Daffodil International University

Educational => You need to know => Topic started by: Sultan Mahmud Sujon on January 02, 2012, 04:11:48 PM

Title: শিশুর বিকাশে চাই খেলাধুলা
Post by: Sultan Mahmud Sujon on January 02, 2012, 04:11:48 PM
(http://banglahealth.evergreenbangla.com/wp-content/uploads/2010/12/khela.jpg)

খেলাধুলার মাধ্যমে মনের পাঠ
ছোটবেলায় শেখার জন্য খেলাধুলা অপরিহার্য বিষয়। শিশু যখন খেলছে তখন তার সঙ্গে তার মন খুলছে, শরীর কাঠামো মজবুত হচ্ছে এবং নানা নৈপুণ্য, দক্ষতা তার আয়ত্তে চলে আসছে। খেলার মধ্য দিয়ে শিশু প্রকৃতির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। নানা ধারণায় সমৃদ্ধ হচ্ছে, সমস্যা সমাধানে কীভাবে সফল হওয়া যায় কিংবা কীভাবে কারও সাহায্য পেতে হয়, কীভাবে কাউকে সাহায্য করা সম্ভব, কীভাবে শরীরযন্ত্রের বড় ও ছোট মাংসপেশিগুলো চালানো যায়—এসব জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। খেলাধুলার অঙ্গনে শিশুর মধ্যে কল্পনাশক্তি বাড়ে এবং নতুন নতুন আইডিয়া, সৃজনশীলতা এসে যুক্ত হয়।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার আগে
শিশুর বৃদ্ধি বিকাশের জন্য খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো ধরাবাঁধা অক্ষর পরিচয়, ক্ষমতা, শিক্ষা বা হাতের লেখা শেখানোর চেয়েও বেশি প্রয়োজনীয়। বরং শিশুর পাঁচ বা ছয় বছর পূর্ণ হওয়ার আগে তাকে জোর করে এসব শেখাতে যাওয়ায় কোনো লাভ নেই বরং এই প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা জোর করে তার মাথায় ঢোকাতে গেলে ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা বেশি থাকে। কেননা, এত অল্প বয়সে শিশুর মগজ এভাবে শেখার জন্য প্রস্তুত নাও থাকতে পারে। শিশু শেখার ব্যাপারে প্রাকৃতিক যে আকর্ষণ, তা হারিয়ে ফেলতে পারে। ফলে খেলাধুলা তাকে শিখিয়ে দেয় সহজ-সরল শেখার পদ্ধতি।

খেলার জায়গা
শিশুর খেলাধুলার জন্য একটা নিরাপদ এলাকা বেছে নেওয়া উচিত, যা হবে নিরাপত্তা, শিশুবান্ধব ও শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ—এই তিনের মিলিত স্থান।

বাইরে খেলার স্থান
 শিশুর দৌড়, লাফালাফি করার মতো খানিক জায়গা। যেখানে সে গাছের ছায়া পাবে। গাছে চড়তে পারবে।
 বল যেন হাতে নিয়ে ছুড়ে মারতে পারে। ছুড়ে দেওয়া বল তালুবন্দী করা যায় বা তাকে পায়ের শক্তিতে দূরে ঠেলে দেওয়া যায়, এতটুকু জায়গার বন্দোবস্ত করে দিতে হবে।
এক বছরের বাচ্চার জন্য একটু বড় সাইজের বল দরকার, যাতে সে তার ওপর পেট রেখে শুয়ে পড়তে পারে। তাতে মাথা ঠেকিয়ে আবার তুলে নিতে পারে।
এতে তার ব্যালান্স বাড়বে, আর শক্ত হবে ঘাড় ও পিঠের মাংসপেশিগুলো।
 পুরোনো টায়ার, যাতে সে বসবে, উঠবে, লাফাবে, গড়িয়ে নামবে।
 পুরোনো বাক্স বা টায়ার দিয়ে ছোট সুড়ঙ্গপথ বানানো যায়।
 সীমানা চিহ্নিত পানির, বালুর বা কাদাযুক্ত জায়গা রাখা যায়। ওখানে প্লাস্টিক কাপ নিয়ে সে মজার খেলা খেলবে।
 গাছে ওঠানো শিক্ষণ, একটু বড় বাচ্চা হলে তদারকির মাধ্যমে।
 দড়ি লাফানো, চাড়া খেলা এসবের ব্যবস্থা।

ঘরে খেলার একটুখানি স্থান
ঘরে, একাকী ক্লিনিক-হাসপাতালে শিশু যেন খেলাধুলা করতে পারে, সে রকম চিন্তাভাবনা থাকা উচিত। হাসপাতাল, ওয়েটিং রুম বা বিদ্যালয়ে সেরূপ পরিবেশ নিশ্চিত করা চাই।
 শিশুর পঞ্চ ইন্দ্রিয় যাতে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায়, তার বন্দোবস্ত করা উচিত। তারা সব সময় নতুন কিছু দেখতে চায়, নতুন শব্দে আকৃষ্ট হয়। নতুন প্রাণে উজ্জীবিত হয় এবং নতুন স্পর্শে পুলকিত হয়ে থাকে। আর বয়স ছয় মাসের বেশি হলে নতুন স্বাদ জিভে পেতে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
 শিশু যেখানে শুয়ে থাকে, তার ওপর থেকে নানা রঙের খেলনা ঝুলিয়ে রাখা যেতে পারে। ভারী বা মোবাইল ফোন-জাতীয় জিনিস দূরে রাখা বাঞ্ছনীয়।
 মেঝেতে নানা রকমের সুদৃশ্য চিত্র আঁকা বা সজ্জা বিছানো যেতে পারে। শিশু হাত দিয়ে গঠন পরীক্ষা করে দেখবে।
 ঘরে বড় আয়না রাখা হোক এবং ছোট ছোট কিছু আয়না। সে নিজেকে ও তার কিছু কিছু কর্মকাণ্ডের দৃশ্য আয়নায় দেখতে থাকুক।

প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২৪, ২০১০