে সারাক্ষণ মানুষের চোখ পড়ে থাকে, তারা আরো বেশি ডিপ্রেশনে ভুগে থাকেন। তারা হয় আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগছেন কিংবা নিজেরাই নিজেদের দক্ষতার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন কখনো কখনো। এসব সেলিব্রেটি বা বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের দিকে গণমাধ্যমের চোখ হরহামেশাই থাকে; মানুষ তাদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করতে পছন্দ করে। তারাও নিজেদের নিয়ে অধিক সচেতন থাকতে পছন্দ করেন। কোথাও কোনো ভুল হয়ে গেল কি না! যদি হয়, তাহলে তো ভারি বিপদ! এসবের জন্য তারা সবসময় হতে চান একদম নিখুঁত। যেকোনো ভুলভ্রান্তির প্রতি তাদের থাকে একধরনের বিতৃষ্ণা। আত্মসমালোচনায় থাকেন মুখর।
এজন্য আর দশটা সাধারণ মানুষের চেয়ে তারা বেশি চাপে থাকেন। এই মানসিক চাপ খুব সহজেই ডিপ্রেশনে রূপ নেয়। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়েও কেউ কেউ অবিরত অন্যের সাথে নিজের তুলনা করতে থাকেন। অন্যের মতামত তাদের কাছে এতটাই জরুরি হয়ে পড়ে যে তা থেকে মুক্তি পেতে তাদের চিকিৎসকেরও শরণাপন্ন হতে হয় মাঝে মাঝে।
ক্যান্ডিস লাম একজন মনোবিজ্ঞানী যিনি দীর্ঘ সময় ধরে হংকং আর চীনে শক্তিশালী, বিখ্যাত আর সফল লোকদের কাছ থেকে দেখছেন, তাদের ডিপ্রেশনের চিকিৎসা করছেন। তার অর্ধেক রোগীই সিইও, সেলিব্রেটি কিংবা শক্তিশালী রাজনীতিবিদ। এরা বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে ভোগেন, যেমন- প্যানিক অ্যাটাক, মাদকাসক্তি, ইনসমনিয়া, মুড সুইং, আত্মহত্যার প্রবণতা ইত্যাদি।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিদের সন্তানদেরও আত্মহত্যার প্রবণতা থাকে। তারা মাঝেমাঝে এই স্পটলাইটটা পেতে চান না। আলাদা একধরনের হতাশাও থাকে তাদের। তারা ভাবেন, এই যশ-খ্যাতি সবই তাদের পারিবারিক সম্পর্কের কারণে। এটা তো তাদের নিজস্ব কোনো অর্জন নয়। এভাবে তারা ডিপ্রেশনের দিকে ঝুঁকে পড়েন।
ব্যাংকিং কিংবা কর্পোরেট বিজনেসের অনেকেই যারা সফল হয়েছেন, তারা তাদের পেছনে অনেক কিছু ফেলে সামনে এগিয়ে গেছেন। এ পথে এগোতে গিয়ে পারিবারিক বা প্রেমের সম্পর্ককেও তারা জলাঞ্জলি দিয়েছেন। এজন্যই আর দশটা সাধারণ মানুষের থেকে তাদের সাপোর্ট সিস্টেম অনেক বেশি দুর্বল। কাজের চাপ, টাকা-পয়সা আর সবার প্রত্যাশা পূরণ করতে গিয়ে প্রায়ই তারা বন্ধু, পরিবার এবং সন্তানাদিকে ঠিকমতো সময় দিতে পারেন না। সম্পর্ক খুব দুর্বল হয়ে যায় বা ভেঙে যায়। তারা এত মানুষের ভীড়েও বিশ্বাসযোগ্য কোনো সাহায্যের হাত খুঁজে পান না। মানুষ তাদের কোন চোখে দেখবে তার পরোয়া তারা খুব বেশি করেন। তাই সবসময়ই একটা মিথ্যা মুখশ্রী ধরে রাখার চেষ্টা করেন। অন্যদের থেকেও তারা বাড়তি চাপের মুখোমুখি হন। আরো আরো পাওয়ার চাপ তাদেরকে হতাশার দিকে ঠেলে দেয়।
সফল ব্যক্তি ব্যর্থ হলে তার শূন্যস্থান পূরণ করতে বেশি সময় লাগবে না। কারণ পেছনে আরো অনেকেই এই লাইনে দাঁড়িয়ে আছে তার জায়গাটি নেওয়ার জন্য। দুঃখজনকভাবে প্রায় সময়ই ব্যক্তিকে এসবের মধ্য দিয়ে একাই যেতে হয়। এসব ভাগাভাগি করার মতো মানুষ তিনি খুঁজে পান না।
আত্মহত্যা প্রায়ই আবেগতাড়িত। সেই আবেগটা কেটে গেলে, মানুষ সুন্দর জীবনযাপনে ফিরে আসে। উল্লেখ্য, সবসময় এটি আবেগতাড়িত না। মাঝে মধ্যে এটি পূর্বপরিকল্পিত। যা-ই হোক, হাতের নাগালে আত্মহত্যা করার সরঞ্জাম না থাকলে তা অনেকটা আত্মহত্যার হার কমাতে পারে। যেমন: গোল্ডেন গেট ব্রিজে বেড়ি দেওয়ার পর সেখানে আত্মহত্যা সন্তোষজনকভাবে কমে এসেছে। অস্ট্রেলিয়াতেও আগ্নেয়াস্ত্রের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর তা হয়েছে।
আত্মহত্যা প্রতিরোধে তো আলাদা কোনো ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়নি। তবে আমরা যদি আরেকটু সদয় আর সচেতন হই, তাহলে এটি অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব। আমাদের আরেকটা ভুল ধারণা যে আত্মহত্যা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির সাথে কথা বললে তার প্রবণতা বাড়ে। আসলে আমরা যদি সহানুভূতি নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়া সেই মানুষটির দিকে এগোই, সাহায্যের হাতটা বাড়িয়ে মন দিয়ে মানুষটির কথা শুনি, তবে হয়তো এটি প্রতিরোধ করতে পারবো।
[Collected]
-
খুব ভালো লাগলো লেখাটা.
Best Regards,
Shamsi
Shamsi Ara Huda
Assistant Professor
Department of English
-
ধন্যবাদ :)
-
Thanks for sharing! :)
-
Thanks for sharing! :)