(https://paloimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/640x358x1/uploads/media/2020/04/06/c2bb3a299cf6d5c03ab7778e47219498-5e8b5d18a5b10.jpg)
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নীতিনির্ধারকদের কাছে একটি বার্তা খুব স্পষ্ট করে পৌঁছে দিয়েছেন। সেটা হচ্ছে, যদি কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে সামাজিক দূরত্বের নিদান যেভাবেই হোক পুরোপুরি বাস্তবায়ন করুন।
বিশ্বের বহু সরকার তা বাস্তবায়নও করছে। ভারতে সরকার ১৩০ কোটি জনগণকে তিন সপ্তাহের জন্য ঘরে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে লাখ লাখ মানুষ কোথাও না কোথাও আটকা পড়েছে। বহু মানুষের ঘরবাড়িই নেই। কর্মহীন বহু মানুষের পেটে ক্ষুধার জ্বালা শুরু হয়েছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের এহেন পদক্ষেপে আর্থসামাজিক সংকট তৈরির অভিযোগ এনে অধিকারকর্মীরা সরকারের সমালোচনা করছেন।
অতি দ্রুত সংক্রমণশীল রোগটির রাশ টেনে ধরতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ একযোগে কোনো না কোনো মাত্রায় চলাচল নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছেন।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নেতৃত্ব নিজ নিজ দেশের প্রাত্যহিকতার চাকা থামাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে এসব দেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ চিত্র যেন উঠে আসছে। নিম্ন ও মধ্যআয়ের দেশগুলোর সরকার চীন, দক্ষিণ কোরিয়া বা জার্মানির মতো দেশে যেসব নীতি সফল হয়েছে তা নিজেদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে আদৌ কাজ করবে কিনা সে বিষয়ে ক্রমেই সন্দিহান হয়ে উঠছে। জনমিতিক পার্থক্য, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সামর্থ্য এবং সাংস্কৃতিক পরিপ্রেক্ষিতের ভিন্নতা এখানে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সামাজিক দূরত্বের নীতি এসব দেশের অর্থনীতির জন্য বিরাট ধাক্কা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আর এ কারণেই এসব দেশের পরিপ্রেক্ষিতে এই নীতির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। রোগ ব্যবস্থাপনা মডেলিং (disease modelling) বিষয়ে আমাদের কিছু পর্যবেক্ষণ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ওয়াকার ও তাঁর সহযোগীদের তৈরি মডেলটি অন্যতম উদাহরণ। আমাদের পর্যবেক্ষণ ও যাচাইয়ের ওপর ভিত্তি করে বলতে পারি যে, এসব মডেলিং একদিকে গভীরভাবে, অন্যদিকে সুস্পষ্টভাবে এমন সব সূচকের ওপর নির্ভর করে তৈরি হয়েছে যা প্রধানত সচ্ছল দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য। সূচকগুলোর মধ্যে রয়েছে বয়সভিত্তিক জনসংখ্যার অনুপাত, বিচ্ছিন্নকরণের ক্ষেত্রে পারিবারিক সামর্থ্য, রোগ পরীক্ষার সুবিধাদি বাড়ানো, জরুরি চিকিৎসাসেবা এবং সামাজিক সহায়তা প্রদানের সামর্থ্য।
