Daffodil International University
Educational => You need to know => Topic started by: Sultan Mahmud Sujon on January 02, 2012, 04:28:14 PM
-
হাঁপানি বা অ্যাজমা হলো একটি প্রধান অ্যালার্জিক শ্বাস-প্রশ্বাসসংক্রান্ত রোগ। অ্যাজমায় আক্রান্ত হলে রোগীর ব্রঙ্কিয়াল টিউব ফেঁপে ওঠে। ফলে শ্বাসনালির বাতাস চলাচলের পথ সংকীর্ণ হয়ে পড়ে, তার মানে, ফুসফুসে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। এতে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তার কর্মশক্তিও কমে যায়।
বিজ্ঞান আমাদের আশ্বস্ত করেছে, অল্প কিছু বিষয় আমরা খেয়াল রাখলে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত অ্যালার্জি থেকে রক্ষা পেতে পারি। প্রথমেই ঘরের ভেতরে ধূমপান বর্জনের কথা বলা হয়েছে। এতে শিশু ও গর্ভবতী নারীদের ওপর মন্দ প্রভাব পড়ে।
অ্যালার্জিক শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগের চিকিত্সায় কেবল কফ, নাক বন্ধ বা সাঁই সাঁই করে শ্বাস ফেলার উন্নতি ঘটে না, এটা শ্বাসনালির ফেঁপে ওঠার প্রবণতাও রোধ করে।
একজন শিশুর শরীরে যখন নির্দিষ্ট কোনো অ্যালার্জির অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তখন দ্রুত তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে শ্বাস-প্রশ্বাসসংক্রান্ত অন্যান্য রোগে। একইভাবে তা অ্যাজমা প্রতিরোধেও কাজ করে। যেসব অ্যাজমা শিশু-রোগীর ধুলোবালিতে অ্যালার্জি আছে বা আরশোলা কিংবা পশুভীতি আছে, তাদের ক্ষেত্রে অ্যাজমা প্রতিরোধে সতর্ক থাকতে হবে। শিশুর অ্যালার্জিকে গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে। একটি গ্রুপের একজন শিশুর অ্যাজমা থাকলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে গোটা শিশুর ওপরই।
আমরা কিছু শুভ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারি। আমাদের এলাকায় যে স্কুলটি রয়েছে, সেখানে অ্যালার্জি ও অ্যাজমাসংক্রান্ত প্রোগ্রাম করা যেতে পারে। অ্যালার্জির বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে শিশুদের ভেতর অ্যালার্জি আছে কি না বা থাকলে কিসে কিসে অ্যালার্জি হয়, সেগুলো চিহ্নিত করা যেতে পারে। ফলে অভিভাবকেরা এ ব্যাপারে সতর্ক হবেন। সমস্যা বাড়ার আগেই তাঁরা চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে উদ্যোগী হবেন। বিশেষকরে, শীতকালেশিশুদের অ্যালার্জি ও অ্যাজমা প্রতিরোধের ব্যাপারে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কিছু করণীয় রয়েছে। একটু সচেতন হলেই সঠিক সময়ে শিশুকে চিকিত্সা দেওয়া সম্ভব হবে। আর যেসব শিশু এরই মধ্যে অ্যাজমা রোগে কষ্ট পাচ্ছে, স্কুলে তাদের পরিচর্যায় এগিয়ে আসতে পারে সিনিয়র ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রতিটি স্কুলে যদি ছোট একটি টিম করে দেওয়া হয়, তাহলে পরিচর্যার পাশাপাশি শিশুরা অ্যালার্জি ও অ্যাজমা সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে। এই প্রচণ্ড শীতেও তারা যে একা নয়, সহপাঠীরাও তাদের পাশে আছে—এই বোধটি একজন শিশুর মনোজগতে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
ডা. গোবিন্দচন্দ্র দাস
শিশুদের অ্যাজমা ও অ্যালার্জি সচেতনতা সিনিয়র কনসালটেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান
অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইমুনোলজি বিভাগ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২০, ২০১০