Daffodil International University
Health Tips => Protect your Health/ your Doctor => Topic started by: Sahadat Hossain on December 14, 2020, 12:19:07 PM
-
অবসন্নতা, জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, স্বাদহীনতা ও গন্ধহীনতা— করোনার প্রাথমিক লক্ষণ।
করোনার চিকিৎসাপদ্ধতিতে এসেছে পরিবর্তন। যেসব করোনা রোগীর সংক্রমণ মাঝারি ও জরুরি পর্যায়ে, তাঁদের অবশ্যই রক্ত তরল করার ওষুধ প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
লেখা
জাহিদুল হক
স্বাস্থ্যবিধিতে প্রতিরোধ সম্ভব
করোনা নিয়ে আশা জাগানো খবর যেমন থাকছে, ঠিক তেমনি নিরাশার খবরও কম নয়। তবে সবচেয়ে জরুরি বিষয় সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানলে করোনার যে দ্বিতীয় ঢেউয়ের কথা বলা হচ্ছে, তা অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
করোনায় আক্রান্ত রোগীদের রক্ত জমাট বাঁধা ও এর প্রতিকার নিয়ে প্রথম আলো আয়োজিত এসকেএফ নিবেদিত স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ অনুষ্ঠান ‘হৃদয়ের সুরক্ষা’। অনুষ্ঠানটির তৃতীয় পর্বে ডা. বিলকিস ফাতেমার সঞ্চালনায় অতিথি ছিলেন কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. হাসান মাহমুদ ইকবাল।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই কনসালট্যান্ট ডা. হাসান মাহমুদ ইকবাল করোনা প্রতিরোধের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘আমরা চাইলেই নিজেদের করোনার আক্রমণ থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখতে পারি। এ জন্য কঠোরভাবে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সরকারও প্রতিনিয়ত এ বিষয়টি প্রচার করছে। বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপও হাতে নিয়েছে, যেমন নো মাস্ক নো সার্ভিস কার্যক্রম। অর্থাৎ মাস্ক ছাড়া কোনো সেবা দেওয়া হবে না। করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহারের বিকল্প নেই, এটি কোনো কারণে এখনো আমরা মানতে নারাজ। আমাদের কাছে এখনো কোনো ভ্যাকসিন নেই। তাই প্রতিরোধ ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছি না আমরা। আর করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ামাত্র ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। এ জন্য প্রথমেই জানতে হবে করোনার লক্ষণগুলো কী কী। যেমন অবসন্নতা, জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, স্বাদহীনতা ও গন্ধহীনতা।’
স্বাস্থ্যবিধিতে প্রতিরোধ সম্ভব
হাসান মাহমুদ ইকবাল বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকের ক্ষেত্রে করোনার আক্রমণ জটিল হয়েছে শুধু সঠিক সময়ে চিকিৎসা না নেওয়ার কারণে। অনেকেই নিজে নিজে চিকিৎসা করে থাকেন, এটি মোটেও ঠিক নায়। কারণ আমার অভিজ্ঞতা বলে, করোনা একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের জটিলতা তৈরি করে। বিশেষ করে যাঁদের আগের জটিল কোনো রোগ রয়েছে। এ ছাড়া যাঁদের ডায়বেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি জটিলতা, পাকস্থলী, যকৃতের সমস্যাসহ নানা ধরনের দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে, তাঁদের বিভিন্ন ধরনের জটিল তা তৈরি হয়। চিকিৎসাপদ্ধতিতেও এসেছে পরিবর্তন। যেসব করোনা রোগীর সংক্রমণ মাঝারি ও জরুরি পর্যায়ে, তাঁদের অবশ্যই রক্ত তরল করার ওষুধ প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে সংক্রমিত রোগীদেরও এ ধরনের ওষুধ প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
হাসান মাহমুদ ইকবাল আরও বলেন, ‘ফলে প্রচুর রোগীর মৃত্যুঝুঁকি যেমন কমেছে, তেমনি মৃত্যুহারও কমেছে। সারা বিশ্বেই বয়স্কদের ক্ষেত্রে রোগটি বেশি মরণঘাতী। সে তুলনায় ৫০ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম মরণঘাতী। আর ছোটদের ক্ষেত্রে আশঙ্কা অনেক কম। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে সবাইকে। আর সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যাঁরা সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেননি, তাঁদের অবস্থাই বেশি জটিল হয়েছে।’
ডা. হাসান মাহমুদ ইকবাল
এম বি বি এস, বি বি এস (স্বাস্থ্য), এম ডি ৯কার্ডিওলজি কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজি, জেনারেল হাসপাতাল,কুমিল্লা
এরপর কনসালট্যান্ট ডা. হাসান মাহমুদ ইকবাল আলোচনা করেন করোনায় রক্ত জমাট বাঁধা সমস্যা ও প্রতিকার নিয়ে। তিনি বলেন, শুরুতে এটি জানা ছিল না যে করোনা রোগীর শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। এটি সম্ভবত প্রথম শনাক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে একজন রোগীর শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা সমস্যা দেখা যাওয়ার পর চিকিৎসকেরা গবেষণা করে দেখতে পান এর কারণেই সবচেয়ে বেশি রোগী মারা যাচ্ছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় রক্ত জমাট বেঁধে মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭১ শতাংশ। অর্থাৎ ভাইরাসের সংক্রমণে দেহের গভীর শিরাগুলোতে থ্রম্বোসিস তৈরি হয়, যা সাধারণত পায়ের শিরায় দেখা যায়। এভাবে রক্ত জমাট বেঁধে শিরার জায়গায় জায়গায় আটকে পড়ে কিংবা সেগুলো যদি টুকরা বা ক্ষুদ্র হয়ে ভেঙে ফুসফুসের দিকে যায়, তখন তা রক্ত চলাচলকে আটকে দিয়ে জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দেয়।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে কনসালট্যান্ট ডা. হাসান মাহমুদ ইকবাল আলোচনা করেন করোনা রোগীর যত্ন এবং সচেতনতা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘কিছু অদ্ভুত বিষয় আমরা খেয়াল করেছি, যেমন একই ঘরে একজনের করোনা আক্রান্ত হলেও বাকিরা আক্রান্ত হননি। অর্থাৎ হয়তো স্বামীর করোনা হয়েছে কিন্তু স্ত্রীর হয়নি।
কিন্তু তাই বলে করোনাকে হালকাভাবে দেখা যাবে না। বেশির ভাগ করোনা রোগী বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নেন এবং ভালো হয়ে যাচ্ছেন। সুতরাং বাড়িতে এসব রোগীর যাঁরা সেবা দেন, তাঁদের সতর্ক থাকতে হবে। করোনার শুরুতে দেখা গেছে, কারও করোনা হলে তাঁকে অনেকটাই একঘরে করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া যাবে।’
Ref: https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A7-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AD%E0%A6%AC