এখনো পর্যন্ত আমরা এমন ধরনের কোনো রোগ ব্যবস্থাপনা মডেলিং দেখিনি যেখানে দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চলের কম বয়সী জনগোষ্ঠী, বিশ্বের বিভিন্ন মহানগরের চরম জনঘনত্ব, বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে মেলামেশার রীতি, অভিবাসনের বিপরীত ¯্রােত, অথবা বিদ্যমান অন্যান্য স্বাস্থ্যগত বিষয়াদি প্রধান সূচক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব দেশে জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। দেশের অধিকাংশ মানুষের জন্য জীবন রক্ষাকারী সেবা প্রদানের সামর্থ্যও এসব দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার নেই। বিশ্বের দুই প্রান্তের দুটি দেশের উদাহরণ দিলেই বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে: বাংলাদেশের সাড়ে ষোলো কোটি মানুষের জন্য ভেন্টিলেটর রয়েছে ৫০০টি, অন্যদিকে ৪৮ লাখের কিছু বেশি জনসংখ্যার দেশ লাইবেরিয়ার আছে তিনটি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনার উল্টো ফল দেখে রীতিমতো বিস্মিত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশে সরকার যখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দিয়ে অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা করল তখন জীবিকার জন্য শহরে থাকা মানুষ বাড়িভাড়াসহ আনুষঙ্গিক খরচ থেকে বাঁচতে গ্রামের পথে যাত্রা ছুটতে শুরু করেন। জাতীয় ছুটি শুরু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আনুমানিক প্রায় এক কোটি শহরবাসী ঢাকা ছাড়েন। একই ধরনের ঘটনা কেনিয়া ও অন্যান্য দেশেও ঘটেছে। ফলে প্রশ্ন ওঠে যে, রোগতাত্ত্বিক মডেলগুলো গড়ে তোলার সময় এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল কিনা যে, এ ধরনের নীতির প্রয়োগ বা পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সামাজিক সংক্রমণের আশঙ্কা হ্রাসের পরিবর্তে আরও অনেক বেড়ে যেতে পারে? এসব দেশের মানুষ, সমাজ এবং আর্থিক ও সামাজিক পরিস্থিতি সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল তাঁরা খুব ভালোভাবে জানবেন এ ধরনের পদক্ষেপের ফলে ঠিক এটাই ঘটার ছিল।
বিষয়টি এমন নয় যে, বিদ্যমান রোগ ব্যবস্থাপনা মডেলে স্বল্প সংখ্যক মানুষের বিচ্ছিন্ন কিছু পরিস্থিতি উপেক্ষা করা হয়েছে। বস্তুত, বিশ্বের ১২০ কোটি মানুষ যাঁরা কার্যত বস্তিতে বাস করেন তাঁদেরকে হিসেবের বাইরে রেখে এসব মডেল প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব বস্তির মূলগত বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে, এগুলো প্রচণ্ড- ঘনবসতিপূর্ণ ও পর্যাপ্ত পানি ও পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থাবিহীন। এর অর্থই হচ্ছে, কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নকরণ অথবা কোয়ারেন্টিন এখানে অসম্ভব। এ ধরনের পদক্ষেপ এখানে ব্যর্থ হতে বাধ্য। কোনো কোনো বস্তিতে জনঘনত্ব প্রতি বর্গমাইলে আট লাখ। নিউইয়র্ক সিটির সঙ্গে তুলনা করলে আরও স্পষ্ট হবে বিষয়টা, যেখানে প্রতি বর্গমাইলে ২৭ হাজার মানুষের বাস। ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসব নীতি যদি গলদযুক্ত বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে এদের প্রয়োগের ফলে একেকটি দেশকে যে বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হলো তার আর কোনো অর্থ থাকবে না। এতে করে এটাই প্রতীয়মান হবে যে, একদিকে এই সব পদক্ষেপ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে, অন্যদিকে এর ফলে দেশগুলোকে অযথা বিপুল আর্থিক ক্ষতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ফলে অবধারিত সেই প্রশ্নটি উঠে যায় - বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবা নির্দেশনার দায়িত্বে মহলটি ঝুঁকিগুলোর ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাঁদের পরামর্শগুলোর প্রয়োজনীয় হালনাগাদ করছেন তো?
