Daffodil International University

Educational => You need to know => Topic started by: Sultan Mahmud Sujon on January 04, 2012, 08:05:01 AM

Title: হার্টের শত্রুদের জয় করুন
Post by: Sultan Mahmud Sujon on January 04, 2012, 08:05:01 AM
শরীরের অন্যতম ভাইটাল অরগান হার্ট। এই হার্টকে সুস্থ রাখতে কেনা চায়। নিয়মিত ব্যায়াম, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন এবং মনের চাপ কমিয়ে হার্ট সুস্থ রাখা যায়। পাশাপাশি হার্টের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ফ্যাক্টর সমূহকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিভিন্ন বয়সে হার্টের জন্য ঝুঁকিরও তারতম্য রয়েছে। এখানে বয়স ভিত্তিক হার্টের শত্রুদের চিহ্নিত করা হলো:

বয়স যখন ২০: হার্টের এ বয়সে প্রধান শত্রু হচ্ছে ধূমপান। মাত্র কয়েকটি সিগারেটই আপনার হার্টেকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে যথেষ্ঠ। মন্ট্রিলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বিশেষজ্ঞ ডা: বোনাই দেখেছেন দিনে মাত্র একটা সিগারেট খেলেও হার্টের রক্তনালী স্বাভাবিকের চেয়ে শতকরা ২৫ ভাগ বেশী শক্ত হতে পারে। পাশাপাশি ধূমপান মহিলাদের ক্ষেত্রে এস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

যেসব মহিলারা জন্মনিয়ন্ত্রণে খাবার বড়ি ব্যবহার করেন, তাদের ধূমপান একেবারেই বর্জন করা উচিত। মিনোসোটার মায়ো ক্লিনিকের ওমেন্স হেলথ সেন্টারের পরিচালক ডা: শ্যারন এন হাইজ-এর মতে ধূমপান কন্ট্রাসেপটিভ পিল হার্টের জন্য বড় ধরনের বিপদের কারণ হতে পারে। বেশী এলকোহল পান করলে রক্তের ক্ষতিকর ট্রাইগ্লিসারিড বেড়ে গিয়ে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। বাড়তে পারে ওজন।

বয়স যখন ৩০: এই বয়সে বেশীর ভাগ মানুষই থাকে কর্মজীবী ও পরিবার থাকে প্রায় সকলের। তাই একটি বাড়তি মানসিক চাপ থাকে প্রায়শই। যা সরাসরি চাপে ফেলে হার্ট। রক্তের এড্রিনালিন হরমোন নি:স্বরণ বেড়ে যায়। হার্টের রক্তনালীতে চর্বিজমতে সাহায্য করে। পরিণতিতে হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। এই বয়সে শরীরের ওজনও বাড়ে। যা উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, হৃদরোগের অন্যান্য ঝুঁকিও বাড়ে।

এই বয়সে মহিলাদের বন্ধু বা পরিবারের অন্যদের সংস্পর্শে স্বাচ্ছন্দে থাকা উপকারী। একাকীত্ব হার্টের জন্য ক্ষতিকর। একাকীত্ব মহিলাদের হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি স্বাভাবিকের চেয়ে শতকরা ৭৬ ভাগ বেশী। পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞের মতে স্বামী-স্ত্রীর সানিধ্যে আসা, সপ্তাহে দু’ বা একদিন বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো বা মাসে অন্তত্ব: একদিন একত্রে ডিনার করা উপকারী।

বয়স যখন ৪০: মহিলাদের বয়স যখন ৪০ এর কোটায়। এ বয়সটাকে প্রিমেনোপজ টাইম বলা হয়। তাই হরমোনের মাত্রা উঠানামা করতে পারে। ফলে হতে পারে ঘুমের সমস্যা। নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অব মেডিসিনের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: জেনিফার এইচ মিয়েজ-এর মতে প্রতিদিন অন্তত: ৭ ঘন্টার কম যারা ঘুমান তাদের রক্তচাপ বাড়ে, শরীরে মৃদু প্রদাহ সৃষ্টি, এবং স্ট্রোচ হরমোন কার্টি সোলের পরিমান বেড়ে যায়। এছাড়া ঘুম কম হলে শরীরের ওজনও বাড়ে। ডা: জেনিফারের মতে নির্দিষ্ট সময়ে বেডে যাবার সময় খানিকটা রিল্যাক্স করে নিতে পারেন। দেখতে পারেন কোন হাসির অনুষ্ঠান।

এই বয়সে উচ্চ রক্তচাপ রক্তের কোলেস্টেরল ও হৃদরোগ হরমোন চেক আপ জরুরী। মহিলাদের হার্ট এ্যাটাকের জন্য এসব ঝুঁকিপূর্ণ। যুক্তরাষ্টের ন্যাশনাল হার্ট, লাঙ্গ ও ব্লাড ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ ডা: হাইজ তাই মনে করেন। এ বয়সে নিয়মিত ব্যায়াম এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ জরুরী। এ বয়সেও বন্ধুদের সঙ্গে দিনে অন্তত: ১০ মিনিট কাটাতে পারেন। চ্যাট করেও সময় কাটানো যায়।

বয়স যখন ৫০: এ সময়টা মহিলাদের মেনোপজের বয়স। এ বয়সে শরীরে ওজন বাড়ে এবং পেটে চর্বি জমে। যা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হতে পারে। বাড়তে পারে হার্টের ওপর চাপ। এই বয়সে যতটা পারা যায় লিফট পরিহার করে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটুন। একা দ্রুত হাটা ও জগিং করাও দরকার। এই বয়সে ইসিজি করা দরকার। আহারের ক্ষেত্রে ফাইবার ডায়েট বা আঁশ জাতীয় খাদ্য আহার ভালো।

বয়স যখন ৬০: এই বয়সে মহিলাদের নানা ঝুঁকি অত্যন্ত বেশী। তাই নিয়মিত হার্ট চেক আপ জরুরী। এই বয়সে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল বাড়তে পারে এবং রক্তনালী কিছুটা শরু হয়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরলের জন্য ওষুধ খেতে পারেন। এই বয়সে যদি চেস্ট পেইন শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা, অতিরিক্ত মানসিক চাপ দেখা দেয় তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

ডাঃ মোড়ল নজরুল ইসলাম
চর্ম, এলার্জি ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, মার্চ ০৬, ২০১০