Daffodil International University

Educational => You need to know => Topic started by: Sultan Mahmud Sujon on January 03, 2012, 09:19:37 AM

Title: তেঁতুল
Post by: Sultan Mahmud Sujon on January 03, 2012, 09:19:37 AM
(http://banglahealth.evergreenbangla.com/wp-content/uploads/2011/01/tetul-300x214.jpg)

আমাদের অতি পরিচিত টক-জাতীয় খাদ্যের মধ্যে তেঁতুল অন্যতম। একটা সময় ছিল তেঁতুল কেবলমাত্র মেয়েদের খাবার হিসেবে গণ্য হতো। কিন্তু আজ দেখা যায়, তেঁতুলে ঔষধি গুণ থাকার কারণে এটি সব বয়সে সবার জন্যই প্রয়োজন হতে পারে।
তেঁতুলের বোটানিক্যাল নাম Tomarindus Indeca linn. এর আয়ুর্বেদিক নাম যমদূতিকা। সমুদ্র তীরবর্তী লবণাক্ত অঞ্চলের অধিবাসীদের রক্তের চাপ বেশি থাকতে দেখা যায়। সেই চাপ কমানোর জন্য এসব অঞ্চলে তেঁতুলের ব্যবহার হয় সব সময়। এটি তাদের আহারের অন্যতম উপাদান। কোনো কোনো জায়গায় একে ইসলিও বলা হয়ে থাকে।
Tarmaric acid-র জন্য এর স্বাদ টকযুক্ত হয়। তেঁতুলগাছের পাতা, ছাল, ফলের শাঁস (কাঁচা ও পাকা), পাকা ফলের খোসা, বীজের খোসা—সবকিছুই ব্যবহার হয়ে থাকে। এটি পরিপাকবর্ধন ও রুচিকারক। তেঁতুলের কচিপাতার মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে এমাইনো এসিড। গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র শ্রেণীর মধ্যে তেঁতুলের পাতা বেটে মরিচ ও সামান্য লবণ দিয়ে বড়া তৈরি করে পান্তাভাতের সঙ্গে খেতে দেখা যায়। যদিও অভ্যাসবশতই তারা এভাবে খেয়ে থাকে। তবুও বলা যায়, তারা তাদের অজ্ঞাতে ভালোভাবেই এমাইনো এসিড আহরণ করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। পাতার রসের শরবত সর্দি-কাশি, পাইলস ও প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ায় বেশ কাজ দেয়।
তেঁতুল চর্বি কমানোয় বেশ বড় ভূমিকা রাখে। তবে তা দেহের কোষে নয়, রক্তে। এতে কোলস্টেরল ও ট্রাইগ্রাইসেরাইডের মাত্রা এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
দেখা যায়, পুরোনো তেঁতুলের কার্যকারিতা বেশি। যদি পেট ফাঁপার সমস্যা থাকে এবং বদহজম হয়, তাহলে পুরোনো তেঁতুল এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে সামান্য লবণ, চিনি বা গুড় দিয়ে খেলে অসুবিধা দূর হয়। আবার হাত-পা জ্বালা করলেও এই শরবতে উপকার পাওয়া যায়।
প্রয়োজনে টমেটোর সসের পরিবর্তে তেঁতুলের সস বা আচার খাওয়া যেতে পারে। যদি তেঁতুলের সঙ্গে রসুনবাটা মেশানো যায়, তাহলে রক্তের চর্বি কমানোর কাজে ভালো ফল দেয়। তেঁতুল এমনই এক ভেষজ, যার সব অংশই কাজে লাগে। এর রাসায়নিক উপাদানগুলো হলো Tartaric acid, Polisucharide, oxalic acid, amino acid এবং পটাশিয়াম। পটাশিয়াম ও অক্সালিক এসিডের আধিক্যের জন্য কিডনি রোগীদের তেঁতুল খাওয়া নিষেধ। জন্ডিসের ক্ষেত্রেও তেঁতুল নিষিদ্ধের তালিকায় রয়েছে।

আখতারুন নাহার আলো
প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা, বারডেম
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১৯, ২০১০