Daffodil International University
Educational => You need to know => Topic started by: Sultan Mahmud Sujon on January 02, 2012, 04:40:06 PM
-
২ নভেম্বর ‘বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস’ পালিত হলো। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল—‘নিউমোনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করো, শিশুকে বাঁচাও’। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশুর মৃত্যুর হার অনেক বেশি। এর প্রথম কারণ নিউমোনিয়া। এই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হলে শিশুরা দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে মারা যায়। প্রতিবছর সারা বিশ্বে ৪০ লাখ শিশু এই রোগে মৃত্যুবরণ করে। অর্থাত্ প্রতি ১৫ সেকেন্ডে একজন শিশু মারা যায়।
কারা নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়
যাদের বয়স দুই বছরের নিচে
যারা অপুষ্টিতে আক্রান্ত
যারা বুকের দুধ পান করেনি, বিশেষ করে শালদুধ
যাদের হাম, টিবি, ডিপথেরিয়া, বিশেষ করে নিউমোনিয়ার টিকা দেওয়া হয়নি
যেসব শিশু বদ্ধঘরে ও ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে থাকে
যাদের সামনে অন্য ব্যক্তিরা ধূমপান করে।
গ্রামের শিশুদের চেয়ে শহরের শিশুরা সে জন্য বেশি আক্রান্ত হয়, যার প্রধান কারণ ঘনবসতি ও বায়ুদূষণ।
নিউমোনিয়ার লক্ষণ
কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর
দ্রুত নিঃশ্বাস
পাঁজরের নিচের অংশ ভেতরের দিক দেবে যাওয়া।
ওপরের লক্ষণগুলোর সঙ্গে শিশু খেতে না পারলে, বুকের ভেতর শব্দ হলে, শিশু নিস্তেজ হয়ে গেলে এবং খিঁচুনি হলে বুঝতে হবে, শিশু মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এ ক্ষেত্রে শিশুকে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে নিতে হবে। তবে সাধারণ সর্দি, কাশি বা নাক বন্ধ থাকলে বাড়িতেই তার চিকিত্সা করা সম্ভব। নরম কাপড় দিয়ে নাক পরিষ্কার করে দিন, জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল সিরাপ দিন এবং কাশির জন্য ঘরে তৈরি লেবু বা আদা বা তুলসীপাতার রসের সঙ্গে মধু মিলিয়ে খেতে দিন। তবে কাশির মাত্রা বেশি হলে চিকিত্সকের কাছে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, সব সর্দি-কাশি নিউমোনিয়া নয় এবং ্যান্টিবায়োটিকের কোনো প্রয়োজন নেই।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায়
জন্মের পর এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে শালদুধ দিন এবং ছয় মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধু বুকের দুধ পান করান
বারবার হাত ধোবেন, বিশেষ করে শিশুকে কোলে নেওয়ার আগে
ঘরে, বিশেষ করে শিশুর সামনে ধূমপান করবেন না
রান্নাঘর ও শোয়ার ঘরের দরজা-জানালা খুলে রাখুন, যাতে করে রান্নার ধোঁয়া ঘরে আটকে না থাকে
এক বছরের মধ্যে সময়মতো শিশু সব টিকা, বিশেষ করে নিউমোনিয়ার টিকা দিন।
আমাদের শিশুকে একটা সুন্দর জীবন উপহার দিতে, আসুন, আমরা সবাই চেষ্টা করি।
তাহমীনা বেগম
অধ্যাপক, শিশুরোগ বিভাগ
বারডেম ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাক
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ১১, ২০০৯