Daffodil International University

Educational => You need to know => Topic started by: Sultan Mahmud Sujon on January 02, 2012, 04:32:48 PM

Title: ব্রংকিওলাইটিসমুক্ত থাকুক শিশু
Post by: Sultan Mahmud Sujon on January 02, 2012, 04:32:48 PM
দুই বছরের কম বয়সী শিশুদেরই বেশি হয়। তিন থেকে ছয় মাস বয়সে প্রকোপটা বেশি। ফুসফুসে বায়ু চলাচলের সরু নালিপথ আছে। ব্রংকিওলাইটিসে এসব জালিকার মতো ছড়িয়ে থাকা অতি ক্ষুদ্র বাতাস পরিবহনের নালিগুলোয় প্রদাহ হয়ে থাকে। শীতকালে সাধারণত এটি ঘটে ভাইরাস সংক্রমণের কারণে।

রোগের উপসর্গ
প্রথম উপসর্গগুলো সাধারণভাবে ঠান্ডা-সর্দি ধরনের যেমন—নাক বন্ধ ভাব, নাক দিয়ে জল ঝরা, সামান্য কাশি ও গায়ে গায়ে জ্বর। এসব উপসর্গ এক থেকে দুই দিন স্থায়ী হয়। কাশির প্রকোপ বাড়তে থাকে। পরবর্তী সময়ে শ্বাসের শব্দ শোনা যায়। মাত্রাভেদে শ্বাসকষ্ট প্রকাশ পায় বিভিন্নভাবে—
দ্রুত, অগভীর শ্বাস
উচ্চ হারের হূদস্পন্দন
শ্বাসের সঙ্গে ঘাড় ও বুকের নিচের অংশের মাংসপেশি দেবে যায়।
নাসারন্ধ্রের দুই পাশ ওঠানামা করতে থাকে।
শিশু খুব অস্থির, খিটখিটে, ক্লান্ত বা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ঘুমোতে ও বুকের দুধ পানে অসমর্থ হয়ে যায়।
অত্যন্ত কাহিল অবস্থায় শিশুর ঠোঁট ও নখ নীলচে বর্ণ ধারণ করে। সবকিছু বমি করে দেয়। পানিস্বল্পতাজনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়।

রোগ ছড়ানোর মাত্রা
অসুস্থ ব্যক্তির হাঁচি, কাশি বা হাসির তোড়ে জীবাণু বাতাসে ভর করে বা ব্যবহূত টিস্যু, খেলনা প্রভৃতির মাধ্যমে অন্য ছোট শিশুতে দ্রুত ছড়াতে সক্ষম।

প্রতিরোধ করা যায় যেভাবে
ঘন ঘন হাত ধুয়ে দেওয়া।
বাচ্চার ঘর ধূমপানমুক্ত রাখা।
আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে শিশুদের দূরে রাখা।

কত দিন ভোগে
ব্রংকিওলাইটিস থেকে সেরে উঠতে প্রায় ১২ দিনের মতো সময় দরকার। তবে মারাত্মক পর্যায়ের অসুখে ভোগা শিশুর কাশি বেশ কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে। সাধারণভাবে কাশি শুরুর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে অসুখের মাত্রা বেশি থাকে। পরে আস্তে আস্তে কমে আসে।

প্রফেশনাল চিকিত্সা
বেশির ভাগ ব্রংকিওলাইটিস সাধারণ মাত্রার ফলে বিশেষ চিকিত্সা লাগে না।
অ্যান্টিবায়োটিকসের ব্যবহার লাগে না (ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ না থাকলে)।
শ্বাসকষ্ট ও পানিস্বল্পতার লক্ষণ থাকলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।
প্রয়োজনে অক্সিজেন দিতে হবে।
পানিস্বল্পতা পূরণ।
বাসায় চিকিত্সা ব্যবস্থাপনা
বেশি বেশি পানীয়, তরল খাবার দেওয়া, অল্প পরিমাণে বারবার।
ঘরে বিশুদ্ধ বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ।
নরমাল স্যালাইন ড্রপস এবং বাল্ব সিরিঞ্জ ব্যবহার করে খাবার ও ঘুমানোর আগে নাক পরিষ্কার রাখা।
জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল দেওয়া যেতে পারে।

কখন চিকিত্সক দেখাবেন
দ্রুত শ্বাস নেওয়ার সময় যদি শ্বাসের শব্দ শোনা যায়।
না খাওয়ার কারণে বা বমির জন্য যদি পানিস্বল্পতা দেখা যায়।
বেশি ঘুমাচ্ছে।
বেশি মাত্রার জ্বর।
প্রচণ্ড কাশি।
শিশু ভীষণ দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে পড়লে।

প্রণব কুমার চৌধুরী
শীতকালেও শিশু থাকুক এ রকম সুন্দর ও ঝরঝরে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ৩০, ২০০৯