Daffodil International University
Faculties and Departments => Allied Health Science => Life Science => Topic started by: Md. Alamgir Hossan on March 14, 2020, 08:59:01 AM
-
এলিজাবেথ স্নাইডার থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে। নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তা থেকে ধীরে ধীরে সেরেও উঠেছেন। সম্প্রতি এই সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার গল্প তিনি সবাইকে শুনিয়েছেন। এলিজাবেথ আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি, সেরেও উঠেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এলিজাবেথ স্নাইডার নামের এই নারী পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন জৈবপ্রকৌশল বিষয়ে। ৩৭ বছর বয়সী এলিজাবেথ একটি পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন গত ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখে। এর পর পরই তাঁর মধ্যে ফ্লু-এর লক্ষণ দেখা দেয়। সেটা ছিল ২৫ ফেব্রুয়ারি। পরে দেখা যায়, ওই পার্টিতে অংশ নেওয়া আরও ৫ জনের মধ্যে ফ্লু-এর লক্ষণ দেখা দিয়েছে।
ওই সময়কার অবস্থা জানাতে গিয়ে এলিজাবেথ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমি ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই খুব ক্লান্তবোধ করছিলাম। কিন্তু এটি অন্যান্য দিনের চেয়ে ভিন্ন ছিল না। সাধারণভাবে ঘুম থেকে উঠে কাজে যাওয়ার সময় আপনার যেমন ক্লান্তবোধ হয়, ঠিক তেমনটাই ছিল। যেহেতু এর আগের সপ্তাহেই আমি কাজে খুব ব্যস্ত ছিলাম, তাই ক্লান্তবোধ হওয়া আমার জন্য আশ্চর্যজনক ছিল না।’
সে দিনের মাঝামাঝি এলিজাবেথের মাথাব্যথা হতে থাকে। জ্বর আসে এবং সারা শরীরে ব্যথা শুরু হয়। এ কারণে সঙ্গে সঙ্গে তিনি অফিস ছেড়ে বাড়ি ফেরেন। বাসায় এসে কিছুটা ঘুমানোর পর এলিজাবেথ বুঝতে পারেন যে, তাঁর গায়ের তাপমাত্রা বেড়ে গেছে অনেক। থার্মোমিটারে ওঠে ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
এলিজাবেথ বলেন, ‘ঠিক ওই সময়টায়, আমার শরীর প্রচণ্ডভাবে কাঁপতে শুরু করে।’ ওই সময় একবার হাসপাতালে যাওয়ার কথাও ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু হাসপাতালে আর যেতে হয়নি। দিন কয়েকের মধ্যেই তাঁর জ্বর কমে আসে।
এরই মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের খবরাখবর পাচ্ছিলেন এলিজাবেথ। কারণ গত জানুয়ারির শেষের দিকেই যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন রাজ্যে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গিয়েছিল। এর পর তা রাজ্যজুড়েই ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে ওয়াশিংটনে ২৬০ জনেরও বেশি মানুষ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এ রোগে দুই ডজনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ১০০ ছাড়িয়ে গেছে।
তবে এলিজাবেথের কাশি ও শ্বাসকষ্ট ছিল না। তাই তিনি ভেবেছিলেন, করোনা বোধ হয় ধরেনি। চিকিৎসক বলেছিলেন, সাধারণ জ্বর হলে যা করার তাই করতে। অর্থাৎ বাসায় বিশ্রাম নেওয়া, বেশি করে পানি পান করা ইত্যাদি।
কিন্তু কিছুদিন পর এলিজাবেথ জানতে পারেন, যে পার্টিতে গিয়েছিলেন, সেখানে অংশ নেওয়া বেশ কয়েক জনের মধ্যে ঠিক একইরকম লক্ষণ দেখা দিয়েছে। তখনই এলিজাবেথ স্নাইডারের মধ্যে সন্দেহ দানা বাঁধে। ফ্লু সংশ্লিষ্ট একটি গবেষণা কর্মসূচিতে তিনি যুক্ত হন এবং ৭ মার্চ জানতে পারেন যে, তিনি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এলিজাবেথ বলেন, ‘আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। কারণ আমি ভেবেছিলাম যে, এটি স্বাভাবিক জ্বর ছিল। লক্ষণও তেমনই ছিল। আমার মা খুব ভয়ে পেয়ে গিয়েছিলেন এই খবরে।’
কিন্তু সাহস হারাননি এলিজাবেথ। তত দিনে ফ্লু-এর বিভিন্ন লক্ষণও কমতে শুরু করেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা খবর পেয়ে তাঁকে ৭ দিন ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেসব তিনি মেনে চলছেন।
বর্তমানে ভালোই আছেন এলিজাবেথ স্নাইডার। সবার প্রতি এলিজাবেথের বার্তা, ‘যদি মনে করেন যে, এই রোগ হয়েছে, তবে দ্রুত পরীক্ষা করান। যদি লক্ষণ প্রাণসংহারী না হয়, তবে স্রেফ বাসায় থাকুন। কিছু প্রতিরক্ষামূলক সাধারণ ওষুধ খান। প্রচুর পানি পান করতে হবে, বিশ্রাম নিতে হবে। প্রয়োজনে সময় কাটাতে টিভি শো দেখুন। আতঙ্কিত হবেন না।’
-
:)