Daffodil International University

Health Tips => Protect your Health/ your Doctor => Topic started by: Sahadat Hossain on January 17, 2021, 10:46:27 AM

Title: হাতের ব্যথা কারণ ও প্রতিকার
Post by: Sahadat Hossain on January 17, 2021, 10:46:27 AM
হাতের ব্যথা খুব সাধারণ একটি সমস্যা। হঠাৎ আঘাতে হাতের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের ব্যথা হতে পারে। মচকালে বা হাড় ভাঙলে ব্যথা তীব্র হয়। তবে অনেক দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার জন্য হাতে বা কবজিতে ব্যথা হতে পারে। যেহেতু অনেক কারণেই এই ব্যথা হতে পারে, তাই কখনো কখনো দীর্ঘমেয়াদি হাতের ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করা কঠিন।

এ ধরনের ব্যথার উপসর্গ, কারণ ও প্রতিকার নিয়ে প্রথম আলো আয়োজন করে এসকেএফ নিবেদিত স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ অনুষ্ঠান ‘ইজোরাল মাপস স্বাস্থ্য আলাপন’। অনুষ্ঠানটির দশম পর্বে আলোচনা করা হয় হাতের ব্যথা বিষয়ে। ডা. নাদিয়া নিতুলের সঞ্চালনায় অতিথি ছিলেন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), ঢাকার সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দিন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে হাতের ব্যথার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করেন ডা. মো. মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘হাতের ব্যথাকে আমরা সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করতে পারি। অ্যাকিউট পেইন ও ক্রনিক পেইন। হঠাৎ কোনো আঘাতে পাওয়া ব্যথাই হচ্ছে অ্যাকিউট পেইন। আর যে ব্যথা দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে, তা ক্রনিক পেইন। হাতের ব্যথার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন প্রদাহ, আঘাত, স্নায়ু নষ্ট হয়ে যাওয়া, দীর্ঘকালীন স্বাস্থ্যের সমস্যা, হাতের যেকোনো হাড় বা লিগামেন্ট মচকানো বা ভাঙার ফলে হাতে ব্যথা হতে পারে। আবার এমনও হতে পারে, হাতের ওপর ভর দিয়ে সামনের দিকে পড়ে গেলেও কবজিতে চোট লাগার ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে কবজি মচকে যায়, কবজিতে টান পড়ে এবং কবজির হাড় ভেঙেও যেতে পারে।

হাতের ওপর ভর দিয়ে পড়ে গেলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কলিস ফ্র্যাকচার হয়। এ ক্ষেত্রে রেডিয়াসের নিচের অংশ ভেঙে যায়। কবজি ফুলে যায়। আবার খেলোয়াড় বা বিশেষ কোনো কাজে যদি হাতের একই জায়গায় চাপ পড়ে, তবে ব্যথা হতে পারে। যেমন টেনিস বল খেলা বা বেহালা বাজানোর সময় কবজির সন্ধির চারপাশের টিস্যুতে প্রদাহ হতে পারে কিংবা হাড় ভেঙে যেতে পারে। বিশেষ করে কোনো বিরতি ছাড়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা কবজির কাজ করলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।

বারবার চাপের ফলে হাতের কবজির ব্যথার আরেকটি কারণ হলো ডি কোয়ার ভেইন’স ডিজিজ। এ ক্ষেত্রে কবজির বাইরের দিকে, অর্থাৎ রেডিয়াসের ওপর দিয়ে যে দুটো টেন ডন বিন্যস্ত রয়েছে, তাদের আবরণীতে প্রদাহ হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে ব্যথার আরও কিছু বিশেষ কারণ রয়েছে। যেমন কারপাল টানেল সিনড্রোম।

এরপর সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দিন আলোচনা করেন ব্যথার ওষুধ সেবন করার সতর্কতা নিয়ে। তিনি বলেন, শুধু ব্যথা নয়, যেকোনো ধরনের ওষুধ দীর্ঘ সময় সেবন করলে এর নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। আবার আমাদের দেশের মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই নিজের ইচ্ছেমতো নানা ধরনের ওষুধ সেবন করে থাকেন, যা একেবারেই অনুচিত। কারণ প্রতিটি ওষুধেরই একটি নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। এর বেশি ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। সুতরাং ওষুধের সঠিক নির্দেশনা, সেবনের মাত্রা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সতর্কতা সম্পর্কে না জেনে সেবন করলে তা ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে।

অতিথি
ডা. মো. মহিউদ্দিন, সহযোগী অধ্যাপক,
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), ঢাকা
ব্যথানাশক ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে উচ্চ রক্তচাপসহ হৃদ্‌রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া ত্বকে ফুসকুড়ি, শরীরে পানি আসা, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে। সাধারণত অধিক বয়স, ধূমপান, একসঙ্গে একাধিক ওষুধের ব্যবহার, ব্যথানাশক ওষুধের উচ্চমাত্রা—এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কাকে বাড়িয়ে দেয়। ব্যথানাশক ওষুধ সেবনের অন্যতম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে পেপটিক আলসার ও কিডনি বৈকল্য। এমনকি খাদ্যনালি ও পাকস্থলী ফুটোও হয়ে যেতে পারে। কাজেই মনে রাখতে হবে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ওষুধ খাওয়া যাবে না। ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। একেক ধরনের ব্যথার একেক রকম চিকিৎসা। সব ব্যথা নিরাময়ে ওষুধেরও প্রয়োজন নেই।

অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দিন আলোচনা করেন হাতের ব্যথার প্রতিকার ও চিকিৎসা নিয়ে। তিনি বলেন, এ ধরনের ব্যথার চিকিৎসা নির্ভর করে ব্যথা হওয়ার কারণ, ধরন, স্থান ও তীব্রতার ওপর। এ ছাড়া রোগীর বয়স ও অন্যান্য রোগ আছে কি না, তাও বিবেচনায় রাখতে হবে। ব্যথা পেলে প্রথমত যা করতে হবে, আক্রান্ত হাত বিশ্রামে রাখতে হবে। আবার যদি কোনো নির্দিষ্ট রোগের কারণে ব্যথা হয়, তবে সে রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা করতে হবে।

হাতের ব্যথা কারণ ও প্রতিকার
চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে হবে। যদি হাতের হাড় ভাঙে, তাহলে হাড়ের টুকরোগুলো সঠিক বিন্যাসে বসাতে হবে, যাতে ঠিকমতো জোড়া লাগে। এ ক্ষেত্রে দক্ষ চিকিৎসকের সাহায্য নিতে হবে। আবার যদি হাতে টান লাগে বা মচকে গিয়ে লিগামেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে এর সুরক্ষায় স্পিন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। আক্রান্ত স্থানের নড়াচড়া থেকে রক্ষা করার জন্য রিস্টব্যান্ড ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন, সব ধরনের হাতের ব্যথায় কিন্তু ওষুধের প্রয়োজন হয় না। সামান্য আঘাত পেলে নিজেরাই আঘাতের স্থানে বরফ লাগালে উপকার পাওয়া সম্ভব।

Video Link: https://www.facebook.com/watch/?v=783993072200521
Ref: https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%A5%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A3-%E0%A6%93-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0