Daffodil International University
General Category => Common Forum => Topic started by: Raja Tariqul Hasan Tusher on March 03, 2020, 02:52:07 PM
-
অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যখন-তখন এবং টানা দীর্ঘদিন পিপিআই (প্রোটন-পাম্প ইনহিবিটর) বা অ্যান্টি আলসারেন্ট ওষুধ (যেমন ওমিপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল, ল্যান্সোপ্রাজল, রাবিপ্রাজল, ডেক্সল্যান্সোপ্রাজল ইত্যাদি) সেবন করে থাকেন। বেশির ভাগ মানুষের ধারণা, পিপিআই বা অ্যান্টি আলসারেন্ট জাতীয় ওষুধের কোনো ক্ষতিকর দিক নেই। কিন্তু জেনে রাখা ভালো, কোনো ওষুধই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত নয়।
প্রোটিন জাতীয় খাদ্য বিপাক এবং খাবারের জীবাণু ধ্বংসে পাকস্থলীর অ্যাসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া খাবারের লৌহ আত্তীকরণেও এর ভূমিকা অপরিসীম। লৌহ আমাদের রক্তকণিকা, মাংসপেশি, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং স্নায়ুবিকাশে বিশেষ প্রয়োজনীয়।
পিপিআইয়ের মূল কাজ পাকস্থলীর অ্যাসিড নিঃসরণ কমিয়ে দেওয়া। এতে পাকস্থলীর অম্লতা কমে যায় এবং স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় কাজে ব্যাঘাত ঘটে। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম শোষণও বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে শরীরে বিভিন্ন জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে, পাশাপাশি রক্তশূন্যতা, অস্টিওপোরোসিসের মতো হাড়ের ক্ষয়রোগ, কিডনি কার্যকারিতা হ্রাস এবং গ্যাস্ট্রিক পলিপের মতো রোগের আশঙ্কা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
পিপিআই মূলত পেপটিক আলসারের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট মেয়াদে ব্যবহার করার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফাংশনাল বাওয়েল ডিসঅর্ডার বা আইবিএস, নন-আলসার ডিসপেপসিয়ার চিকিৎসায় অনেকেই না বুঝে এসব ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করেন। আবার কখনো কখনো কেউ কেউ হুট করে এসব ওষুধ সেবন বন্ধ করে দেন। এতে তাঁরা অতিরিক্ত অ্যাসিডিটির সমস্যায় পড়েন। অন্য অনেক ওষুধের মতো এগুলোও সেবনের যেমন নিয়ম আছে, তা ছাড়ারও নিয়ম আছে। তাই পিপিআই ওষুধ শুরু ও বন্ধ করার ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
পাকস্থলীতে হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থাকলে আলসার বা অ্যাসিডিটি সহজে সারে না। সে ক্ষেত্রে
নির্দিষ্ট চিকিৎসা আছে, যা রোগ নির্ণয় করে নির্দিষ্ট মেয়াদে গ্রহণ করতে হবে, শুধু পিপিআই খেয়ে গেলে চলবে না। আবার দীর্ঘদিন অ্যাসিডিটির ব্যথা, হজমের সমস্যা, গ্যাস বা পেট ফাঁপার পেছনে অন্য কোনো কারণও থাকতে পারে (যেমন পিত্তথলির সমস্যা, পাকস্থলীর ক্যানসার ইত্যাদি)। এ কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় বছরের পর বছর গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে যাওয়া কোনো সমাধান নয়। কারণ খুঁজে বের করে তার চিকিৎসা করাতে হবে।
ডা. রাশেদুল হাসান, সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন), গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