Daffodil International University
Educational => You need to know => Topic started by: Sultan Mahmud Sujon on January 03, 2012, 07:54:25 AM
-
প্রত্যেক মা-বাবাই চান তাঁদের ঘরের ফুটফুটে সন্তানটিকে আরেকটু নাদুসনুদুস বানাতে। তাই তাঁরা মায়ের দুধের পাশাপাশি একটু-আধটু গুঁড়ো দুধ দিতে শুরু করেন। অনেকে শুরু করেন শখের বশে, আবার কেউ অনেক সময় বাধ্য হয়ে। গুঁড়ো দুধে মেলামিন মেশানো নিয়ে সাম্প্রতিক তোলপাড়ের বেশ কিছুদিন আগে কিছু তরল দুধেও ফরমালিন পাওয়া গেছে।
সবশেষে আটটি নামীদামি ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধে পাওয়া গেল মাত্রাতিরিক্ত মেলামিন, যা সোনামণিদের স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে তাৎক্ষণিকভাবেই। যেমন বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, খিঁচুনি প্রভৃতি হতে পারে। অনেক সময় অজ্ঞান হয়ে শিশুর মৃত্যুও হতে পারে। মেলামিন-মিশ্রিত গুঁড়ো দুধ পান করলে শিশুর কিডনিতে পাথর হতে পারে।
লিভারকে করে দিতে পারে অচল। এত সব জেনেও কি চাইব আমাদের প্রাণপ্রিয় শিশুটি নিশ্চিত ঝুঁকির মধ্যে পড়ুক? বেড়ে ওঠার আগেই পতিত হোক ভেজাল আগ্রাসীদের ছোবলে, সেটা মেলামিন কিংবা ফরমালিন যা দ্বারাই হোক?
শিশুদের দুই বছর বয়স পর্যন্ত কোনো প্রকার গুঁড়ো দুধ না খাওয়ানোই সবচেয়ে নিরাপদ। একান্তই বাধ্য হলে সেটা ভিন্ন কথা। এই ঝুঁকিপূর্ণ মেলামিন বা ফরমালিন-মিশ্রিত গুঁড়ো দুধ শিশুদের কতটুকু অপকার করে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই দুধ খেলে শিশুদের রোগ-প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায় এবং বাধাগ্রস্ত হয় বুদ্ধিমত্তার বিকাশ।
শিশুর জন্য মায়ের দুধই শ্রেষ্ঠ খাবার। জন্মের প্রথম ছয় মাস মায়ের দুধ ছাড়া শিশুর আর কোনো খাবারেরই প্রয়োজন নেই। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো মায়ের স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, যেসব মা দুই বছর পর্যন্ত শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, তাঁদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায় বহুগুণ।
শুধু তা-ই নয়, এর ফলে মা ও শিশুর মধ্যে গড়ে ওঠে নিবিড় বন্ধন। শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য হয় রোগমুক্ত। তাই মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান শিশুর দুই বছর বয়স পর্যন্ত।
ডা· এ এ এম তাহের
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্রঃ প্রথম আলো, নভেম্বর ১৯, ২০০৮