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বিষয়ে মাত্রাতিরিক্ত পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি উপার্জন হারানো মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য ও নগদ অর্থ সহায়তাকে অত্যাবশ্যকীয় ও জীবন রক্ষাকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনায় আনা উচিত ছিল বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবা মহলের। বিশ্বের ৬৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ চরম দরিদ্র অবস্থায় দিনাতিপাত করা সত্ত্বেও কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলার কৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই বাস্তবতাকে প্রায় আমলেই নেওয়া হয়নি। এর ফলে চরম খাদ্যাভাব সামাজিক দূরত্বের নীতি বাস্তবায়নের অব্যবহিত এবং পূর্বানুমিত ফলাফল। আরও ভেবে দেখার বিষয় হচ্ছে, উপযুক্ত নীতি ও কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে চরম খাদ্যাভাব এড়ানো সম্ভব।
পরিশেষে সবচেয়ে জরুরি কথাটি বলতে চাই। বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবা মহলের এখনই উচিত হবে সার্বিক পরিস্থিতির পুনর্মূল্যায়ন করার মাধ্যমে স্বল্প সম্পদের দেশ ও জনগোষ্ঠীর জন্য সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এমন সব সমাধান ও পরামর্শ হাজির করা গরিব মানুষের জীবিকা অর্জনের পথে যা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে হাত ধোয়া একটি উপায় যার ওপর এখনো পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে আমরা মনে করি। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চর্চার বিষয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শ্বাসক্রিয়ার মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণ হ্রাসের লক্ষ্যে প্রদত্ত নির্দেশনায় ইতিমধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টির সফল পরীক্ষামূলক বাস্তবায়ন হয়েছে বাংলাদেশে। যেসব এলাকায় বা জনগোষ্ঠীতে হাঁচি কাশির সময় টিস্যু বা কনুই দিয়ে নাকমুখ ঢাকার চল নেই সেখানকার স্কুলগুলোতে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চর্চার পরীক্ষামূলক বাস্তবায়নে যথেষ্ট উৎসাহব্যঞ্জক ফলাফল পাওয়া গেছে। এই চর্চার দ্রুত প্রসারে বিনিয়োগ করা হলে তা ইতিবাচক ফলাফল আনবে বলে মনে করি। বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে বিদ্যমান কারখানাগুলোতে বিপুল পরিমাণে মাস্ক উৎপাদন সম্ভব। এর ফলে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে সংকটে পড়ে বন্ধ রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের দ্রুত কাজে ফেরানোও সম্ভব হবে। এতে করে সংক্রমণ রোধে পূর্ব এশিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচলিত মাস্কের ব্যবহারকে আরও ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। ভারত এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বাড়িতে তৈরি মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টি ইতিমধ্যে বিবেচনায় নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে নানা ধরনের ব্যয়সাশ্রয়ী উদ্ভাবনমূলক সমাধানের কথা শোনা যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য ঘরে থাকার সময়টাতে কীভাবে শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখা যায় সে ব্যাপারে নানাজনের কাছ থেকে নতুন ধরনের চমৎকার সব পরামর্শ ও সমাধান পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবা মহলের সেদিকে খুব একটা লক্ষ নেই। তাঁরা ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতের জন্য তৈরি কিছু সমাধানের দিকেই দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বসে আছেন এবং চাইছেন অন্যরাও যেন এগুলো একই পরিমাণ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন।
যে কথা অস্বীকার করার উপায় নেই তা হচ্ছে, কার্যকর সামাজিক দূরত্ব, সংক্রমণ পরীক্ষার ব্যাপক প্রসার এবং জরুরি সেবা সহজলভ্য করা ব্যতিরেকে কোভিড-১৯ প্রতিরোধের সঠিক কৌশল নির্ণয় রোগ তাত্ত্বিকদের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু বাস্তবে আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জাতীয় নেতৃত্বকে ঠিক এই পরিস্থিতিই মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এসব দেশের জাতীয় নেতৃত্বের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন যাতে তাঁরা পরিস্থিতির নির্মেদ ও যথাযথ মূল্যায়ন করতে ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমর্থ হন। এই সমর্থন তাঁদের ততটাই দরকার যতটা অবস্থাপন্ন দেশগুলোর নেতৃত্ব পেয়ে থাকেন। বিশ্বব্যাপী এই সংক্রমণ থেকে উদ্ধার পাওয়ার একটি সুযোগ আমাদের সামনে রয়েছে। সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে ও সমতার মাধ্যমে চেষ্টা করতে হবে আমাদের। যৌথ সেই প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা আরও বেশি সংখ্যক প্রাণ বাঁচাতে সমর্থ হব।
*আসিফ সালেহ্: ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক
*রিচার্ড এ. ক্যাশ: বাংলাদেশে ডায়রিয়ায় সৃষ্ট পানিশূন্যতা রোধে মুখে খাওয়ার স্যালাইন উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বর্তমানে হার্ভার্ড টি এইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর অধীনে গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড পপুলেশন বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি. গ্র্যান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর ভিজিটিং প্রফেসর।
মূল ইংরেজি লেখাটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট-এর ব্লগে ছাপা হয়েছে।
Source: https://www.prothomalo.com/opinion/article/1649224/%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%87-%E0%A6%95%E0%A6%AE-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%A6-%E0%A6%93-%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A7%80-%E0%A6%AE%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%B2