Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Topic started by: Badshah Mamun on December 23, 2020, 03:26:25 PM

Title: Know Islam & give intellectual Answer to Opposition
Post by: Badshah Mamun on December 23, 2020, 03:26:25 PM
আব্বাসি শাসনামলে একবার রোমান সম্রাটের পক্ষ থেকে মুসলিম খলিফার কাছে বিতর্কের আমন্ত্রণ আসলো। খলিফা ইমাম বাকিল্লানীকে রোমান সম্রাজ্যের রাজধানীতে পাঠালেন খ্রিস্টানদের সাথে বিতর্ক করার জন্য।
এ উম্মতের শ্রেষ্ঠতম একজন আলিম ছিলেন চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ইমাম কাযী আবু বকর আল-বাকিল্লানী রাহিমাহুল্লাহ।

 ইমাম বাকিল্লানী সেখানে উপস্থিত হওয়ার পর রোমান সম্রাট তাঁকে বললেন, "তোমাদের ইসলাম একটি সাম্প্রদায়িক ধর্ম। তোমরা ইহুদি-খ্রিস্টান মেয়েদেরকে বিয়ে করো, অথচ মুসলিম মেয়েদেরকে আমাদের সাথে বিয়ে দাও না।"
 ইমাম বাকিল্লানী প্রথম প্রশ্নটি খুব ধীরেসুস্থে সামাল দিলেন। বললেন, "আমরা ইহুদি মেয়ে বিয়ে করি, কারণ আমরা তাদের নবী মুসা আ.-কে নবী মানি। খ্রিস্টান মেয়ে বিয়ে করি, কারণ আমরা ঈসা আ.-কে নবী মানি। আপনারা মুহাম্মদ ﷺ-কে নবী মেনে নিন, তাহলে আমাদের মেয়েরাও আপনাদের ঘরের স্ত্রী হয়ে আসবে।"

ক্ষুরধার জবাব পেয়ে সম্রাট দ্বিতীয় আঘাত হানলেন। তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করলেন, "শুনলাম তোমাদের নবীর স্ত্রী আয়েশার ওপর ব্যভিচারের অভিযোগ উঠেছিল?"
ইমাম বাকিল্লানী এই ধৃষ্টতাপূর্ণ আঘাতের শক্ত প্রতিঘাত করলেন। বললেন, "হ্যাঁ, আমাদের নবীর স্ত্রীর ওপর ব্যভিচারের অপবাদ দেয়া হয়েছিল (ইফকের ঘটনা)। একইভাবে আপনাদের নবী (খ্রিস্টানদের ভাষায় খোদার পুত্র বা খোদার অংশ) ঈসার মা মারইয়ামের ওপরও ব্যভিচারের অভিযোগ আনা হয়েছিল। দেখুন, ব্যভিচারের সবচেয়ে স্পষ্ট প্রমাণ হচ্ছে বাচ্চা জন্ম নেয়া। আমাদের নবীর স্ত্রী আয়েশা বিবাহিতা ছিলেন, তবুও তাঁর কোনো বাচ্চা জন্ম নেয়নি। অপরদিকে আপনাদের নবীর মা মারইয়াম অবিবাহিতা ছিলেন, অথচ তিনি বাচ্চা নিয়ে ফিরে এলেন। এবার আপনি বলুন, অভিযোগ যদি দিতেই হয়, তাহলে কার ওপর শক্ত অভিযোগ লাগবে? আর আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, তাঁরা দুজনই নির্দোষ ছিলেন। আল্লাহ এসব অপবাদ খণ্ডন করে তাঁদের পবিত্রতা ঘোষণা করেছেন।"
জবাব শুনে সম্রাট হতভম্ভ হয়ে গেলেন। নিজের বানানো কুটচাল এভাবে ফিরে এসে তার নিজের মুখ চ্যাপ্টা করে দেবে, বেচারা কল্পনাও করতে পারেনি।

এই সময় পোপ (খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা) ইমাম বাকিল্লানীকে কিছু একটা বলে খোঁচা দিলেন। বাকিল্লানী ওই খোঁচা গায়ে লাগালেন না। গায়ে লাগালে তাঁকে আবার রক্ষণাত্মক জবাব দিতে হবে। তিনি বরং মাঠ প্রস্তুত করে ফেলেছেন, এবার আক্রমণের পালা। ইমাম বাকিল্লানী অমায়িক কণ্ঠে পোপকে জিজ্ঞেস করলেন, "জনাব, আপনার বউ-বাচ্চা কেমন আছে?"
পাশে বসা সম্রাট রাগান্বিত কণ্ঠে বললেন, "এ কেমন মশকরা! আপনি কি জানেন না যে, পোপরা বিয়েশাদী বাচ্চাকাচ্চা এসব থেকে মুক্ত? এগুলো সাধারণ মানুষের কাজ। এসব কাজ পোপের 'শানের লায়েক' নয়।"
এবার ইমাম বাকিল্লানী দুধারি তলোয়ার চালালেন, "আচ্ছা? বিয়েশাদী, বাচ্চাকাচ্চা পোপের 'শানের লায়েক' নয়। আর তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে বলো যে, মারইয়াম আল্লাহর স্ত্রী এবং ঈসা আল্লাহর পুত্র। তোমাদের কাছে আল্লাহর শান কি পোপের শানের চেয়ে কম নাকি?"

এই আচমকা আক্রমণ সহ্য করার ক্ষমতা না সম্রাটের ছিল, না পোপের ছিল। দুজনই মুখ ভোতা করে বসে রইল। বাকিল্লানী জিজ্ঞেস করলেন, আর কিছু বাকি আছে?
সম্রাট তখন শেষ চেষ্টা চালালেন। বললেন, "শুনলাম তোমাদের নবী নাকি যুদ্ধে মার খেয়েছেন?"
বাকিল্লানী বললেন, "হ্যাঁ তিনি (উহুদ) যুদ্ধে আঘাত পেয়েছেন।" সম্রাট বললেন, "এ কেমন নবী, যিনি মার খেয়ে গেলেন? তার আল্লাহ তাকে বাঁচাতে পারলেন না?"
তীর্যক এ প্রশ্ন শুনে রাজসভায় হাসির রোল পড়ে গেল। সভাসদরা ভাবল, এবার বাকিল্লানী কুপোকাত!
ইমাম বাকিল্লানী বললেন, "তোমরা ঈসাকে 'খোদার অংশ' মনে করো। আর তোমাদের ইতিহাস অনুযায়ী, ইহুদিরা ঈসাকে শূলে চড়িয়ে হত্যা করেছিল। আমাদের নবী তো মানুষ, তিনি না হয় আঘাত পেয়ে গেলেন। কিন্তু তোমাদের এ কেমন খোদা, যিনি নিজেকেই বাঁচাতে পারলেন না!"

পুরো রাজসভায় তখন পরাজয়ের নিস্তব্ধতা।
ইমাম বাকিল্লানী শান্ত পায়ে বের হয়ে আসলেন।

-'তারিখে বাগদাদ' থেকে

Collected...